এ হেন কচি-কাঁচাদের নিয়েই এ বার 'নিউ থিম' চেতলার পরমহংসদেব রোডে। অভিনব ওই থিমের নাম দেওয়া হয়েছে 'চাল চিত্র'। যা গভীর ভাবে জড়িয়ে রয়েছে দুর্গা পুজোর সঙ্গে। তবে থিমের আসল রূপকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কেউ বলছেন, এ পুজো আসলে শিশুদের। কেউ বলছেন, এ পুজো মানবতার। আর থিমের নাম বলছে, সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশের শিশুদের নিয়ে তৈরি এই থিম আসলে বুঝিয়ে দিতে চাইছে মাহামারীর সময়ে বেরিয়ে পরা সমাজের কঙ্কালসার 'চাল' চিত্রটাই।
advertisement
একরাশ স্বপ্নে ঘেরা শৈশবের হাতে তৈরি হওয়া থিম সঙটাও নিয়ম ভাঙার গান, আঙ্কেলের কাছে ছোট্ট শিশুদের আব্দার, 'চাই না আর চাল-তেল, দাও না কিনে প্যান্ডেল।' না দিলেই বা কী! সেটাই প্রমাণে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন পায়েল-দোয়েলের মতো কচি-কাঁচারা।
পুজোর উদ্যোক্তা দেবজিৎ মুখোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী সগুনা মুখোপাধ্যায়। কিন্তু বাকি সবকিছুই হচ্ছে খুদেদের হাত ধরে। ওদের কেউ পিছিয়ে পড়া অংশের, কেউ নিষিদ্ধ পল্লীর, কেউবা ফুটপাথবাসী।
পুজোর থিম সঙ গেয়েছে ১৩ বছরের পায়েল। ছোট্ট থেকে গান শিখেছে পায়েল। কিন্তু তাই বলে এমন ভাবে স্টুডিওতে হাতেখড়ি হয়ে যাবে, তা স্বপ্নেও ভাবেনি। রেকর্ডিং করতে ঢুকে তাই পায়েলের চোখে মুখে বেজায় অস্বস্তি।
এ ভাবেই আবার হাসনাবাদের ভাণ্ডারখালির বাচ্চারা তৈরি করছে দেড়ফুটের মা দুগ্গা। এক চালচিত্রেই মায়ের পুরো পরিবার। উত্তরে যদি ঠাকুর তৈরি হয়, তবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের খুদেদের হাতে তৈরি হচ্ছে এই পুজোর আলোকসজ্জা। আর কলকাতারই রমেশ দত্ত স্ট্রিটের বাচ্চারা তৈরি করছে প্যান্ডেল।
"এ বারের পুজো অন্যরকম। আর এই অন্য সময়ে আমরা মনে করি পুজো সারা পৃথিবীকে মানবতার বার্তা দিক। এ বছরের উৎসব হোক মানবতার উৎসব", উৎসবের অন্যতম উদ্যোক্তা সগুনা মুখোপাধ্যায়। স্বামী দেবজিৎ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, "সব কিছুই করছে বাচ্চা। এটা একেবারেই শিশুদের পুজো।"
নিজেদের হাতে নিজেদের পুজো করতে পারার আনন্দে মশগুল পায়েলরা। বলছে, "এ বারের পুজোয় আনন্দটা যে এ রকম হবে, সত্যি ভাবিনি।"
শালিনী দত্ত