পুরসভার সূত্রের খবর, স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের একটি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল যে রাজ্যে 'ডেন ৩' ভ্যারিয়েন্টের হদিশ মিলেছে। এরপরেই এর সত্যতা যাচাই করতে নাইসেডের সাহায্য নিতে বলা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে 'ডেঙ্গু থ্রি' ভ্যারিয়েন্ট এর খবর নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, নাইসেডে ৫০ টি স্যাম্পেল পাঠানো হয়েছিল তার মধ্যে থেকে ৩৫টি স্যাম্পেলে 'ডেন থ্রি' ভেরিয়েন্টের হদিশ মিলেছে।
advertisement
আরও পড়ুন: ঐতিহ্য বজায় রেখে 'পুজোর থালি' সাজাবেন কীভাবে? জেনে নিন
শহরে ক্রমেই বাড়ছে ডেঙ্গু সংক্রমণ। পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার তা স্বীকার করে নিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনের পর কাউন্সিল চেম্বারে একটি জরুরী বৈঠক হয় ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে। বিভিন্ন কাউন্সিলরদের মতামতে উঠে আসে এই অবস্থায় ডোর টু ডোর ক্যাম্পেইনে জোর দিলেও বেশ কিছু জায়গায় প্রবেশ করতে পারছে না কলকাতা পুরসভা কর্মীরা। তারমধ্যে রয়েছে রেল, পোর্ট ও মেট্রোর কিছু জায়গা। এই সমস্ত জায়গাগুলি দীর্ঘদিন অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় পড়ে থাকায় সেখান থেকে ডেঙ্গু বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে আশঙ্কা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তাদের। সেই কথা মাথায় রেখে এইবার কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সাহায্য কলকাতা পুরসভা যৌথ উদ্যোগ না নিলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে বলে এদিন আশঙ্কা প্রকাশ করেন মেয়র।
আরও পড়ুন: পুজোয় নতুন করে আলো দিয়ে সেজে উঠুক আপনার সাধের ঘরখানাও! রইল ফাটাফাটি ৫ উপায়
কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তাদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে 'ডেঙ্গু থ্রি' ভ্যারিয়েন্ট। যাঁর মারণ ক্ষমতা অনেক বেশি। ইতিমধ্যেই শহরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। এই অবস্থায় নাগরিকদের সাহায্য না পেলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মেয়র। সেই কথা মাথায় রেখেই কাউন্সিলরদের পথে নামার নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র।
পুজোর আগে বিভিন্ন মন্ডপ পরিদর্শন করতে যাবে কলকাতা পৌরসভার বিশেষ প্রতিনিধি দল। মেয়র পরিষদ দেবাশীষ কুমার মন্ডপের বিভিন্ন জায়গায় ডেঙ্গির মশা জন্মাতে পারে এমন আশঙ্কার কথা বলেন জরুরী বৈঠকে। তারপরই মেয়রের পরামর্শ মতো বিশেষ টিম গঠন করে মন্ডপ গুলিকে পরীক্ষা করতে হবে নিয়মিত।
পুরসভার স্বাস্থ্য দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী কলকাতার ২৫টি ওয়ার্ড হয়ে উঠেছে ডেঙ্গুর হটস্পট। সেখানকার কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকায় ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্ত দেখা দিয়েছে। পুরসভা সূত্রে খবর, ১ জানুয়ারি থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই এলাকাগুলিতে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৪৫১। পুরসভার সূত্রে খবর, বর্তমানে শহরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ এবং সংযুক্ত কলকাতায়। ৯ নম্বর বোরো এলাকায় সংক্রমণের গ্রাফ খানিকটা নিম্নমুখী হলেও ১০, ১১, ১২, ১৩ নম্বর বোরো অঞ্চলে অর্থাৎ টালিগঞ্জ, হরিদেবপুর, বাইপাস সংলগ্ন কসবা, মুকুন্দপুর, কালিকাপুর, গরফা, বেহালার খানিকটা অংশে ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ। যা কার্যত নাগালের বাইরে, এমনটাই দাবি পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকদের।
অন্যদিকে, উত্তর কলকাতায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ এতদিনে সবচেয়ে বেশি থাকলেও, মঙ্গলবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে উত্তর কলকাতায়।