আরও পড়ুনঃ ঠিক যেন ছবির মত! ঝকঝকে এক সাজানো গ্রাম রয়েছে এই বাংলাতেই
সেই ক্ষুদে সাহিত্যিকদের নিয়েই বইমেলায় এসেছিলেন যাদবপুরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা।কিন্তু ম্যাগাজিনের নাম ‘চরকি’ কেন? সংস্থার অন্যতম সদস্য বিশ্বদীপ মিত্র জানালেন, চরকি কখনও এক জায়গায় থেমে থাকে না। ঘুরে বেড়ায়। এই বাচ্চাগুলোও তাই। এই বইটার ৫০০ কপি আমরা ওদের হাতে দিয়ে বলেছিলাম বিক্রি করতে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চরকির মত ঘুরে ওরা ৩০০ কপি বিক্রি করে ফেলেছিল। এই কারণেই বইটার নাম চরকি রাখা।
advertisement
শুধুমাত্র ছাপা এবং বাকি কিছু খরচ বাদ দিলে বই বেরোনোর পুরো কৃতিত্বই বাচ্চাদের দিলেন বিশ্বদীপ বাবু। তিনি জানান, ‘আমরা যখন ওদের পড়াশোনা করাই চেষ্টা করি সেটাকে বইয়ের মধ্যে সীমিত না রাখতে। যে বিষয়গুলো তথাকথিত স্কুলের পড়াশোনার গণ্ডির বাইরে সেই সমস্ত জিনিসও ওদের পড়ানোর চেষ্টা করি। সেই আলোচনা থেকেই ওদের দিয়ে বই লেখানোর ভাবনা উঠে আসে। বাচ্চাদের কাছে আমরা জানতে চেয়েছিলাম যে বইয়ের আকারে লেখা প্রকাশ করতে ওরা আগ্রহী কিনা। লেখাগুলোকে হয়তো সাজিয়েছি আমরা, কিন্তু পুরো কাজটা ওরাই করেছে’। প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন বাচ্চা জড়িয়ে এই চরকির সঙ্গে।
সবার লেখা হয়তো বইতে প্রকাশিত হয়নি, কিন্তু কারোর অবদানই কম নয় বলে জানালেন সংস্থার সদস্যরা। প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের লেখা রয়েছে বইতে। কী ধরনের লেখা রয়েছে চরকিতে? বিশ্বদীপ বাবুর কথায়, ‘বাচ্চারাই ঘুরে বিভিন্ন মানুষের ইন্টারভিউ নিয়েছে। সেগুলো আমরা প্রকাশ করেছি। ওদের আঁকা ছবি রয়েছে। ওদের জীবনের কথা তুলে ধরা হয়েছে। কবিতা রয়েছে, নানা বিভাগের গল্প রয়েছে। বাচ্চাদের চোখে বাকি সমাজটা কীরকম, রয়েছে সেই কাহিনীও’। শহরের তিনটে বস্তি থেকে বাচ্চাদের কলকাতা বইমেলা নিয়ে এসেছেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা। ক্ষুদে সাহিত্যিকদের লেখা বই শুনে নিমেষে কেনার ধুম পড়ে যায় সাধারণ মানুষদের মধ্যে। রোজ বইমেলা আসা হয়তো সম্ভব হচ্ছে না, তবে আগামী দিনে ‘চরকি’-র পরবর্তী সংস্করণ প্রকাশিত হবে বলেও জানালেন বিশ্বদীপবাবু।