অমিত শাহকে পাঠানো চিঠিতে রবিবারের বিস্ফোরণের ঘটনা সম্পর্কে জানিয়ে সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন, ‘স্থানীয় মানুষজন জানিয়েছেন এদিনের বিস্ফোরণের ঘটনায় কমপক্ষে ছয় থেকে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে৷ কী ভাবে এই বিস্ফোরণ হল, এর পিছনে কী ধরনের অপরাধমূলক কাজকর্ম রয়েছে, তা নিশ্চিত ভাবে জানতে তদন্তের প্রয়োজন৷ এলাকাবাসীর দাবি, তাঁরা এই ধরনের অবৈধ কারখানা নিয়ে প্রশাসনকে বারবার জানালেও তারা কোনও ধরনের পদক্ষেপ করেনি৷’ এরপরেই এগরা, বারাসতের মতো বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে এনআইএ তদন্তের আর্জি জানান সুকান্ত৷
advertisement
আরও পড়ুন: ‘ওখানে লুকিয়ে বোমা তৈরি হতো’! বারাসত বিস্ফোরণস্থলে কী হত জানতে NIA তদন্ত দাবি বিজেপি-র
রবিবার সকাল ১০ টা নাগাদ ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে বারাসতের নীলগঞ্জ এলাকা৷ ভেঙে পড়ে ঘটনাস্থলে থাকা বড়ির ছাদও৷ স্থানীয় সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে উদ্ধার হয়েছে ১২ জনের দেহ৷ আহত বহু৷ ৩ মহিলা ও ৩ শিশু বারাসত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷ পাশের বাড়ির চিলেকোঠা থেকে পেয়ারা গাছের ডাল চতুর্দিকে ঝুলছিল ক্ষতবিক্ষত দেহ৷
লোকালয়ের মাঝে, ঘিঞ্জি এলাকায়, গৃহস্থ বাড়িতে, যেখানে তিন তিনটি পরিবারের বসত, সেখানে কী করে এভাবে বাজি তৈরি কারখানা চলছিল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন৷ বিস্ফোরণের পর পরই স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছিলেন, দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় এভাবে বাজি তৈরির কারখানা রমরমিয়ে চলে৷ পুলিশ-প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় নেতা-বিধায়ক সবই নাকি জানতেন, কিন্তু এগরা কাণ্ড থেকে শিক্ষা নিয়েও নাকি কোনও ব্যবস্থাই করা হয়নি৷
আরও পড়ুন: ‘বাজি নয়, বোমা তৈরি হতো’, বারাসত বিস্ফোরণে জল্পনায় আইএসএফ ‘যোগ’
গত মে মাসে পূর্ব মেদিনীপুরের ওড়িশা সীমানা সংলগ্ন এলাকা এগরার খাদিখুলের বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়৷ ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছিল৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে যে বিস্ফোরণ নিয়ে যথেষ্ট জলঘোলা হয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে৷ সেই ঘটনার পর পরই রাজ্যজুড়ে জেলায় জেলায় বেআইনি বাজি কারখানা নিয়ে অভিযান চালায় প্রশাসন৷ জানা গিয়েছে, সেই সময় গ্রেফতার হয়েছিল এই কেয়ামত৷ এরপরে ছাড়া পেয়ে সে বারাসতের নীলগঞ্জে কারখানা তৈরি করে৷
রবিবারের বিস্ফোরণের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত প্রাথমিক তদন্তে যতদূর জানা গিয়েছে, বারাসতের নীলগঞ্জে সামসুর আলি নামের এক ব্যক্তির বাড়ি ভাড়া নিয়ে এই অবৈধ বাজি কারখানা চালাত সেই কেয়ামত৷ মুর্শিদাবাদের কর্মীদের নিয়ে চলত এই কাজ৷ নিকটবর্তী বাঁশবাগানে বা অন্যত্র বাজি তৈরি করে তা মজুত করা হত সামসুরের বাড়িতে৷ এদিনের বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে কেয়ামতের৷ অন্যদিকে, সামসুর আলির ছেলে রবিউলকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়৷ মৃত্যুর সঙ্গে হাসপাতালে পাঞ্জা লড়ছে সামসুর৷
