তবে, বাংলায় এখনও বহাল তবিয়তে বজায় রয়েছে মমতা ম্যাজিক। আর সেই ম্যাজিকে ভর করেই এই প্রথম শিলিগুড়ি পুরনিগম তৃণমূলের হাতে এল। আর বিধানসভায় বিরোধী দল হিসেবে উঠে আসা বিজেপি কার্যত ধুলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। গত বিধানসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে যে শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রায় সব ওয়ার্ডেই এগিয়ে ছিল বিজেপি, সেখানেই এবার তৃণমূলের রমরমা। বাকি তিন পুরনিগমেও তৃণমূলের জয়জয়কার। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণভাবে, বিরোধী আসন থেকে ক্রমেই বিলীন হয়ে যাচ্ছে বিজেপি। আর ফের বিরোধী পরিসরের জায়গা দখল করছে বামেরা।
advertisement
রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন, এখন বহু জায়গায় সরাসরি লড়াই দাঁড়াচ্ছে তৃণমূল বনাম বামফ্রন্ট। চারটি পুর নিগমের ভোট এবং বাকি পৌরসভাগুলিতেও বামফ্রন্ট নেতা, কর্মী, প্রার্থীরা তাই ঝাঁপাতে চাইছেন জোরকদমে।
চন্দননগরে মোট ৩৩টি আসনের মধ্যে ৩২টির ফল ঘোষণা হল আজ। একটি ওয়ার্ডের প্রার্থীর প্রয়াণের ফলে তা স্থগিত রাখা হয়েছে। ৩৩টির মধ্যে মোট ৩১টি ওয়ার্ডে তৃণমূল জয়ী হয়েছে। অন্যদিকে, শুধুমাত্র একটি ওয়ার্ডে বাম প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। অর্থাৎ চন্দননগরেও তৃণমূলের জয়জয়কার।
আরও পড়ুন: রাস্তা দিয়ে এ কী ছুটছে! পিংলায় একটি লরিকে কেন্দ্র করে যা ঘটল, চক্ষু চড়কগাছ সকলের
অপরদিকে, শিলিগুড়িতে তৃণমূলের দখলে এসেছে ৩৭টি ওয়ার্ড। বিজেপি পেয়েছে ৫টি, সিপিএম পেয়েছে ৪টি, কংগ্রেস ১টি। আসানসোলে ইতিমধ্যে ৬৪টি আসন গিয়েছে তৃণমূলের দখলে।
আসানসোল পুরনিগমের ১০৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৯১ আসনে জিতেছে তৃণমূল, বিজেপি ৭টি, বামেরা দুটি, কংগ্রেস তিনটি , সিপিআইএম দুটি ও অন্যান্যরা ১টি আসনে জিতেছে। পুরভোটে সবুজ ঝড় বিধাননগরেও। ৪১টির মধ্যে ৩৯টি আসনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেস পেয়েছে ১টি আসনে। নির্দল পেয়েছে ১টি আসন। আসানসোল পুরনিগমে বোর্ড গঠন করতে চলেছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন: বিধাননগরের মসনদে কে? মমতার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যা বললেন কৃষ্ণা চক্রবর্তী....
কলকাতা পুরভোটের ফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, কলকাতার ৬৫ আসনে বামেরা ছিল দ্বিতীয় স্থানে। বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে ছিল ৪৭ ওয়ার্ডে, কংগ্রেস দ্বিতীয় স্থানে ১৬ আসনে আর নির্দল প্রার্থীরা দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন পাঁচটি ওয়ার্ডে। রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছে, বামেদের বাস্তবেই পুনরুত্থান ঘটছে। যার কিছুটা আন্দাজ মিলেছিল শেষ উপনির্বাচনগুলিতেও।
বিজেপি অবশ্য এখনও প্রতিদিনই সন্ত্রাসের অভিযোগই করে চলেছে। তবে, তাতে বিশেষ চিড়ে ভিজছে না। কারণ এবারের পুর নিগমের ভোটেও বামেদের 'উত্থান'ই এখন চর্চার বিষয়। যদিও বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অভিযোগ করেছেন, বিজেপি-কে ঠেকাতে বামেদের তুলে ধরছে তৃণমূল। কলকাতা পুরভোটের ফল ঘোষণার পর যেমন অভিযোগ করেছিলেন, চার পুরভোটের ফল নিয়েও একই অভিযোগ করেছেন সুকান্ত। তাঁর কথায়, ‘‘বামেদের প্রচারে লোক নেই। হাতে গোনা চার-পাঁচ জন নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু ভোট পেয়ে যাচ্ছে! এটা অবিশ্বাস্য। ছাপ্পা মারার সময় পাঁচটা তৃণমূলে দিলে দুটো বামে দিয়ে দিচ্ছে ওরা।’’