কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট সিপি শঙ্খশুভ্র চক্রবর্তী জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত আধার বায়োমেট্রিক প্রতারণা কাণ্ডে কলকাতা পুলিশের কাছে ৬৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রতারণার ঘটনা মূলত প্রত্যন্ত এলাকায় ঘটেছে। তবে অন্যান্য রাজ্য থেকেও প্রতারণার ঘটনা সামনে আসছে৷
advertisement
পুলিশ সূত্রে খবর, গত জুন মাস থেকে প্রথম এই ধরনের ব্যাঙ্ক প্রতারণার রিপোর্ট আসতে শুরু করে। ইতিমধ্যেই, এর মধ্যে বেশ কিছু কেসের তদন্ত করছে পুলিশের ব্যাঙ্ক ফ্রড সেকশন৷ পুলিশ জানাচ্ছে, যে সমস্ত এলাকায় এটিএম পরিষেবা কম, সেখানে আধার ক্লোন করে এই ধরনের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশের সাইবার সেল যথেষ্ট তৎপর হয়ে কাজ করছে। এধরনের ঘটনা ঘটলে দ্রুত অভিযোগ জানান। আমাদের নজরে এলেই আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। আমরা মানুষকে যেমন সচেতন করছি, পাশাপাশি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি।’’
জমি-বাড়ি কেনাবেচার নথি থেকে শুরু করে মোবাইলের সিম কিনতে কিংবা বিয়ের রেজিস্ট্রি করতে এখন বাধ্যতমূলক ফিঙ্গারপ্রিন্ট। যার সুযোগ নিচ্ছে সাইবার দুষ্কৃতীরা। সার্ভার হ্যাক করে সরকারি নথিপত্র, আধার কার্ডে থাকা ফিঙ্গারপ্রিন্ট জালিয়াতি করে দেদার চলছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সাফাইয়ের কাজ। সম্প্রতি এই প্রতারণা চক্র শুরু করেছে রাজ্যের রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখকদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চুরি। সেই কারণে, জায়গা-জমি কেনাবেচার ক্ষেত্রে ফিঙ্গারপ্রিন্টের ব্যবহার বন্ধের দাবিও তুলেছে পশ্চিমবঙ্গ দলিল লেখক সমিতি।
পশ্চিমবঙ্গ দলিল লেখক সমিতির কাঁথি শাখার সম্পাদক তপন কুমার সামন্ত৷ তিনিও শিকার হয়েছেন এমন প্রতারণার। কয়েকদিন আগে কোনও ফোন কল কিংবা লিঙ্ক না পাঠিয়েই তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৩০ হাজার টাকা তুলে নেয় সাইবার প্রতারকরা।
তিনি বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশে আমরা দলিল লেখকেরা প্রতিটি দলিলের চিহ্নিতদার হিসেবে টিপ এবং স্বাক্ষর দুইই প্রদান করি। যা সরকারি দফতরে নথিভুক্ত থাকে। এখন সেই টিপ ছাপ অর্থাৎ ফিঙ্গারপ্রিন্ট আধার নম্বরের সাহায্যে কৌশলে ব্যবহার করে আমাদের টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে। আমরা এতে সর্বস্বান্ত হচ্ছি। ফলে আমরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। সে জন্য দলিলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহার রোধ-সহ ৩ দফা দাবি জানিয়েছি আমরা।’’