জঞ্জাল সাফাই নিয়ে এ বার আবাসন, হাসপাতাল, বেসরকারি স্কুল এবং কলেজের ক্ষেত্রে কড়াকড়ির পথে হাঁটছে কলকাতা পুরসভা। আইনকে এবার দ্রুত বাস্তবায়ন করতে চাইছে পুর কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন ১০০ কেজি বা তার বেশি জঞ্জাল তৈরি হয়, এমন বহুতলকে নিজেদের জঞ্জাল সাফাইয়ের দায়িত্ব নিজেকেই করতে হবে। সোমবার, টাউন হলে এক ওয়ার্কশপে পুরসভার এই সিদ্ধান্তের কথা জানান মেয়র পারিষদ, জঞ্জাল সাফাই, দেবব্রত মজুমদার।
advertisement
আবাসনের জঞ্জাল প্রক্রিয়াকরণের জন্য কমপ্যাক্টর বসাতে হবে বহুতল কর্তৃপক্ষকে। সেখানেই পচনশীল জঞ্জাল পৃথকীকরণ এবং কম্পোস্ট করার ব্যবস্থাও রাখতে হবে। কলকাতা পুরসভার ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বাজারে এই ধরনের পৃথকীকরণ ও প্রক্রিয়াকরণ শুরু করেছে। শুধু এই নির্দেশ বা আইনের কথা স্মরণ করিয়েই বসে থাকবে না কলকাতা পৌরসভা থাকবে নজরদারির ব্যবস্থা।
শহরের নতুন বহুতল কিংবা অন্যান্য বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদনের ক্ষেত্রে এ বার এই নিয়ম বাধ্যতামূলক হচ্ছে। না মানলে কলকাতা পুরসভার আইন অনুযায়ী মোটা টাকা জরিমানা করবে পুরসভা। শুধুমাত্র নতুন বহু দলের ক্ষেত্রেই নয় পুরনো যে সমস্ত বহুতল রয়েছে সেই বহু দল বা কমপ্লেক্সের যে আবাসনেই ১০০ কেজির বেশি দৈনিক জঞ্জাল জমা হয় সে ক্ষেত্রেই এই আইন কার্যকর হবে।
এ দিন টাউন হলে জঞ্জাল সাফাইয়ের নানা দিক নিয়ে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। মেয়র পারিষদ জঞ্জাল সাফাই দেবব্রত মজুমদার ছাড়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন মেয়র পারিষদ উদ্যান পালন দেবাশিস কুমার এবং জঞ্জাল সাফাই বিভাগের ডিজি শুভাশিস চট্টোপাধ্যায়-সহ কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিকেরা।
আরও পড়ুন : এ যেন পিতৃবিয়োগ! "উনি বলতেন আমার ৩ মেয়ে..." কান্নায় ভেঙে পড়লেন দেবশ্রী রায়
এ দিনের কর্মশাল বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল, স্কুল এবং কলেজ, আবাসন নির্মাণকারী সংস্থা, রেঁস্তরাগুলিকে ডাকা হয়েছিল। ঠিক হয়েছে, এ বার থেকে নতুন আবাসন গড়তে হলে নকশা অনুমোদনের সময়ে এই নিয়ম বাধ্যতামূলক থাকবে। প্রতিদিন ১০০ কেজি বর্জ্য তৈরি হয় কিংবা ন্যূনতম ৫০০০ বর্গমিটার বা তার উপরের আয়তনের আবাসনের জন্য এই নিয়ম প্রয়োগ করা হবে। জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে এই আইন তৈরি হলেও তা সঠিকভাবে কার্যকর করতেই পারেনি পুরসভা। করোনার আগে একবার তোড়জোড় শুরু হলেও আটকে গিয়েছে করোনার গেরোয়।
এ বার, ২০১৬ সালের আইনকে সামনে রেখে তোড়জোড় নামছে পুরসভা। এত দিন আবাসন চত্বরে শুধুমাত্র কম্প্যাক্টর মেশিন বসাতে হত। সেখানে জমির সমস্যা হলে পুরসভাকে একটি নির্দিষ্ট অর্থ দিলে পুরসভা জঞ্জাল সাফাইয়ের ব্যবস্থা করত। কিন্তু, এবার থেকে আবাসনের ভেতরেই জমি নির্দিষ্ট করে সেখানেই কম্পোস্ট করে সার তৈরির এবং কম্প্যাক্টর মেশিন বসাতে হবে।
মেয়র পরিষদ দেবব্রত মজুমদার বলেন, পুরসভা কোনও আর্থিক সাহায্য করবে না। তবে নির্মাণকারী সংস্থা বা আবাসন কর্তৃপক্ষ অন্যান্য সহযোগিতা চাইলে তা পুরসভা করবে। নির্মাণকারী সংস্থা যে ভাবে আবাসনে জল এবং আলোর ব্যবস্থা করে ঠিক সেভাবেই জঞ্জাল পৃথকীকরণ এবং তা পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করে তোলার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
রাস্তাঘাটে যত্রতত্র নোংরা আবর্জনা ফেলে রাখার বিষয়টিও আলোচনায় উঠে এসেছে। মেয়র পরিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, নিয়ম কিংবা জরিমানা সবটাই থাকবে। কিন্তু তার থেকেও বেশি মানুষকে সচেতন হতে হবে। তাহলেই এই উদ্যোগ সাফল্য লাভ করবে।
পাশাপাশি নির্মাণ বা চিকিৎসা বর্জ্য নিয়েও এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সেক্ষেত্রে এই ধরনের জঞ্জাল সাফাইয়ের জন্য নির্দিষ্ট সংস্থা রয়েছে। আবাসন কিংবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে যথারীতি নিয়ম মেনে এই ধরনের সংস্থার সাহায্য নিতে বলেছে পুরসভা।
BISWAJIT SAHA