নথি ধরে ও নিজের ঘড়ির টাইম দেখিয়ে সরকারি আইনজীবীকে উদাহরণ দিলেন বিচারপতি। রাজ্যে যত সিভিক পুলিশ রয়েছে তাদের পিছনে রোজ ১.৬ কোটি খরচ হয়। এই টাকা খরচে কেন নজরদারি থাকবে না সেই প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি। সরকারে গোটা বিষয়ে তদন্ত করা উচিত ছিল বলেও মনে করে আদালত।
অন্যদিকে, এদিন আদালতে নিজেদের ভুল স্বীকার করে রাজ্য সরকার ৷ সরকারের তরফে সরকারি আইনজীবী মেনে নেন যে সিভিক পুলিশ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম হয়েছে ৷
advertisement
বুধবার আদালতে সরকারি আইনজীবী তপন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘বারিকুল, সারেঙ্গা থানায় সিভিক পুলিশ নিয়োগে কিছু ভুল হয়েছে ৷’ তিনি আদালতকে জানান, প্রধান সচিবকে এ ব্যাপারে অবগত করা হয়েছে ৷ এই কথা শোনার পর আরও ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠেন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, ‘আশা করেছিলাম রাজ্য পদক্ষেপ নেবে ৷ অনিয়মের তদন্ত করে রিপোর্ট দেবে ৷ কিন্তু উল্টে অনিয়মের ঘটনাকে সমর্থন করলেন সরকারি আইনজীবী ৷’ হাইকোর্টে আসার আগে আরও সচেতনতা প্রয়োজন ছিল বলেও সরকারি আইনজীবীর উদ্দেশে মন্তব্য করেন বিচারপতি।
সব মিলিয়ে রাজ্য সরকারের ভুল স্বীকারের পর আদালতের কাছে সিভিক পুলিশ নিয়োগ মামলায় মুখ পুড়ল রাজ্যের ৷ অনিয়মের তত্ত্বের স্বপক্ষে সওয়াল জোরদার হতে বিপাকে পড়তে চলেছে রাজ্য সরকার ৷ শুক্রবার এই মামলার রায় দেবে কলকাতা হাইকোর্ট।
২০১৩ সালের সিভিক পুলিশ নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বাঁকুড়ার দশ চাকরিপ্রার্থী। এই মামলার শুনানিতে রাজ্যের কাছে হলফনামা তলব করেন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সিভিক পুলিশ নিয়োগের পদ্ধতি সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয়। সিভিক পুলিশ নিয়োগে অনিয়ম থাকতে পারে এই সন্দেহ প্রকাশ করে, রাজ্যকে নিয়োগ সংক্রান্ত পদ্ধতি সবিস্তারে আদালতকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি ৷ যতদিন না তা হচ্ছে ততদিন সিভিক পুলিশে নতুন করে নথিভুক্তকরণ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত ৷
সোমবার নিয়োগ তথ্য পাওয়ার পর একদিনে ৮৭৫ জনের ইন্টারভিউ ও নিয়োগের তথ্য দেখে বিস্মিত বিচারক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ৷ বুধবার এই মামলায় তীব্র ভৎর্সিত হন রাজ্য সরকার ৷ তবে এই সব কিছুর পাশাপাশি, এতদিনে যেসব সিভিক পুলিশের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে তাদের ভবিষ্যত নিয়ে নতুন করে আশঙ্কার উদ্ভব হল ৷