লটারি জয়ের নামে অনুব্রত আসলে গরু পাচারের কালো টাকা সাদা করেছেন, এমনই সন্দেহ ছিল সিবিআই আধিকারিকদের৷ অনুব্রতর একাধিকবার লটারি জয়ের তথ্য হাতে আসার পর সিবিআই কর্তাদের সেই সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়েছে৷
আরও পড়ুন: অনুব্রত-হীন বীরভূমে এবার বড় সিদ্ধান্ত তৃণমূলের, নতুন দায়িত্ব পাচ্ছেন বিধায়ক অভিজিৎ
গত বছরের ডিসেম্বরের মাসে অনুব্রত লটারিতে এক কোটি টাকা জেতেন৷ গরু পাচারের তদন্তে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করার পর সম্প্রতি অনুব্রতর লটারি জয় নিয়েও খোঁজ খবর করতে শুরু করে সিবিআই৷ সেই তদন্তেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে৷ লটারির টিকিটের নম্বরের সূত্র ধরে বীরভূমের একাধিক লটারির টিকিট বিক্রেতার খোঁজ পায় সিবিআই৷ যে লটারি বিক্রেতা ওই টিকিটটি বিক্রি করেছিলেন, তাঁকেও ডেকে পাঠায় সিবিআই৷ কিন্তু তিনি জানিয়ে দেন, ওই টিকিট আদৌ তিনি অনুব্রত মণ্ডলকে বিক্রি করেননি৷
advertisement
এর পাশাপাশি অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য খতিয়ে দেখতে গিয়েও চাঞ্চল্যকর তথ্য আসে সিবিআই আধিকারিকদের হাতে৷ সিবিআই সূত্রে খবর, অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আরও দু' দফায় লটারি জয়ের মারফত ৫১ লক্ষ টাকা ঢুকেছে৷ এর পাশাপাশি, ২০১৯ সালে অনুব্রত মণ্ডলের একটি অ্যাকাউন্টে লটারি জয়ের মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকা ঢোকে৷ যার অর্থ, কোটি টাকা জয় বাদ দিলে আরও অন্তত তিন বার অনুব্রত মণ্ডল অথবা সুকন্যা মণ্ডল লটারি জিতেছেন৷ প্রত্যেকবারই লক্ষ লক্ষ টাকা ঢুকেছে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে৷
আরও পড়ুন: 'এই জ্ঞান থাকা উচিত!' মমতাকে বামেদের থেকে শেখার পরামর্শ বীরভূমের তৃণমূল নেতার
লটারি জয়ের নামে অনুব্রত বা সুকন্যার অ্যাকাউন্টে আরও কোনও টাকা ঢুকেছে কি না, সেটাই এখন খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা৷ সিবিআই আধিকারিকদের অনুমান, অন্য কারও জেতা লটারির টিকিট নগদ টাকায় কিনে নিয়ে অনুব্রত বা সুকন্যার নামে ভাঙানো হয়েছে৷ এ ভাবেই গরু পাচার বা বেআইনি সূত্রে পাওয়া টাকা নগদে লটারির টিকিট জয়ীকে দিয়ে তাঁর কাছ থেকে লটারি বাঁধা টিকিটটি নিয়ে নেওয়া হত৷ সেই টিকিট লটারি সংস্থায় জমা দিয়ে টাকা তুলে নেওয়া হত অনুব্রত বা সুকন্যা মণ্ডলের নামে৷ এই পদ্ধতিতেই গরু পাচারের মতো বেআইনি কারবার থেকে পাওয়া কালো টাকা সাদা করা হত একরকম নিশ্চিত সিবিআই গোয়েন্দারা৷
লটারি জয়ের রহস্যভেদ করতে আসানসোল জেলে গিয়েও অনুব্রত মণ্ডলকে জেরা করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা৷ যদিও জিজ্ঞাসাবাদে অনুব্রত যথারীতি সহযোগিতা করেননি বলেই সিবিআই সূত্রে খবর৷ লটারি রহস্যভেদে তাই আরও বেশি করে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহেই এখন জোর দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা৷