শহরের প্রতিটি সম্পত্তির ক্ষেত্রে ইউনিক আইডি নম্বর তৈরি হবে। তেমনটাই ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। শুক্রবার এই বিষয়টি তিনি পুর কমিশনার বিনোদ কুমারকে খতিয়ে দেখতে বলেছেন। কীভাবে এটা করা যায়, তা ঠিক করবেন বিনোদ কুমার।
কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, "বিষয়টি একদম প্রাথমিকভাবে চিন্তাভাবনার স্তরে রয়েছে। আমি শুধুমাত্র আমার ভাবনা জানিয়েছি। এবারে স্যাটেলাইট কানেকশন এর মাধ্যমে ওই ইউনিক আইডি নম্বর দিয়ে আমরা প্রত্যেকটি বাড়ি বা সম্পত্তি চিহ্নিত করতে পারব। কম্পিউটার বা মোবাইল থেকেই গুগল ম্যাপিং এর মাধ্যমে তা দেখা যাবে। সেক্ষেত্রে কেউ যদি বেআইনিভাবে সেখানে বাড়ি তৈরি করে তাহলে তাও ধরা পড়বে।"
advertisement
ইতিমধ্যেই এই ধরনের ইউনিক আইডি নম্বর দিয়ে শহরের জলাভূমি, পুকুর বা জলাশয়গুলি চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছে কলকাতা পুরসভা। এর আগে শুরুটা হয়েছিল কলকাতার মডেল বস্তি দিয়ে। এরপর পরিবেশ রক্ষার জন্য জলাশয়গুলিকেও ইউনিক আইডি দিয়ে সুরক্ষিত করার ভাবনা নেন কলকাতা পুরসভার আধিকারিকেরা।
কলকাতার বস্তিগুলির প্রতিটি ঘরে লাগানো হচ্ছে ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন নম্বর। এই বিশেষ নম্বর নিজস্ব ঠিকানার মতো কাজ করবে। সংখ্যা ও শব্দ মিলিয়ে মোট আট সংখ্যার হবে। সঙ্গে আরও চারটি সংখ্যা থাকছে পুরসভার নিজস্ব তথ্যের জন্য। এমনটাই জানিয়েছেন কলকাতা পুরসভার বস্তি বিভাগের মেয়র পারিষদ সদস্য স্বপন সমাদ্দার।স্বপন সমাদ্দার বলেন, "বস্তির মধ্যে ঠিকানা খুঁজতে অসুবিধা হয়। এবার একেবারে গুগল ম্যাপে সেই ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যাবে। সেই কারণেই বিশেষ সংখ্যার এই নম্বর।"
কলকাতা শহরে ৩,৭৯০ টি বস্তি আছে। যার মধ্যে হাজার দেড়েক বড় বস্তি রয়েছে বিরাট এলাকা জুড়ে। তবে এমন বস্তির ক্ষেত্রে কোনও একটি ঘরে সরকারি পরিষেবা বা অনলাইন কোনও অর্ডার থাকলে, নির্দিষ্ট বাড়িকে খোঁজা খুবই দুষ্কর। এবার এই বিশেষ নম্বরের সাহায্যে বস্তি এলাকায় সহজে ঠিকানার সন্ধান মিলবে।
বস্তির বাসিন্দারা অনলাইন অর্ডার দিলে দরজায় দরজায় যেতে হবে না। ইউনিক নম্বর পেলেই গুগুল লোকেশন তা বলে দেবে। চিঠিপত্র হোক বা সরকারি সুবিধা, ঠিক একই রকমভাবে পৌঁছে যাবে বস্তিবাসীর দরজায়।
প্রায় কলকাতা পুর এলাকায় অভিযোগ ওঠে বিভিন্ন জলাশয় বোজানোর। সেই জলাশয় সম্পর্কিত কোনও তথ্য না থাকায় সাধারণ মানুষও এর প্রতিবাদ করতে পারতেন না। এখন কলকাতা পুরসভার পরিবেশ বিভাগ এর আধিকারিকরা বস্তির মতো ইউনিক আইডি এই জলাশয়ের ক্ষেত্রেও দেওয়ার ভাবনা চিন্তা শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন, বিরাট বদল পাহাড়ের রাজনীতির! ভাঙছে হামরো পার্টি, পাল্লা ভারী অনিতের দলের
ঠিক হয়েছে কলকাতা পুরসভার সমস্ত ওয়ার্ডের জলাশয়গুলোকে চিহ্নিত করে সম্পত্তির অ্যাসেসমেন্ট নম্বরের মতো জলাশয়গুলিরও অ্যাসেসমেন্ট নম্বর দেওয়া হবে। সেই নম্বরগুলিতে ইউনিক আইডি থাকবে।
আরও পড়ুন, 'ছেলেকেও জঙ্গি নামে ডাকেন?' পড়ুয়াকে জঙ্গি বলার অভিযোগে শিক্ষককে প্রশ্ন ছাত্রের
তবে ইউনিক আইডি নিয়ে বস্তির কাজ এর আগেই অনেকটা এগিয়েছে। বেশ কিছু দিন ধরেই শহর জুড়ে এই রকমের কাজ চলছে। আপাতত ৫০টি ওয়ার্ডে এই কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অনেক ওয়ার্ডে কাজ শেষের পথে। বাকি ওয়ার্ডগুলিতেও দ্রুত এই কাজ শুরু করা হবে। কলকাতা পুরসভার ভোট ১৪৪টি ওয়ার্ডের সমস্ত বস্তিতেই নিজস্ব ঠিকানা বা ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন নম্বর দেওয়া হবে।