আরও পড়ুনঃ শুক্রবার ফলপ্রকাশ উচ্চ মাধ্যমিকের তৃতীয় সেমিস্টারের! কখন, কোথায় দেখে যাবে রেজাল্ট?
আর্য প্রায় এক সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভুগছিল এবং শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। প্রথমে তাকে উত্তরবঙ্গের এক স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে মণিপাল হাসপাতাল, মুকুন্দপুরে স্থানান্তরিত করা হয়। ভর্তি হওয়ার সময় তার শ্বাসযন্ত্র খুবই সংকটজনক অবস্থায় ছিল, কারণ সংক্রমিত তরল পদার্থ ডান দিকের ফুসফুসকে চেপে ধরেছিল, ফলে ঠিকমতো শ্বাস নিতে পারছিল না। দ্রুত চিকিৎসা শুরু হয়। ডাক্তাররা সিদ্ধান্ত নেন আধুনিক ভিডিও-অ্যাসিস্টেড থোরাকোস্কোপিক সার্জারি (VATS) করার, যাতে সংক্রমিত পুঁজ বের করে ফুসফুস আবার স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে।
advertisement
অস্ত্রোপচারের পর আর্যকে প্রায় ১০ দিন ভেন্টিলেটরে রাখা হয়, কারণ প্রথম দিকে ফুসফুস পুরোপুরি প্রসারিত হচ্ছিল না এবং বাতাস ঢুকে “নিউমোথোরাক্স” সমস্যা দেখা দেয়। পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার টিমের তত্ত্বাবধানে—ডা. সৌমেন মেউর ও ডা. মনিদীপা দত্তের নেতৃত্বে—নিয়মিত ফুসফুসের যত্ন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে আর্য ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে। শেষে ভেন্টিলেটর থেকে মুক্ত হয়ে আর্য সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফেরে।
ডা. শুভাশিস সাহা বলেন, “শিশুদের এম্পাইমা খুব দ্রুত বিপজ্জনক রূপ নিতে পারে, তাই সময়মতো অস্ত্রোপচার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর্যর ক্ষেত্রে দ্রুত VATS সার্জারি করার ফলে সংক্রমণ দূর হয় এবং ফুসফুস আবার স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে শুরু করে। শিশু সার্জারি কেবল প্রযুক্তিগত নয়, এটি মানসিক যত্নের বিষয়ও বটে। আমরা প্রতিটি ধাপে অভিভাবকদের পাশে থেকেছি এবং তাঁদের আশ্বস্ত করেছি। শিশুটিকে আবার হাসিখুশি অবস্থায় দেখতে পারা আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় সাফল্য।”
ডা. সায়ন্তন ভৌমিক বলেন, “যখন কোনও শিশু এত গুরুতর ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে আসে, তখন এক মুহূর্তও দেরি করা যায় না। আর্যর ফুসফুস পুঁজে ভরে গিয়েছিল, ফলে শ্বাস নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। আমরা দ্রুত VATS সার্জারি করি, যাতে ফুসফুস থেকে পুঁজ বের হয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক হয়। চিকিৎসার সময় অক্সিজেনের মাত্রা, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও ওষুধের ব্যবহার অত্যন্ত সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। এই কেসটি প্রমাণ করে, সময়মতো সার্জারি ও টিমওয়ার্কের মাধ্যমে একটি শিশুর জীবন বাঁচানো সম্ভব।”
আর্যর মা বলেন, “আমার ছেলেকে টানা সাত দিন ধরে জ্বরে ভুগেছে ও শ্বাস নিতে কষ্ট হয়েছে। স্থানীয় চিকিৎসায় কোনও উন্নতি না দেখে আমরা মুকুন্দপুরের মণিপাল হাসপাতালে আসি। এখানকার ডাক্তার ও নার্সরা খুব যত্ন করেছে আমার ছেলের। সব কিছু ধৈর্য ধরে বুঝিয়ে বলেছেন এবং সব সময় পাশে থেকেছেন। আজ আমার ছেলে একদম সুস্থ, খেলাধুলায় মগ্ন। আমরা চিরদিন তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।”
