TRENDING:

সাত মাসের শিশুর হৃদযন্ত্রে জটিল বাইপাস সার্জারি! সুস্থ শরীরে একরত্তিকে বাড়ি ফিরিয়ে নজির গড়ল কলকাতা

Last Updated:

বিশ্ব জুড়ে শিশুদের মধ্যে কনজেনিটাল হার্ট ডিজিজ (Congenital Heart Disease) বা সিএইচডি (CHD)-র মতো হৃদযন্ত্রের অসুখ ক্রমেই বাড়ছে।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#কলকাতা: হৃদযন্ত্রের গুরুতর রোগে আক্রান্ত হয়েছিল একরত্তি শিশুকন্যা। তাই তার প্রাণ রক্ষার্থে জটিল অস্ত্রোপচারের চ্যালেঞ্জটা নিতেই হয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। আর সেই চ্যালেঞ্জ জিতে সুস্থ শরীরে ওই একরত্তিকে বাড়ি ফিরিয়ে দিল দক্ষিণ কলকাতার ওই হাসপাতাল। শুধু তা-ই নয়, সাত মাসের ওই শিশুর হৃদযন্ত্রে বাইপাস সার্জারি করে নজির গড়লেন বিএম বিড়লা হার্ট রিসার্চ সেন্টার (BM Birla Heart Research Centre)-এর অভিজ্ঞ চিকিৎসকেরা। কারণ প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের উপর বাইপাস সার্জারির ঘটনা খুবই বিরল।
Representative Image
Representative Image
advertisement

আসলে বিশ্ব জুড়ে শিশুদের মধ্যে কনজেনিটাল হার্ট ডিজিজ (Congenital Heart Disease) বা সিএইচডি (CHD)-র মতো হৃদযন্ত্রের অসুখ ক্রমেই বাড়ছে। এই নিরিখে পিছিয়ে নেই ভারতও। কারণ পরিসংখ্যান বলছে যে, প্রতি বছর গোটা দেশে প্রায় ২ লক্ষেরও বেশি শিশু এই গুরুতর রোগ নিয়ে জন্মায়।

আরও পড়ুন- ‘ব্লু টিক’ চিহ্ন বসল নামের পাশে, ইনস্টাগ্রামে ভেরিফায়েড হলেন মদন মিত্র

advertisement

কলকাতার ওই প্রসিদ্ধ হাসপাতাল সূত্রে খবর, বোকারোর বাসিন্দা কামাক্ষী নামে সাত মাসের ওই শিশুকন্যাকে এখানে রেফার করা হয়েছিল। অস্ত্রোপচারের সময় তার ওজন ছিল মাত্র ৫.৮ কিলোগ্রাম। কিন্তু কী সমস্যা ছিল ওই শিশুটির? হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, কামাক্ষীর শরীরের বাম দিকের ধমনী সে-ভাবে কাজ করছিল না। আর হৃদযন্ত্রে একটা স্ফীতি বা ফোলা-ভাব তৈরি হয়েছিল। ফলে কামাক্ষীর প্রাণ বাঁচাতে অবিলম্বে তার চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল। সেই কারণেই বাইপাস সার্জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ওই হাসপাতালের চিকিৎসক দল। এমনিতে প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে সাধারণত প্রয়োজনে বাইপাস সার্জারি করা হয়ে থাকে। কিন্তু শিশুদের ক্ষেত্রে এই ধরনের অস্ত্রোপচার সে-ভাবে করা হয় না। ফলে তা বেশ বিরল। গত ১৫ জুন কামাক্ষীর করোনারি আর্টারি বাইপাস গ্র্যাফট (Coronary Artery Bypass Graft) বা সিএবিজি (CABG)-র মতো অস্ত্রোপচার হয়। আর এই অস্ত্রোপচার চিকিৎসকদের কাছে বেশ চ্যালেঞ্জিংই ছিল। অস্ত্রোপচারে সফল হওয়ার পরে ধীরে ধীরে সেরে ওঠে শিশুটি। অবশেষে এত দিনের লড়াইয়ের পরে মা-বাবার সঙ্গে সুস্থ শরীরে হাসিমুখে বাড়ি ফিরে গিয়েছে একরত্তি কামাক্ষী। আর এখানেই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন বিএম বিড়লা হার্ট রিসার্চ সেন্টারের বিশেষজ্ঞরা।

advertisement

আরও পড়ুন- মাশরুমের মধ্যেই গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে ছোট্ট ইঁদুর, মাত্র ১৫ সেকেন্ডে ইঁদুরটিকে ধরে ফেললেই রেকর্ড!

