শুভেন্দু-সহ বিজেপি বিধায়কদের গলায় শোনা যায় দূ্র্নীতি কাণ্ডে শাসক দলের বুরুদ্ধে বিজেপির শ্লোগান। এই শ্লোগানে গলা মেলান বিরোধীদল নেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপির বিধায়করা। যদিও, বিজেপির এই শ্লোগান পর্বের অনেক আগেই সভাকক্ষ ছেড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
শাসকদলের বোধদয় হয় কিছু পরে। বিধানসভার বিজনেস এডভাইসরি কমিটির বৈঠকে স্থির হয়, বিজেপির এই শ্লোগানের নিন্দা করা হবে সরকারিভাবে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এ বিষয়ে নিন্দা প্রস্তাব আনেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। শোভনদেব তার ভাষণে বলেন, "প্রতিবাদের নামে বিজেপি বিধানসভার ফ্লোরকে ব্যবহার করে যে অসংসদীয় শব্দ ব্যবহার করেছে, তা নিন্দনীয়। এই ঘটনা আগে কখনও হয়নি। বিরোধীদের এই আচরণ বিধানসভার গরিমা নষ্ট করেছে। বিরোধী দলনেতা তার এই আচরনের মধ্যে নিজের রাজনৈতিক দৈন্য প্রকাশ করছেন। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি।"
advertisement
আরও পড়ুন, মমতা বেরোতেই তুমুল হট্টগোল বিধানসভায়, বড় ইস্যুতে সুর চড়াল বিজেপি
আরও পড়ুন, 'মানুষের জন্য জীবন দিতে রাজি আছি', 'লক্ষ্মীর ভান্ডার' ইস্যুতে তীব্র আক্রমণ মমতার!
শোভনদেবের সূত্র ধরেই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, বিরোধীদল নেতা এ ভাবে একটি দলের সব নেতা, কর্মী ও কোটি কোটি সমর্থকদের চোর বলতে পারেন না। যদি বাপের ব্যাটা হন, তাহলে নাম করে বলুন। আমাদেরও একটা ধৈর্যের সীমা আছে। সেই লক্ষ্মণরেখা অতিক্রম করবেন না। "
শোভনদেব, ববি হাকিমের পরে সুর চড়ান মন্ত্রী চন্দ্রিমা। বিজেপিকে ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বুঝে নেওয়ার 'হুমকি' দেন তিনি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগকে তুলে এনে সুর চড়ান উদয়ন গুহরা। এদিকে, রাজ্যপালের ডাক পেয়ে বিরোধীদল নেতা তখন রাজভবনে। স্বাভাবিক ভাবে, সভায় শাসক দলের নিন্দার জবাব দিতে শুভেন্দুহীন বিজেপির অভিভাবক তখন বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা। মনোজ বলেন, বাম জামানায় বিধানসভায় বর্তমান শাসক দলের অসংসদীয় আচরনকে ভুলে গেলে চলবে না। প্রধানমন্ত্রীকে যারা সম্মান দেখান না,তাদের মুখে এই জ্ঞানের কথা শোভা পায় না।
বিধানসভায় অসংসদীয় শব্দ ব্যবহার নিয়ে শাসক - বিরোধী এই তরজায় শেষমেশ দাড়ি টানেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। অধ্যক্ষ বলেন, "বিধানসভার গরিমা নষ্ট হয়, এমন কোনও অসংসদীয় শব্দ ভবিষ্যতে যেন কেউ না বলেন।’’ তবে, এরপরেই বিজেপির মুখ্য সচেতক মনেজ টিগ্গাকে বলেন, ‘‘আপনি আপনার দলনেতাকে সতর্ক করে দেবেন’’। তবে, বিরোধীদল নেতাকে সতর্ক করা প্রসঙ্গে সভায় কোন মন্তব্য না করলেও, পরে মনোজ বলেন, এ বিষয়ে যা বলার তা বিরোধীদল নেতাকেই অধ্যক্ষের বলা উচিত।
সব মিলিয়ে আজ বিধানসভায় সার ও কৃষকের সমস্যা নিয়ে আলোচনা শাসক - বিরোধী তরজায় কার্যত অ-সার রাজনীতির ঘেরাটোপেই আটকে গেল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।