দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর অপসারণ সহ ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লাগাতার আক্রমণের পর আন্দোলনের কৌশল নিয়ে বিক্ষুব্ধদের মধ্যেই ঐক্যমত হচ্ছে না। সূত্রের খবর, শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur) ও তাঁর অনুগামীরা চাইছেন, দাবি আদায় করতে আন্দোলনকে আরও জোরদার করার এটাই উপযুক্ত সময়।
কিন্তু, সায়ন্তন বসু সহ কয়েকজন বিক্ষুব্ধ রাজ্য নেতা মনে করছেন, ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বার্তা কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃত্ব পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া গেছে। সাংসদ শান্তনু ঠাকুরকে সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা আশ্বস্ত করে বলেছেন, উত্তর প্রদেশ সহ ৫ রাজ্যের ভোট চুকলেই তিনি এ বিষয়ে শান্তনুর সঙ্গে আলোচনা করবেন। ফলে, নাড্ডা ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ওপর আস্থা দেখিয়ে আপাতত ধীরে চলো নীতি নেওয়াই বাঞ্ছনীয়।
advertisement
আরও পড়ুন: আসন রফা চূড়ান্ত, উত্তর প্রদেশে বিজেপি-র জোট সঙ্গী আপনা দল ও নিষাদ পার্টি
সায়ন্তনদের আশঙ্কা, ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আন্দোলনের রাশ না টানলে, তার থেকে ফায়দা তুলবে আরও অনেকে। ওই অংশের নেতাদের মতে সম্প্রতি, রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর অপসারণ দাবি করে কলকাতায় রাজ্য দপ্তরে ও জেলায় জেলায়, রাস্তায়, ট্রেনে পোস্টার মেরে কদর্য ভাষায় যে আক্রমণ শুরু হয়েছে, নানা সামাজিক মাধ্যমে প্রতিনিয়ত যেসব প্রচার চলছে, তার দায় তাঁদের ঘাড়েই চাপছে। অথচ, বিক্ষুব্ধ বিজেপি-র এই অংশের সঙ্গে তাঁদের কোনও লেনাদেনা নেই। ফলে, তাঁদের উপরে কোনও নিয়ন্ত্রণও খাটবে না।
এই পরিস্থিতিতে তাই প্রকাশ্যে বিদ্রোহ থেকে সরে থেকে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখাটাই শ্রেয় বলে মনে করছেন সায়ন্তন বসুর মতো কয়েকজন বিক্ষুব্ধ নেতা। যদিও, রাজনৈতিক মহলের মতে, গতকাল বিক্ষুব্ধদের বৈঠক ও পোস্টার বিদ্রোহ নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে রাজ্য নেতৃত্ব নালিশ জানানোর পরেই সায়ন্তনদের মত বিক্ষুব্ধদের কেউ কেউ নড়েচড়ে বসেছেন। সে কারণেই আন্দোলনের কৌশল বদলে ইস্যু জিইয়ে রাখতে চাইছেন বিক্ষুব্ধরা৷
আরও পড়ুন: পটভূমি প্রায় এক, বাংলার ভোটের ফলেই ভরসা খুঁজছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী?
পোর্ট ট্রাস্ট গেস্ট হাউসের বৈঠকে শান্তনুর প্রস্তাব ছিল, মতুয়া মহাসংঘের প্রতিষ্ঠাতা পি আর ঠাকুরের সঙ্গে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নাম জুড়ে নতুন মঞ্চ করে এখনই মতুয়াদের দাবি নিয়ে সমান্তরাল আন্দোলন শুরু করা হোক। রাজ্যের জেলায় জেলায় ছড়িয়ে থাকা মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে মঞ্চের বার্তা পৌঁছে দিতে বিজেপির ধাঁচে 'সাংসদ সম্পর্ক যাত্রা' করার ঘোষণাও করতে চেয়েছিলেন বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। কিন্তু, শেষমেশ তা নিয়ে ঐক্যমত না হওয়ায় আনুষ্ঠানিক ঘোষণা থেকে সরে আসতে হয় শান্তনুকে।
তবে, আপাতত শান্তনুকে নিরস্ত্র করা গেলেও, ১০ মার্চের পরেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যদি বিক্ষুব্ধদের দাবির কোনও সমাধান সূত্র বাতলে দিতে না পারে, তাহলে রাজ্য বিজেপিতে ভাঙন অনিবার্য হয়ে পড়বে বলেই মনে করছে দলের একাংশ।