সোমবার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যপাল৷ সেই অনুষ্ঠানেই শেক্সপিয়রের ‘হ্যামলেট’ নাটকের প্রসঙ্গ টেনে তাঁকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ কিছু কথা বলতে শোনা যায়৷ রাজ্যপাল বলেন, “রাজ্যে আইনগত বা সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হলে এক জন রাজ্যপাল শেক্সপিয়রের হ্যামলেটের মতো ‘টু বি অর নট টু বি’-র সংশয় নিয়ে বসে থাকবেন না। কারণ, শিক্ষা আমাদের এটাই শেখায়।”
advertisement
রাজ্যপালের এই কথার প্রেক্ষিতেই মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি রাজ্যপালকে সম্মান করি৷ আচার্যের জন্য রেসপেক্ট৷ কিন্তু কাজটা করে উচ্চ শিক্ষা দফতর৷ প্রত্যেকটা যদি উনি বলেন, ৭ দিনের মধ্যে কাজ করতে হবে৷ তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কীভাবে কাজ করবে৷’’
এরপরেই মমতা চিন্তিত মন্তব্য, ‘‘রাজ্যপালকে কেউ হয়তো ভুল বোঝাচ্ছে৷’’ তবে পাল্টা কড়া কথা শোনাতেও ছাড়েননি মমতা৷ নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘চুপচাপ বসে থাকবেন না তো কী করবে, সবার চাকরি খাবে? আমরা রাজ্যপালকে সম্মান দিই৷ সেই জন্য চেয়ার রাখা আমরা হস্তক্ষেপ করি না৷ এখন ৪২টা বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে৷ এই নিয়ম যখন তৈরি হয়েছে তখন হাতে গোনা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল৷ উপাচার্যরা পরীক্ষা নেবে, ছাত্রছাত্রীদের দেখবে নাকি রাজ্যপালকে গিয়ে হিসেব দেবে৷ আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে হস্তক্ষেপ করি না৷ বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীন ভাবে চলার পক্ষে৷’’
এ রাজ্যের রাজ্যপাল হিসাবে দায়িত্বগ্রহণের পর থেকে প্রাথমিক ভাবে রাজ্য সরকার এবং রাজ্যপালের মধ্যে সমন্বয়ের ছবিটাই ধরা পড়েছিল৷ তবে পরে রাজ্যের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে শুরু হয় সংঘাত৷
আরও পড়ুন: তেইশেই লক্ষ্য ছাব্বিশ! ৪২-এ ৪০ এর পরে ফের টার্গেট বাঁধলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
গত জানুয়ারি মাসে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও রাজ্যপালের মধ্যে বৈঠকও হয়৷ সেই বৈঠকের শেষে দুপক্ষের তরফে সমন্বয়ের বার্তা দেওয়া হলেও সমস্যার সমাধান যে হয়নি, তা স্পষ্ট হয় কিছুদিন পরেই৷
কিছু দিন পরেই রাজভবনের তরফ থেকে চিঠি পাঠিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির গতিবিধি এবং আর্থিক লেনদেনের হিসাব চাওয়া হয়। যা নিয়ে প্রকাশ্যেই নিজের ক্ষোভের কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী৷
এ ছাড়া, মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসাবে নিয়োগ সংক্রান্ত বিলটি দীর্ঘদিন ধরে আটকে রয়েছে রাজভবনে। এর মধ্যেই রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রীর এহেন মন্তব্য৷