বিএম বিড়লা হার্ট রিসার্চ সেন্টারের সিনিয়র পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিস্ট (Senior Pediatric Cardiologist) ডা. শুভেন্দু মণ্ডল (Dr. Subhendu Mandal) বলেন, "ছোট্ট কামাক্ষীর হৃদযন্ত্রটা ফুলে বেড়ে গিয়েছিল। আর এই কারণেই তার হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতাও অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছিল। সহজ ভাবে বলতে গেলে, সাধারণত হৃদযন্ত্র যত পরিমাণ কাজ করতে পারে, এ-ক্ষেত্রে সেই তুলনায় কামাক্ষীর হৃদযন্ত্র ১/৬ ভাগ কাজ করতে পারছিল। আর এ-সব ক্ষেত্রে চিকিৎসার জন্য আমরা প্রথমেই করোনারি আর্টারির উৎপত্তিস্থল এবং গতিপথটাই ভাল করে পরীক্ষা করে দেখি। আর এ-সব কেসে যেটা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর সেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়েই খুবই আশ্চর্য হই আমরা। দেখা যায়, কামাক্ষীর প্রধান করোনারি আর্টারি ঠিক ভাবে কাজই করতে পারছে না। আর ছোট্ট ওই শিশুকে সুস্থ করার জন্য বাইপাস সার্জারি ছাড়া আমাদের কাছে আর কোনও বিকল্প ছিল না।"

advertisement

আবার ওই হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইন্টেনসিভিস্ট (Pediatric Intensivist) ডা. শতরূপা মুখোপাধ্যায় (Satarupa Mukherjee) জানিয়েছেন যে, নিজের কেরিয়ারে তিনি যে-সব বিরল ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন, এটা তার মধ্যে অন্যতম। তিনি বলেন, ‘‘এই জটিল অস্ত্রোপচারে প্রচুর ঝুঁকি ছিল। ফলে ৪-৫ দিন কামাক্ষীকে আইসিইউ (ICU)-তে অত্যন্ত ক্রিটিক্যাল ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে রাখতে হয়েছিল। এমনকী আমরা এক্সট্রা কর্পোরিয়াল লাইফ সাপোর্ট (Extracorporeal Life Support) বা ইসিএলএস (ECLS)-ও তৈরি রেখেছিলাম। যদিও পরে তার আর প্রয়োজন পড়েনি। পেডিয়াট্রিক আইসিইউ (Pediatric ICU)-তে সাপোর্টিভ থেরাপির পরে শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে।’’

advertisement

বিএম বিড়লা হার্ট রিসার্চ সেন্টারের কার্ডিও-থোরাসিক ভাস্কুলার সার্জারি (Cardio-Thoracic Vascular Surgery) বিভাগের ডিরেক্টর ডা. মনোজ কুমার দাগা (Dr. Manoj Kr Daga)-র বক্তব্য, ছোট্ট কামাক্ষীর বাম দিকের প্রধান ধমনীতেই মূলত একটা বড়সড় বাধা ছিল। ফলে অ্যাওর্টার মাধ্যমে সেখানে যোগাযোগ স্থাপন করা যাচ্ছিল না। ফলে ওই একরত্তি শিশুর হৃদযন্ত্রের স্পন্দনের মধ্যেই লিমা টু ল্যাড (LIMA to LAD) করা হয়েছিল। আর এটাই বোধহয় এত ছোট শিশুর ক্ষেত্রে এই প্রথম বার করা হল। এর পর ধীরে ধীরে চিকিৎসায় সাড়া দিতে শুরু করে শিশুটি এবং সুস্থ হওয়ার পরে তাকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।

বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
সাত মাসের শিশুর হৃদযন্ত্রে জটিল বাইপাস সার্জারি! সুস্থ শরীরে একরত্তিকে বাড়ি ফিরিয়ে নজির গড়ল কলকাতা
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল