রবীন্দ্র সরোবর লেকে রোয়িং করতে গিয়ে দুই নাবালকের মৃত্যুর প্রত্যক্ষদর্শী ওই বোটের সওয়ার অভিজ্ঞতার কথা জানালেন এক্সক্লুসিভ নিউস এইন্টিন বাংলার প্রতিনিধিকে।
দেবাংস চক্রবর্তী বলেন, "আমরা টুর্নামেন্টর জন্য প্র্যাক্টিস করতে শনিবার রোয়িং করছিলাম। হঠাৎ যখন দেখি আকাশে কালো মেঘে করে এল, কক্স (যিনি বোটের দিক নির্দেশ করেন) বললেন, পাড়ের দিকে চলো। কিন্তু এতটাই ঝোড়ো হাওয়া দিতে শুরু করে যে বোট উল্টে যায়। আমার পা আটকে গিয়েছিলো ওই বোটে। কোনওমতে পা বের করি টেনে।
advertisement
আরও পড়ুন- দুর্ঘটনার সময় কেমন ছিল রবীন্দ্র সরোবর? কীভাবে ঘটল এমন ঘটনা? এল হাড়হিম ভিডিও
দেবাংস আরও বলেন, "এর পর বোট সোজা করতে বলেন কক্স। বোট আমরা সোজা করি যখন, তখনও পুষণ সাধুখাঁ ও সৌরদীপ চ্যাটার্জী ছিল আমাদের সঙ্গে। কক্স বলেন, সাঁতার কেটে চলে যেতে পারো পাড়ের দিকে। আর যে পারবে না সে বোট ধরে দাঁড়িয়ে থাকো। এর পর আমরা চারজন বেরোই সাঁতার কেটে পাড়ের দিকে। আমি হাফিয়ে যাই, বোটে ফিরে আসি। আমি কক্সকে বলি ওদেরকে ফিরে আসতে বলুন। কক্স বলেন, ওরা সাঁতার জানে চলে যাবে। ওই তিন জনের মধ্যে পুষণ, সৌরদীপ ছিল। ওরা হাফিয়ে যায় সাঁতার কাটতে গিয়ে সম্ভবত।"
দেবাংস বলেন, "আমরা তার আগে থেকে প্র্যাক্টিস করে হাফিয়ে গিয়েছিলাম। চোখের সামনে যা হল ভাবতে পারছি না। আমি ও কক্স বোট ধরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। অন্য একটা বোট প্রাকটিস করছিল। তাঁরা এসে আমাদেরকে উদ্ধার করে। আমি বারবার বলেছিলাম, রেসকিউ যাঁরা করতে আসে ও কক্সকে, ওদেরকে ডেকে নিন। কিন্তু তাঁর মাঝে ওদের দম ফুরিয়ে যায়, একজন ফিরে যায় পাড়ের দিকে। বাকি পুষণ, সৌরদীপ তলিয়ে যায়। ঘটনার পর আমারও ভয় লাগছে। চোখের সামনে বন্ধুরা হারিয়ে গেল, ভাবতে পারছিনা।"
দেবাংস বলছিলেন, "প্র্যাক্টিসে সময় কোনো দিনই ফলো বোট থাকে না। টুর্নামেন্টের দিন থাকত। শনিবার প্র্যাক্টিসের দিনও ছিল না ফলো বোট"।দেবাংস জানান, "চোখের সামনে যা ঘটল, জাস্ট ভাবতে পারছিনা। এরকম হবে স্বপ্নেও ভাবিনি।
আরও পড়ুন- ঝড়ের পূর্বাভাস থাকার পরেও অনুমতি কী ভাবে? রোয়িং দুর্ঘটনায় উঠছে একাধিক প্রশ্ন
প্রত্যক্ষদর্শী ও ওই বোটের সওয়ারি ছিল দেবাংস চক্রবর্তী। অভিশপ্ত ঘটনা দুঃস্বপ্নর মতো মনে হচ্ছে তাঁর। এরকম আর যেন না ঘটে কারো সঙ্গে... বলতে বলতেই গলা বুজে এলো।