চন্দ্র বোস বলেন, ‘‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস এবং শরৎচন্দ্র বোসের যে আদর্শ সেই আদর্শকে সামনে রেখে আমার বিজেপিতে যোগদান করা। সর্বধর্মকে ঐক্যবদ্ধ করে গোটা দেশে ওঁরা যে দৃষ্টান্ত রেখেছেন সেই আদর্শকে ভিত্তি করেই আমার রাজনীতিতে আসা। বিজেপি নেতৃত্ব আমাকে কথা দিয়েছিল যে আপনি নেতাজির আদর্শকে সামনে রেখেই গোটা দেশে বিজেপির হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন। কিন্তু না কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব না রাজ্য নেতৃত্ব কেউই কথা রাখেনি। তাই আমি মনে করলাম বিজেপিতে থেকে আমার কোনও লাভ নেই। সেই কারণেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাকে আমি আমার ইস্তফা পত্র পাঠিয়েছি।’’
advertisement
দলত্যাগি বিজেপি নেতা চন্দ্র বোস এই প্রতিবেদককে এও বলেন, ‘‘বিজেপি নেতৃত্ব আমায় বলেছিল আজাদ হিন্দ মোর্চা তৈরি করা হবে। আপনি সেই মোর্চার দায়িত্বে থাকবেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই মোর্চা তৈরি হয়নি। আমাকে কোনও বিশেষ দায়িত্বও দেওয়া হয়নি। কেন আজাদ হিন্দ মোর্চা তৈরি করা হয়নি সে ব্যাপারে আমাকে কিছু জানানোও হয়নি। আমি বিজেপিকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে দলকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব দিয়েছিলাম। সেই প্রস্তাবেও কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।’’ চন্দ্র বোসের কথায়, ‘‘বাংলায় রাজনীতি সম্পূর্ন আলাদা। বিভাজনের রাজনীতি, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বাংলার মানুষ পছন্দ করেন না। তাই সব সম্প্রদায়ের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে যদি এগোনো যেত তাহলে বিগত একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মানুষ বিজেপিকেই ক্ষমতায় আনতেন।’’
আরও পড়ুন- বিপুল সম্পদ তো রয়েছেই, দানধ্যানও করেন প্রচুর; দেশের পঞ্চম ধনী মহিলার নাম জানা আছে কি?
কিন্তু বর্তমানে যে পথে বিজেপি এগোচ্ছে তাতে বিজেপির যে এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসার কোনও সম্ভাবনাই নেই সে কথাও স্পষ্ট করেন চন্দ্র বোস। পাশাপাশি বাংলায় বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীর কোনও মুখ নেই। সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় থেকে জ্যোতি বসু কিংবা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যেক রাজনৈতিক দলেরই একজন মুখ ছিলেন। কিন্তু বঙ্গ বিজেপিতে অনেক নেতা আছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাউকেই দল সেভাবে তুলে ধরেনি। বিজেপিতে অনেক নেতা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আক্রান্ত কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই। অথচ সব নেতারাই বন্দুকধারীদের নিয়ে নিজেদের সুরক্ষার কথা ভাবলেও দলীয় কর্মী এবং তাঁদের পরিবারের সুরক্ষা দেওয়ার কথা কেউ ভাবেন না বলেও বিস্ফোরক দাবি করেন চন্দ্র বোস। এক একান্ত সাক্ষাৎকারে বিজেপির এ রাজ্যের প্রাক্তন সহ-সভাপতি চন্দ্র বোস বলেন, ‘আমি এখন নির্দল।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজনীতিতে কেউ একবার প্রবেশ করলে তিনি রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নিতে পারেন না। আমি মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করব। আগামী দিনে কোনও রাজনৈতিক দল যদি আমাকে সুযোগ দেয় তাহলে আমি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস এবং শরৎচন্দ্র বোসের আদর্শ মেনে যদি সেই দল আমাকে কাজ করার সুযোগ দেয় তাহলে আমি সক্রিয়ভাবে সেই রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করব।’’
বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একের পর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগের বোমা ফাটিয়ে চন্দ্র কুমার বোস আরও বলেন,’ সিএএ বিল পাস করার আগে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে বলেছিলাম কোনও ধর্মের ভিত্তিতে কোনও বিল পাশ করা উচিত নয়। তাতেও কেউ কোনও কর্ণপাত করেনি। আমি এক সময় মিটিং মিছিলে অংশ নিয়েছি। কিন্তু যখন দেখলাম পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি ভুল পথে হাঁটছে, আমার কোনও প্রস্তাব, পরামর্শকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না তখন আমার আর এই দলে থাকার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনি। তাই ইস্তফা দিলাম।’’