চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত অভিমুখে যাবার সময় ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার হয় শামীম হোসেন। ঘটনার তদন্তে নেমে ৭ জানুয়ারি পাতিরাম থানার পুলিশ পিন্টু মালিকের বাড়িতে চড়াও হয়। অভিযোগ সে ফেনসিডিল পাচার এর সঙ্গে যুক্ত। ওইদিনই তাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি চার্জশিট পেশ করে। চার্জশিটে পিন্টু মালিকে অভিযুক্ত দেখানো হয়। পিন্টু কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন জানায়। হাইকোর্টের নির্দেশে সোমবার আদালতে হাজির হন তদন্তকারী অফিসার অসীম কুমার ঘোষ।
advertisement
বিচারপতি দেবাংশু বসাক জানতে চান শামীম'এর বয়ানে বা সাক্ষীদের বয়ানেও পিন্টু মালির নামের উল্লেখ নেই। তাহলে কেন তাঁকে গ্রেফতার করা হল। কেন চার্জশিটে তাঁর নাম এল? সরকারি আইনজীবী সঞ্জয় বর্ধন আদালতের কাছে স্বীকার করেন এটা সম্পূর্ণভাবে তদন্তকারী অফিসারদের গাফিলতি। বিচারপতি দেবাংশু বসাকের মন্তব্য, একজন তদন্তকারী অফিসারের ভুলের জন্য এক নির্দোষকে ৩ মাস জেল খাটতে হবে!তদন্তকারী অফিসারকে বিচারপতির প্রশ্ন, ৩ মাস আগে ফেনসিডিল উদ্ধারের সময় অভিযুক্ত শামীমের পোশাক কী ছিল? তদন্তকারী অফিসার অসীম কুমার ঘোষ আদালতকে জানান, পরনে ট্রাউজার আর গেঞ্জি ছিল যার রং ছিল কালো-সাদা। বিচারপতি বসাকের ধমক তদন্তকারী অফিসারকে, ৩ মাস আগে কী রঙের জামা পড়েছিল অভিযুক্ত, সেটা মনে রাখতে পারলেন আর পিন্টু মালির নাম লেখার সময় আপনার ভুল হয়ে গেল! এটা কী করে সম্ভব। বিচারপতি দেবাংশু বসাকের মন্তব্য এমন তদন্তকারী অফিসারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। পাশাপাশি আবেদনকারীর ক্ষতিপূরণ তদন্তকারী অফিসারের পকেট থেকে নেওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: ভোটের আগেই এ কী মিলল আসানসোলে! বাড়ছে আশঙ্কা, কড়া নজর কমিশনের
আবেদনকারীর আইনজীবীর উদ্দেশ্যে আদালতের মন্তব্য, ''আপনি খবর নিন পিন্টু মালির সঙ্গে পুলিশের নিশ্চয়ই কোন আর্থিক লেনদেন রয়েছে। যেটা সহমত না হওয়ায় তার নাম জড়িয়ে দিয়েছে। মামলার মেরিটের বাইরে আপনি খবর নিয়ে পরবর্তী শুনানির দিন আদালতকে জানান, আবেদনকারীর সঙ্গে পুলিশের কোন অন্তর্নিহিত টাকার লেনদেন ছিল কিনা।''
আরও পড়ুন: জবাব দিলেন রাজনাথ, অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরির বেসরকারিকরণের পথেই মোদি সরকার!
আদালতের নির্দেশে পিন্টু মালি অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার ৮ এপ্রিলের মধ্যে চার্জশিট ও তদন্তকারী অফিসারদের বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপ নিয়ে একটি রিপোর্ট কলকাতা হাইকোর্টে পেশ করবেন। ওই রিপোর্ট দেখেই আদালত পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।