সূত্রের খবর, পানীয় জলের বে-আইনি ব্যবহার নিয়ে ইতিমধ্যেই ২০ হাজার অভিযোগ সামনে এসেছে। এফ আই আর দায়ের হয়েছে ৪৬৭’টি।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মোট ১৯০৬২ জায়গা থেকে অভিযোগ এসেছে বলে খবর।
পানীয় জলের বে-আইনি ব্যবহার রোধে ইতিমধ্যেই হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। পানীয় জল সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগ জানাতে হলে ৮৯০২০৫২২২২ ও ৮৯০২০৬৬৬৬৬ যে কোনও নম্বরে অভিযোগ জানানো যাবে।
advertisement
এর আগে পানীয় জল নিয়ে একাধিক বার ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময় তিনি আগেই জানিয়েছিলেন,
“প্রায় তিন মাস ধরে মন্ত্রী গোষ্ঠী দেখছে। পাইপ কেটে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছে। গ্রামে জল ঢুকছে না। ডিপিআর ভুল কিছু জায়গায়। তাই জল যাচ্ছে না। কেউ পাইপ কেটে জল সেচে ব্যবহার করছে। এটা বেআইনি। সেচে জল না পেলে সেচ দফতর দেখবে। খাবার জল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেউ ভুল টেন্ডার, কেউ ভুল ডিপিআর করেছে।”
আরও পড়ুন: আলু পাচার রুখতে সারপ্রাইজ ভিজিট বেচারাম মান্নার! কবে কাটবে সঙ্কট? জানান মন্ত্রী
এরপরেই তিনি জানান, “প্রতি সোমবার এবার মিটিং হবে। ৪৪৮ অভিযোগ এসেছে। খাবার জলের পাইপ কাটা অন্যায়। এটা করলে ফৌজদারি মামলা হবে। গ্রেফতার হবে। ১৮২৩০ স্থান মিসইউজ হয়েছে। কেন বিডিও, কেন এসডিও দেখেনি এগুলো। কোনও নেতার কথা শুনবেন না। কোনও রাজনৈতিক দলের কথা শুনবেন না। কোনও পুলিশ কমপ্রোমাইজ করবেন না। দুই ২৪ পরগণা ও পূর্ব মেদিনীপুর থেকে বেশি অভিযোগ এসেছে। এছাড়া নদীয়া, পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে অভিযোগ এসেছে। সবচেয়ে ভালো অবস্থা কালিম্পংয়ের। সেখানে এর অপব্যবহার নেই।
আরও পড়ুন: ‘ রং ব্যবহার না করলে কেন্দ্র কেন টাকা দেবে না?’ ষোড়শ অর্থ কমিশনের বৈঠকে সরব মমতা
কেউ সমঝোতা করলে, তার চাকরি আগে যাবে। সরকার সহ্য করবে না। নিজের এলাকা দেখে অন্য এলাকা বঞ্চিত করলে। সরকার কড়া ব্যবস্থা নেবে।।”
এরপরেই কেন্দ্রকে নিশানা করে তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ৯ লাখের বেশি পরিবার-এর জন্য জল পাচ্ছে না।
রেলওয়ের জন্য প্রায় এক লক্ষ পরিবার জল পাচ্ছে না। ইন্ডিয়ান অয়েলের জন্য প্রায় ৩৯ হাজার পরিবার এবং ন্যাশনাল হাইওয়ের জন্য প্রায় ১ লক্ষ পরিবার জল পাচ্ছে না।”
এরপরেই বর্ষাকালে ডিভিসির জল ছাড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ডিভিসি খালি বন্যার জল ছাড়ে, পানীয় জল দেয় না। প্রায় তিন লক্ষ পরিবার জল পাচ্ছে না। ওরা খালি বাংলাকে ডোবায়। IWAI এর জন্য ১১ লক্ষ মানুষ, এয়ারফোর্স, বিআরও, জন্য একাধিক পরিবার জল পাচ্ছে না। সব মিলিয়ে ৫০ লক্ষ পরিবার জল পাচ্ছে না কেন্দ্রের অসহযোগিতায়। মুখ্যসচিব এই নিয়ে অফিসিয়াল মিটিং করবেন।”
এরপরেই প্রশাসনিক আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, “খালি পাইপ ফেলে রাখলে হবে না। কেউ কেউ টেন্ডার করেছে, কিন্তু সমীক্ষা করেনি। এদের কালো তালিকা ভুক্ত করুন। পাইপ কাটা মানে, সেখান থেকে বিষাক্ত কিছু ঢুকে গেলে বহু মানুষ মারা যাবে। এটা একটা অপরাধ। আইসি, এসপির নজরে আনুন। সেচ ও কৃষি দফতর দেখুক, কেন জল কেটে নেওয়া হচ্ছে। পূর্ত দফতরকেও দেখতে বলব। বিদ্যুৎ দফতর, পিএইচই সহ পাঁচ দফতর একসাথে কাজ করুক। নিজেদের দোষ ত্রুটি ঢেকে ফেলুন।”
জমি অধিগ্রহণ নিয়েও কেন্দ্রকে নিশানা করেন মমতা। তিনি বলেন “পাইপে যতক্ষণ না অবধি জল যাবে, ততক্ষণ অবধি নতুন জমি অধিগ্রহণ নয়। কারণ কোটি কোটি টাকা দিয়ে জমি কিনতে হয়। ভোটের আগে বলবে ঘর ঘর কা পানী। এদিকে আমাদের টাকা দিয়ে কাজ করতে হয়। কেউ যেন না ভাবে রাজ্য সরকার তার সম্পত্তি।”