কিন্তু কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হল? একাধিক বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে কাজ শুরু করে৷ তার পরে বেশ কিছুদিন কাজ বন্ধ থাকার পরে ফের কাজ শুরু হয়৷ ফের ২০২২ সালে দু'বার এমন বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটল। এর পরেই প্রশ্ন উঠেছে সত্যিই কি যথাযথ ভাবে পরীক্ষা করে বউবাজারে মেট্রোর কাজ হয়েছে?
আরও পড়ুন: দিওয়ালি ধনতেরাসের দু টাকা বেশি রোজগার আর মাথায় নেই, ঘর হারানোর আশঙ্কায় বউবাজারের সোনার ব্যবসায়ীরা
advertisement
২০২০ সালের নভেম্বর মাসে জিওলজিক্যাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ার জার্নালে প্রকাশিত হয় একটি রিপোর্ট। অধ্যাপক প্রদীপ কুমার শিকদার ও সুমন্ত্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই রিপোর্ট প্রকাশ পায়৷ যেখানে বউবাজার কাণ্ডের কারণ কী? কী কী বিষয় পরীক্ষা করতে হবে তার সবকিছু উল্লেখ করা হয়েছে৷ এখন প্রশ্ন কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থার জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্টকেও যথাযথ ভাবে স্টাডি করা হয়নি৷ আর তার ফল এই পুনরায় দুর্ঘটনা৷
রিপোর্ট জুড়ে যা আছে তার সারাংশ হল, বউবাজারে মেট্রোর কাজ বিপজ্জনক। যে অংশ দিয়ে টানেল গিয়েছে, পরিবর্তে অন্য অংশ বাছাই করা উচিত।পুনরায় কাজ শুরুর আগে একাধিক পরীক্ষা করা দরকার।কেন্দ্রীয় সংস্থা জিওলজিক্যাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ার জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল এই রিপোর্ট। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসের এই রিপোর্ট কি আদৌ দেখেছিল KMRCLযদি রিপোর্ট দেখত তাহলে বউবাজার নিয়ে পুনরায় সমস্যা হত না বলে দাবি প্রযুক্তিবিদদের।
আরও পড়ুন: বউবাজারে KMRCL আধিকারিকদের প্রতি দুর্ব্যবহারের অভিযোগ, সমাধানের আশ্বাস মেয়রের
রিপোর্টে উল্লেখ, জিওফিজিক্যাল সার্ভে, ড্রিলিং, জিওফিজিক্যাল ও জিওফিজিক্যাল লগিং, হাইড্রোকেমিক্যাল ইনভেস্টিগেশন, অ্যাকুইফার টেস্ট, অ্যাকইফারের চরিত্র বোঝা এবং মাটির নীচের জলের স্রোত বা গতি বোঝা হোক।এ ছাড়া রিস্ক ও ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট করতে বলা হয়৷ ২০১৯ সালের বিপর্যয় থেকে মেট্রো যে শিক্ষা নেয়নি পুনরায় বউবাজারের ঘটনা তারই প্রমাণ বলে উল্লেখ প্রযুক্তিবিদদের।
অধ্যাপক প্রদীপ কুমার শিকদার জানিয়েছেন, "মাটির নীচে কাজ করতে গেলে সেই এলাকার যাবতীয় রিপোর্ট হাত রাখা উচিত ছিল। কারণ কলকাতা শহরের মাটির চরিত্র আলাদা। কোথাও ১৪ মিটার থেকে ৫০ মিটার কাদা মাটি। কোথাও আবার কাদা মাটি নেই৷ আছে শুধুই বালি মাটি। এখানে বালি মাটির অংশে সুড়ঙ্গ তৈরি হচ্ছিল। ফলে লুকনো জলস্তরে আঘাত আসতেই এই অবস্থা তৈরি হয়েছে৷"
প্রসঙ্গত এই কাজের ক্ষেত্রে কেন জিওফিজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া বা ন্যাশনাল গ্রাউন্ড ওয়াটার বোর্ডের সাহায্য নেওয়া হয়নি, মাটির নীচের অবস্থা জানতে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও KMRCL- এর প্রজেক্ট ডাইরেক্টর নরেশ চন্দ্র কারমালি জানিয়েছেন, "আমরা RITES-এর রিপোর্টের উপর নির্ভর করে কাজ করছি।"