এরপর তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় ফুলবাগান ও রাজাবাজার এলাকার দলীয় কার্যালয়ে। এরপর তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় এসএফআই ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য দফতর দীনেশ মজুমদার ভবনে। সেখানে ছাত্র যুব সংগঠনের বর্তমান নেতৃত্বের পাশাপাশি প্রাক্তন নেতৃত্বও তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। উপস্থিত ছিলেন গৌতম দেব, রবীন দেব, নেপাল দেব, তাপস সিনহার মতো নেতৃত্ব। এরপর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় সিপিএমের রাজ্য দফতর আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে। সেখানে তাঁকে মালা দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সহ রাজ্য নেতৃত্ব। দলের কেন্দ্রীয় কমিটি ও পলিটব্যুরোর পক্ষ থেকেও সম্মান জানানো হয় প্রয়াত এই নেতাকে।
advertisement
আরও পড়ুন: সিব্বলের জোর সওয়ালেও কাজ হল না, অনুব্রত মামলায় সময় পেয়ে গেল সিবিআই!
এরপর সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির দফতর প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে তাঁর মরদেহ রাখা হয়। সিপিএমের পাশাপাশি সেখানেও তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব। সিপিআইয়ের পক্ষ থেকে সেখানে উপস্থিত হন মৌসুমী ঘোষ, প্রবীর দেব। আইএসএফের নওশাদ সিদ্দিকিও সেখানে আসেন শ্রদ্ধা জানাতে। এরপর সেখান থেকে একটি শোক মিছিল বের করা হয়। অর্ধনমিত রক্তপতাকা নিয়ে মিছিল করে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে তাঁর দেহ দান করা হয়। তাঁর সম্পর্কে রাজ্য বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, "মানব মুখোপাধ্যায় আমার চাইতে বয়সে অনেক ছোট। বয়সে ছোট কেউ চলে গেলে অনেক বেশি খারাপ লাগে। তিনি দলের অনেক দায়িত্ব পালন করেছেন। যখন যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেটা সঠিক ভাবে পালন করেছেন। তবে বেশকিছু দিন ধরে তাঁর শারীরিক সমস্যা হচ্ছিল।" তাপস সিনহা বলেন, "তিনি চলে যাওয়াতে অফুরান ক্ষতি হল। তবে তিনি যা রেখে গিয়েছেন তাঁর লেখনীর মাধ্যমে সেই পথ ধরেই আমাদের চলতে হবে ভবিষ্যতে।" নওশাদ সিদ্দিকি বলেন, "বর্তমান রাজনীতিতে সৌজন্যের অভাব তৈরি হয়েছে। এই রকম পরিস্থিতিতে মানব মুখোপাধ্যায়ের মতে একজন নেতার চলে যাওয়ায় রাজ্য রাজনীতির জন্য ক্ষতি হল।"
আরও পড়ুন: ঘর খুলতেই মেঝেতে মেয়ের দেহ, বিছানায় জামাইয়ের! পাশে পড়ে পোড়া কাঠকয়লা, কিন্তু কেন?
দীর্ঘ অসুস্থতার পর মঙ্গলবার মল্লিকবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগে করেন মানব মুখোপাধ্যায়৷ বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর৷ বাম আমলে পরিবেশ তথ্যপ্রযুক্তি সহ একাধিক দফতরের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন মানব মুখোপাধ্যায়৷ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মন্ত্রিসভার অন্যতম পরিচিত মুখ ছিলেন তিনি৷ বেলেঘাটা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন মানব মুখোপাধ্যায়৷
রাজ্য কমিটির প্রাক্তন সদস্য ছিলেন তিনি৷ যদিও শারীরিক অসুস্থতার জন্যই মাঝে দলীয় কর্মসূচি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন৷ গত অগাস্ট মাসেই সেরিব্রাল অ্যাটাক হয় তাঁর৷ সেই সময় বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে৷ সেবারেও তাঁর অবস্থা যথেষ্ট গুরুতর হয়৷ কিন্তু সে যাত্রায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি৷ এর পরে কিছুটা সুস্থ হয়ে দলের কর্মসূচিতেও যোগ দিচ্ছিলেন৷
হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে মল্লিকবাজারের ওই হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন মানব মুখোপাধ্যায়৷ মঙ্গলবার বাড়িতে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি৷ এর পরেই দ্রুত তাঁকে মল্লিকবাজারের ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ জরুরি বিভাগে তাঁর চিকিৎসাও শুরু হয়৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই অবশ্য শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি৷ সিপিএমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে মানব মুখোপাধ্যায়ের৷