এদিন কলকাতা পুরসভায় সাংবাদিকদের উদ্দেশে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ''ডেঙ্গি প্রত্যেক বছর হয়। নেগ্লিজেন্স না থাকলে মৃত্যু হয় না। ঠিক সময় চিকিৎসা হলে মৃত্যু হয় না।''
এদিন মেয়র দাবি করেন, শহরে এখন ডেঙ্গি কমেছে। বিরোধী শাসিত রাজ্য কেরলেও ডেঙ্গি হয়েছিল। উত্তরপ্রদেশে লেবুর রস খাইয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছিল। বাংলাদেশ, ত্রিপুরাতেও প্রকোপ রয়েছে। গ্লোবাল হয়ে গিয়েছে ডেঙ্গি। সাবধানতা অবলম্বন করলে থাকলে রেহাই। মানুষ সচেতন না হলে যেখানে যেই সরকার থাকুক, ডেঙ্গি আটকাতে পারবে না।
advertisement
বিজেপির কলকাতা পুরসভা অভিযান নিয়ে কটাক্ষ করেন মেয়র। তিনি বলেন, ''মশারি দিয়ে মুখ ঢেকে নাটক হবে, কিন্তু ডেঙ্গি আটকাতে পারবে না।''
ডেঙ্গি নিয়ে পুরসভার পদক্ষেপ প্রসঙ্গে মেয়রের বক্তব্য, ''ফেব্রুয়ারি মাস থেকে প্রত্যেক বার ভিজিট করেছেন অতীন ঘোষ। এপ্রিল থেকে মাইকিং, ডোর টু ডোর, ফিভার ক্লিনিক খোলা, পুজোর সময় হেলথ ওয়ার্কার কোনও ছুটি নেয়নি। আমরা অটো মাইকিং করেছি, লিফলেট দিয়েছি।''
ডেঙ্গির বারবাড়ন্ত নিয়ে অবশ্য কেন্দ্রের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছেন মেয়র। তিনি বলেন, ''ডেন থ্রি ট্রিটমেন্ট পদ্ধতি গাইডলাইন আমরা পাইনি। যেহেতু দিল্লি থেকে এটা সারা দেশের জন্য দেওয়া হয়। কেন্দ্র আমাদের সেটি দেয়নি বলে আমরাও দিতে পারিনি। বাকি সব গাইডলাইন দিয়ে প্রচার চলছে। যেখানে পপুলেশন, আর্বানাইজেশন সেখানে বেশি হবে। ডেঙ্গি নিয়ে সতর্ক রাজ্য সরকার। ফেব্রুয়ারি, মার্চে নবান্নে মিটিং হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।''
আরও পড়ুন: ‘ফিরহাদ হাকিম হলেন ডেঙ্গি মিনিস্টার, ডেঙ্গি চেয়ারম্যান...’ কটাক্ষ দিলীপের
ফিরহাদের মতে, কলকাতা শহরে ডেঙ্গির বারবাড়ন্তের অন্যতম কারণ, শহরের উত্তরে বিপদজনক পরিত্যক্ত বাড়ি এবং এডেড এরিয়াতে ফেলে রাখা জমি। পরিত্যক্ত জমিতে বাড়ছে ডেঙ্গি, স্বীকার করেন মেয়র।
তবে এজন্য সচেতন হতে হবে নাগরিকদের। মেয়র ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ''প্রত্যেক ওয়ার্ডে ২০ থেকে ২৫ জন করে কাজ করছেন। বেশি লোক তো নেই, লিমিটেড। তাই মানুষকে সচেতন হতে হবে। একটা-দু'টো ড্রোন কত জায়গায় ওড়াবো? তাও যেখানে সম্ভব ড্রোনের মাধ্যমে স্প্রে করা হচ্ছে।''
সচেতনভাবেই অনেকে জমি কিনে ফেলে রাখেন, এই বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট ক্ষোভের সঙ্গে মেয়র বলেন, ''ইনভেস্টমেন্ট এর জন্য জমি পড়ে রয়েছে। খালি জমিতে নোংরা ফেলছে। পাবলিক হেলথ-এর জন্য হাজার হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে, পার্সোনাল জমি পরিষ্কার করতে। কমিশনারকে বলেছি পরিষ্কার করলে তিন ডবল টাকা নেবে।''
আরও পড়ুন: সাংসদের ঘরেও ডেঙ্গির হানা! আক্রান্ত স্বামী-মেয়ে, সময় বেঁধে দিলেন শুভেন্দু
জমিতে আবর্জনা থাকলে কেএমডিএ-র চেয়ারম্যানকে নোটিস দিতেও বলেন ক্ষুব্ধ ফিরহাদ। আসলে কেএমডিএ-র চেয়ারম্যান তিনি নিজেই।
অনেক সময় দেখা যায় কেএমডিএ জমি দিয়েছিল বাড়ি করতে। তিন বছর সময় থাকে বাড়ি বানানোর জন্য। কিন্তু ১০ বছর ধরে ফেলে রেখে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো কেএমডিএ আবার অধিগ্রহণ করে নিচ্ছে। তার পরেও কেন ফেলে রাখা হচ্ছে? এই বিষয়ে প্রশ্ন করায় ফিরহাদের সাফ জবাব, ''আসলে কোন জমি পড়ে আছে সেটা দেখার দায়িত্ব আধিকারিকদের। চেয়ারম্যানকে নোটিস দেওয়ার অর্থ সেই আধিকারিকরা নিজেদের কাজ করেননি। তাদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।''