কখনও ভয় পেয়েছেন। কখনও এড়িয়ে গেছেন। রোগটার নাম শুনে মনে মনে কপালে হাতও ঠুকেছেন কেউ কেউ। কিন্তু একবারও কি কাছে এগিয়ে কথা বলেছেন বাচ্চাটির সঙ্গে? পিঠে হাত রেখেছেন? কিম্বা তার অভিভাবকের সঙ্গে ওই রোগের বাইরে কোন কথা বলেছেন? ... উত্তর হল না।
এইখানে মানে এসএসকেএমে। সেখানেই দেখা হয়েছিল ক্লাস ফোরের পিয়ালি আর ফাইভের শান্তনুর সঙ্গে। সকলেই সেরেব্রাল পলসিতে আক্রান্ত। এই হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছে এদের। চিকিৎসকের বক্তব্য পরিষ্কার, পাশের মানুষটির ধারনা বদল দরকার। দরকার সমাজের দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন।
advertisement
চমকে গেলেন? তাহলে আগে সংক্ষেপে জেনে নিন সেরেব্রাল পলসি আসলে কি? কেন হয়? কতটা বিপজ্জনক? তবে তার আগে শুনে নিন, সেরেব্রাল পলসির জন্মের সময় মস্তিস্কে অক্সিজেন কম গেলে সন্তান আক্রান্ত হতে পারে সেরেব্রাল পলসিতে। ক্ষতিগ্রস্থ যেহেতু ব্রেনের একটি অংশ, ফলে শারিরীক বৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
৫০% সেরেব্রাল পলসি আক্রান্তের আই-কিউ লেভেল স্বাভাবিক বা তার থেকে বেশি
৩০% অল্প অসুবিধা থাকে শারিরীক বিকাশ বা মানসিক বিকাশ সংক্রান্ত
১০% ক্ষেত্রে বুদ্ধিবৃত্তির সমস্যা দেখা যায়।
সিরিয়াল দেখা নিয়ে দাদুর সঙ্গে রীতিমত লড়াই করে সোহম। জানতে চাইলে গড়িয়ে পড়ে হাসিতে। চাই কি দু একটা সিরিয়ালের গল্পও বলে দিতে পারে। প্রায় দু বছর বয়স থেকে চিকিৎসা চলছে সোহমের। এখনও হাতের আর পায়ের স্টিফনেস যায়নি।
একদিন পিয়ালির হাঁটুর শিরায় টান লাগে। ধীরে ধীরে হাঁটুটা মুড়ে যেতে থাকে। একটানা চিকিৎসায় এখন অনেক সুস্থ, তবে হাঁটাচলায় সমস্যাটা রয়ে গেছে। ডাক্তারবাবুর মতে পিয়ালির আই কিউ লেভেল ১০০ থেকে ১৫০। এককথায় ব্রিলিয়ান্ট।
আসলে এই হেল্পটাই একটু দরকার। করুণা নয়। একটা হাত। একটু স্নেহের স্পর্শ। একটু ভাল কথা। ঠিক যেমন আপনার তথাকথিত স্বাভাবিক বাচ্চাটির সঙ্গে আচরণ করেন। আসলে ওঁরা নয় পিয়ালি সোহম শান্তনুরাও ভালবাসতে পারে। ভালবাসা কাড়তেও পারে। কিভাবে কেমন করে দেখাবো আগামীকাল।