তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, "অনেক স্বপ্ন নিয়ে ১২ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করেছিল আজন্ম HIV+ সুনীতা আর সৌমিত্র। খবরটি সংবাদ মাধ্যমে সম্প্রচারিত হয়। মানুষ আশীর্বাদ করেন। বিয়ের পরে সুনীতা কাজে ফেরে, 'কাফে পজিটিভ' কাফেটেরিয়াতে। কিন্তু সৌমিত্রকে তার কর্মস্থল প্রথমে বলে ৯০ দিন বাড়িতে থাকতে। একইসঙ্গে দূরে কোথাও গিয়ে থাকার কথাও জানায়। অর্থাৎ কাজটি গেল। আজন্ম HIV+ তাঁর দোষে হয়নি। এটি ছোঁয়াচে রোগ নয়। আইনত চাকরি সঠিক। HIV & AIDS Act 2017-এ স্পষ্টভাবে সব বলা আছে। সুনীতা আর সৌমিত্র খোলা মনে সমাজের সামনে পরিচয় গোপন না করে বিয়ে করল। অথচ এই সমাজের যোগ্যতা নেই তাদের মানসিকতাকে স্যালুট করার। সৌমিত্রর কর্মস্থল বারাসাত ভিশন ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট পরিচালিত স্কুলটির সচিব যে সিদ্ধান্ত ওকে জানিয়েছেন, তার তীব্র প্রতিবাদ করছি। অবিলম্বে সৌমিত্রকে কাজে ফেরান তাঁরা।"
advertisement
আরও পড়ুনঃ বিরাট খবর! বন্দে ভারতে এ বার জুড়তে চলেছে কলকাতা-গুয়াহাটি, কবে থেকে চলবে ট্রেন?
সুনীতাকে তিন বছর বয়সেই সোনারপুরের আপনজন হোমে নিয়ে আসেন হোম কর্তৃপক্ষ। এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়ে সুনিতার বাবা-মা মারা যান। বাবা মায়ের মৃত্যুর পর মেদিনীপুর থেকে সোজা সোনারপুরের এই হোমে আসে সে। সুনিতাও এইচআইভি আক্রান্ত। অন্যদিকে, সৌমিত্র ছোটবেলায় ডিপথেরিয়ার ইঞ্জেকশন নিতে গিয়ে সিরিঞ্জ থেকে এইচআইভি আক্রান্ত হন। দু'জনেই চিকিৎসার জন্য প্রতিমাসে মেডিক্যাল কলেজে যেতেন। আর সেখানেই তাঁদের পরিচয়। প্রথমে ছোট আলাপচারিতা, তারপর ধীরে ধীরে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। আর সেই প্রেমই পরিণয়ে পরিণতি পায়।
আরও পড়ুনঃ ঝাড়গ্রাম গিয়ে অপরূপ এই গ্রামে যাননি? পর্যটন মানচিত্রে নয়া ডেস্টিনেশন খোয়াব গাঁ, দেখুন কত বড় মিস!
এই বিয়ে যে কোনও আর পাঁচটা বিয়ে বাড়িকে ছাপিয়ে গিয়েছিল। এই বিয়ে দুই এইচআইভি পজেটিভের। নিজেরা শুধুমাত্র এইচআইভি পজিটিভ নন, নিজেরা মনের দিক থেকেও পজিটিভ। আর সেই কারণেই তো সমাজকে বার্তা দিতে এই ধরনের পজিটিভ উদ্যোগ নিয়েছিলেন তাঁরা।
উদ্যোক্তাদের দাবি, সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি পেলে দু'জন পজেটিভ এইচআইভি পিতা-মাতার থেকেও সুস্থ সন্তান পাওয়া সম্ভব। এইচআইভি আক্রান্তদের সমাজ যাতে বাঁকা চোখে না দেখে তাঁদের পাশে দাঁড়ায়, তাঁদেরকে সুস্থ সমাজ উপহার দেয় সেই কারণেই এই উদ্যোগ নিয়েছেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু বিয়ের এক সপ্তাহ গড়ানোর আগেই সৌমিত্রকে যে অবস্থার সম্মুখীন হতে হল, তা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
ABIR GHOSHAL