কেন এই সিদ্ধান্ত? পরিবহণ নিগম সূত্রে জানা গেছে, শহরে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ চলছে। সে কারণে আগের তুলনায় ট্রাম পরিষেবা অনেকটা সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে। পরিবহণ নিগমের হাতে ট্রাম রয়েছে ২৬৯টি। কিন্তু বর্তমানে দিনে কোনও ট্রামকে রাস্তায় নামানো যাচ্ছে না। তাই চলনে সক্ষম থাকলেও বহু ট্রামকে দিনের পর দিন বসিয়ে রাখতে হচ্ছে। সেইসব ট্রামকে কীভাবে ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে পরিকল্পনা চলছিল কিছুদিন ধরেই। সেই সূত্রেই রেস্তোরাঁর জন্য ট্রাম ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ট্রাম লাইব্রেরি, ট্রাম রেস্তোরাঁ একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
advertisement
এমনকি ট্রামের বগি ভাড়া বা বিক্রি করা হয়েছিল রেস্তোরাঁ তৈরি করতে।কলকাতায় ট্রাম চালুর এক বছরের মাথায় বম্বেতেও (অধুনা মুম্বই) ট্রাম চলেছিল। তবে সে পাট বম্বে (মুম্বই) চুকিয়েও দিয়েছে প্রায় ষাট বছর হতে চলল। ভারতের প্রধান বাণিজ্য শহরের গতিময় জীবনে নাকি বড় প্রতিবন্ধক ছিল ট্রাম। তা বন্ধ করে দিয়ে শহরের সড়কপথের গতি কেমন বেড়েছে তা ব্যস্ত সময়ে গেলেই টের পাওয়া যাবে। তবে উৎসাহীর সন্ধানী চোখে খুঁজে দেখলে বম্বের বৈদ্যুতিক ট্রামের ইতিহাসের ঝলক দেখা যাবে অধুনা মুম্বই শহরে ‘বেস্ট’ বা বম্বে ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই অ্যান্ড ট্রামওয়েজ কোম্পানি লিমিটেড এই বাসগুলির নাম।শহরের গতি বাড়াতে ও দুর্ঘটনার আশঙ্কা কমাতে কেবলমাত্র চারটি রুটের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হোক ট্রাম পরিষেবা।
২০২৩ সালে পরিবহণ দফতরকে এমনই পরামর্শ দিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। সেই সময় মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, “কলকাতার ট্রাম আমাদের হেরিটেজ। সেই ঐতিহ্য আমাদের বজায় রাখতে হবে। কিন্তু যে সব জায়গায় ইতিমধ্যে ট্রাম চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে সেখানে লাইনগুলো তুলে দেওয়া দরকার। এমনকি, ওভারহেডে থাকা ট্রামের তারগুলিও সরিয়ে ফেলা দরকার। অনেক জায়গাতে লাইনের উপর পিচের প্রলেপ পড়ে গিয়েছে। তা ছাড়া শহরে ট্রাম চললে যানজট বেশি হবে, শহরের গতি অনেকটাই কমে যাবে। তাই ট্রাম যাতে কেবল চারটি মাত্র রুটেই চালানো হয় সেই বিষয়ে আমরা পরিবহণ দফতরকে বলেছি। শহরের বেশ কিছু রাস্তা রয়েছে, যেগুলি অপরিসর। সেখানে ট্রাম লাইনের জন্য দুর্ঘটনাও ঘটেছে মাঝেমধ্যে। তাই আমরা পরামর্শ দিয়ে পরিবহণ দফতরকে বলেছি বাকি লাইনগুলো রাখার আর কোনও প্রয়োজন নেই।”
আরও পড়ুন: আবার কী ঘটল আরজি করে! ফের জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান-স্লোগান! নিশানায় ‘সেই’ ১২ জন
বিধানসভায় স্পিকার বলেছিলেন, ‘ট্রাম কলকাতার ঐতিহ্য। সেই ট্রাম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমি কলকাতার মেয়রকে অনুরোধ করব বিষয়টি যাতে দেখেন।’ পাশাপাশি স্পিকার পরিবহণ মন্ত্রীকে অনুরোধ করে বলেছিলেন, ‘কলকাতার ট্রাম নিয়ে আমাদের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। দেখবেন যাতে বন্ধ না হয়ে যায়।’ট্রাম চলাচল পুনরায় সম্ভব কিনা সেই সিদ্ধান্ত এখন নির্ভর করে আছে আদালতের উপরেই।
