কয়েকদিন আগেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েছিলেন বাবুল৷ এর পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর বেশ কয়েকটি পোস্টে বাবুল রাজনীতি ছাড়ছেন বলে জল্পনা ছড়ায়৷ শেষ পর্যন্ত সেই জল্পনাই সত্যি হল৷
তবে এ দিন ফেসবুক পোস্টে বাবুল সুপ্রিয় যা বলেছেন, তাতে বিজেপি-র রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অস্বস্তি অনেকটাই বাড়বে৷ এ দিনের ফেসবুক পোস্টের শুরুতে বাবুল লিখেছেন, 'চললাম, আলবিদা! সবার সব কথা শুনলাম - বাবা, (মা) স্ত্রী, কন্যা, দুএকজন বন্ধুবান্ধব....সবটুকু শুনে বুঝেই অনুভব করেই বলি, অন্য কোন দলেও যাচ্ছি না৷ তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস, সিপিআইএম কোথাও নয়৷'
advertisement
দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টের ছত্রে ছত্রে বাবুলের হতাশা ঝরে পড়েছে৷ সরাসরি না বললেও যার তির দলীয় নেতৃত্বের দিকেই৷ কারণ বাবুল স্পষ্ট করে দিয়েছেন, মন্ত্রিত্ব হারানোর হতাশাই তাঁর এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার পিছনে বড় কারণ৷ ফেসবুক পোস্টে বাবুল লিখেছেন, 'কয়েকটা প্রশ্নের জবাব আমাকে দিয়ে যেতেই হবে! প্রশ্ন উঠবেই কেনই বা রাজনীতি ছাড়তে গেছিলাম? মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ার সঙ্গে তার কি কোনও সম্পর্ক আছে? হ্যাঁ আছে - কিছুটা তো নিশ্চয় আছে ! তঞ্চকতা করতে চাইনা তাই সে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে গেলেই তা সঠিক হবে-আমাকেও তা শান্তি দেবে | '
বাবুল অবশ্য দাবি করেছেন, গত কয়েকদিনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা তাঁকে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত করেছেন৷ তাই এবার আর সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে তাঁদের কাছে যাননি বাবুল৷
আসানসোলের সাংসদ রাখঢাক না করেই জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বেশ কিছু বিষয়ে তাঁর মতান্তর হয়েছিল৷ বাবুল লিখেছেন, 'ভোটের আগে থেকেই কিছু কিছু বিষয়ে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে মতান্তর হচ্ছিল - তা হতেই পারে কিন্তু তার মধ্যে কিছু বিষয় জনসমক্ষে চলে আসছিলো৷ তার জন্য কোথাও আমি দায়ী (একটি ফেসবুক পোস্ট করেছিলাম যা পার্টির শৃঙ্খলাভঙ্গের পর্যায়েই পড়ে) আবার কোথাও অন্য নেতারাও ভীষণভাবে দায়ী, যদিও কে কতটা দায়ী সে প্রসঙ্গে আমি আজ আর যেতে চাইনা - কিন্তু সিনিয়র নেতাদের মতানৈক্য ও কলহে পার্টির ক্ষতি তো হচ্ছিলই, 'গ্রাউন্ড জিরো'-তেও পার্টির কর্মীদের মনোবলকে যে তা কোনওভাবেই সাহায্য করছিল না তা বুঝতে 'রকেট বিজ্ঞান'-এর জ্ঞানের দরকার হয়না৷ এই মুহূর্তে তো তা একেবারেই অনভিপ্রেত তাই আসানসোলের মানুষকে অসীম কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানিয়ে আমিই সরে যাচ্ছি ৷' এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়েই বাবুল স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে সম্ভবত সাংসদ পদেও ইস্তফা দিয়েছেন৷ মন্ত্রী হিসেবে তিনি যে বাংলো পেয়েছিলেন তাও এক মাসের মধ্যে ছেড়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন বাবুল৷ পাশাপাশি বেতনও নেবেন না বলে দাবি করেছেন তিনি৷
শুধু তাই নয়, রাজ্যে নির্বাচনের আগে বিজেপি-র রণকৌশল নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বাবুল৷ কটাক্ষের সুরে বলেছেন, ২০১৪ সালে বিজেপি-র টিকিটে একমাত্র তিনি রাজ্য থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন (দার্জিলিং থেকে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থনে জিতেছিলেন সুরিন্দর সিং আহলুওয়ালিয়া৷) বাবুলের কথায়, দলে এখন অনেক তরুণ তুর্কি নেতা উঠে এসেছেন৷