শনিবার শেষ দুই ধৃত জাহির গাজি ও বাপি মণ্ডলকে আলিপুর আদালতে তোলা হয়। দুই অভিযুক্তকেই আগামী ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারী আইনজীবী আবেদন করেন, এই ঘটনায় আরও অনেকের জড়িত থাকার যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত মৃতদের থেকে লুঠ করা আংটি, মানিব্যাগ, মোবাইল উদ্ধার হয়নি। ঘটনার পুনর্নিমাণ ছাড়া রহস্য সমাধানে বেগ পেতে হচ্ছে। খুনের মোটিভ এখনও স্পষ্ট নয়। এই ধৃতদের পুলিশের হেফাজতে রেখে আরও জেরার প্রয়োজন রয়েছে।
advertisement
মিঠুকে জেরা করে গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ঘরের ভিতর কী ভাবে গোটা অপারেশন করা হবে, সেই প্ল্যানিং করেছিল ভিকি এবং কী হবে ঘরের বাইরে, কোথা থেকে কে কী ভাবে পালাবে, বাইরের গোটা অপারেশন প্ল্যানিং করেছিল খুনের মূল চক্রী মা মিঠু হালদার। মিঠু ধরা পড়ার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছিলেন বাপি এবং জাহির। শুক্রবার সকালে সুন্দরবন থেকে আটক করা হয় ওই দুই অভিযুক্তকে। তারপর তাঁদের লালবাজার আনা হয়। সেখানে টানা ৬ ঘণ্টা জেরায় তাঁরা অপরাধের কথা কবুল করেন। এখন তদন্তকারীদের প্রশ্ন, ভিকি কোথায়?
পুলিশ সূত্রে খবর, জাহির-বাপির বাড়ি ডায়মন্ড হারবারের মঞ্জিতার মোড়ের কাছে। জোড়া খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মিঠু হালদার মাস চারেক আগে ওখানেই বাড়ি ভাড়া নেয়। বাপির পরিবারের সঙ্গে আলাপ হয় তার। বাপি রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করত। জাহির ভ্যানে ইমারতি মালপত্র নিয়ে যেত। কলকাতা পুলিশের এক কর্তার দাবি, জাহির-বাপি খুনের দিন ঘটনাস্থলে থাকার কথা স্বীকার করেও খুনের দায় পুরোপুরি চাপিয়েছে পলাতক ভিকির উপরেই। বলেছে, কাজ আছে বলে তাদের ওখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যদিও পুলিশ তাদের এই বক্তব্য মানতে রাজি নয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, ভিকি ৯-১০ মাস আগে বাড়ি কেনার জন্য বাবাকে নিয়ে এসেছিল গড়িয়াহাটে। সেই সময় বাড়ির নীচের অংশ ২৫ লক্ষতে কিনতে চেয়েছিল। কিন্তু সুবীর চাকি বলেন, গোটা বাড়ি দেড় কোটিতে বিক্রি করবেন। ফলে তিনি বাড়ি বিক্রি করেননি। পুলিশের অনুমান, সেই থেকেই কি রাগ হয়েছিল ভিকির? পরে প্রতিহিংসা আক্রোশের জন্ম? সেই সময় তার বাবা থেকে ১৫ লক্ষ ও বাকি ১০ লক্ষ ভিকি দেবে বলেছিল। কিন্তু পরে তার বাবা টাকা দিতে অস্বীকার করায় ভিকি নিজের বাবাকেও হত্যার চেষ্টা করেছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: গড়িয়াহাট জোড়া খুনে ৩ জন গ্রেফতার হলেও এখনও রয়েছে ধোঁয়াসা! উঠছে বেশ কিছু প্রশ্ন