রাজ্যে এসে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক আক্রমণের জবাব দিতে তৃণমূল ভবনে শিঙাড়া-জিলিপি ও ফিশফ্রাই-সহ সাংবাদিক বৈঠক করেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক এবং মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। কারণ, তাঁদের অভিযোগ এই সিঙাড়া-জিলিপির উপরেও ‘ফতোয়া’ জারি করেছে মোদি সরকার। তারই প্রেক্ষিতে এর জবাব দিতে বসা শিঙাড়া-জিলিপি সহযোগে।
এদিন কুণাল ঘোষ বলে, ‘‘আসলে কেন্দ্রের ফতোয়া। তাই কে কী খাবেন? কী পরবেন? সেটা তো ঠিক করে দিতে পারে না কেন্দ্র। আমিষ খাওয়া যাবে না? এটা কে বলল। বাংলায় মাছ, মিষ্টি & মোর থাকবে। তাই এই খাবার নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন শুরু করা হল। আসলে এটা আমাদের বার্তা, খাবার নিয়ে আমরা কারও কথা শুনব না৷’’
advertisement
স্কুলে স্কুলে বাচ্চাদের শিঙারা-জিলিপি-র মতো অস্বাস্থ্যকর খাওয়া থেকে বিরত থাকার প্রচার করার নির্দেশ জারি করা হয়েছে৷ জারি করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে৷ সংবাদমাধ্যমে এমন খবর ঘিরে প্রবল বিতর্ক সষ্টি হয়৷ তৃণমূল অভিযোগ তোলে এবার মানুষের খাদ্যাভ্যাসেও নাক গলাতে চাইছে বিজেপি৷ পাশাপাশি, শিঙাড়া-জিলিপি-ফিশফ্রাই বাঙালির অতি প্রিয় খাবার এবং তাতে ‘ফতোয়া’ জারি করা যাবে না বলেও দাবি তোলা হয় তৃণমূলের তরফে৷ যদিও কেন্দ্রের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, তাদের নোটিফিকেশনের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। শিঙাড়া-জিলিপি নিয়ে কোথাও কোনও ধরনের নিষেধাজ্ঞা তারা জারি করেননি।
তবে তার আগেই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে যায় রাজ্যজুড়ে। কুণাল বলেন, ‘‘কে কী খাবেন পরবেন সেটা মানুষ ঠিক করবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলায় কোনও খাবারের গুণগত মান ঠিক থাকলে সেখানে সরকার কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করার পক্ষে নয়। এটা হয় না। কেউ আমিষ খান, কেউ নিরামিষ খান। পুজোর দিন আমরা নিরামিষ খাই। যার যেটা পছন্দ তিনি তাই খাবেন। অনেক জায়গায় তো মাছ-মাংস খেতে দিচ্ছে না। তা কেন হবে?’’
বৃহস্পতিবার চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আশা করি আমাদের আপ্যায়নে আপনারা খুশি। প্রধানমন্ত্রী বাংলায় আসার আগে বিহারে গেলেন। সেখানে গিয়ে এত বাংলা প্রীতি যে বেঙ্গালুরুর সাথে বীরভুম, জয়পুরের সাথে জলপাইগুড়ি হবে বললেন। এই সব বলে আর নিজেকে নামাবেন না। কারণ দুই জেলা কেমন দেখতে। কেমন মানুষ তাই জানেন না। ভাববেন না ২০১১,২০১৬,২০২১ যিনি উন্নয়ন করেছেন তিনি ২০২৬ সালেও আসবেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বাংলাভাষীদের ওপর নাকি এত ভালোবাসা। ভিকশিতকে বিকশিত বলছেন চাপে। আর রোহিঙ্গা বলে বাঙালিদের তাড়াচ্ছেন। আপনাদের এক মুখ্যমন্ত্রী বাংলা ভাষায় কথা বললে, বিদেশি গোনা যাবে বললেন। কই তার বেলা তো কিছু বললেন না।’’
আরও পড়ুন: অবৈধ কল সেন্টারে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে এল পুলিশ…! পরমুহূর্তে যা ঘটল, মুহূর্তে ঘাম ছুটল ১৮ জনের
খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে পোস্ট করেন, ‘‘কিছু সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশে এখন থেকে নাকি শিঙাড়া/জিলিপি খাওয়া যাবে না। এটা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কোনো বিজ্ঞপ্তি নয়। আমরা সব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না। আমরা এই বিজ্ঞপ্তি কার্যকরও করব না। আমার মনে হয়, শিঙাড়া এবং জিলিপি অন্যান্য রাজ্যেও জনপ্রিয়। সেইসব রাজ্যের মানুষরাও এই খাবারগুলি ভালবাসেন। মানুষের খাদ্যাভ্যাসে হস্তক্ষেপ করা সঠিক কাজ নয়।’’
যদিও কেন্দ্রের শাসক দল এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের বক্তব্য অযথা বিতর্ক তৈরি করা হয়েছিল এই বিষয়কে ঘিরে। তাদের দাবি, শিঙাড়া আর জিলিপি নিয়ে আলাদা করে কোনও নির্দেশিকা কেন্দ্রের তরফে দেওয়া হয়নি৷ নির্দেশ ছিল চিনি এবং অতিরিক্ত তেল খাদ্যাভ্যাসে না শামিল করার পরামর্শের বিষয়ে৷