আরও পড়ুন: ভারতের মাটিতে চালানোই যাবে না বুলেট ট্রেন, দাবি নুসরত- সুদীপের! মানতে নারাজ রেলমন্ত্রী
কী এই ব্রঙ্কিয়াল থার্মোপ্লাস্টি? গুরুতর হাঁপানির ক্ষেত্রে কার্যকরী চিকিৎসার জন্য এটি একটি ব্যথাহীন পদ্ধতি৷ এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে একটি ক্যাথেটার ব্যবহার করা হয়, সেটি উইন্ডপাইপের মাধ্যমে ঢুকিয়ে তাপ দেওয়া হয়। এই তাপ ফুসফুসের স্মুথ মাসলগুলিকে টার্গেট করে, যাতে সেই পেশিগুলি সঙ্কুচিত হয় এবং হাঁপানির উপসর্গগুলিকে আরও বাড়াবাড়ির পর্যায়ে যেতে না পারে। এই পদ্ধতির জন্য সাধারণত তিন সপ্তাহের ব্যবধানে তিনবার সিটিং-এর প্রয়োজন হয়।
advertisement
কলকাতার অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশ্যালিটি হাসপাতাল পূর্ব ভারতে প্রথমবার নিয়ে এসেছে ব্রঙ্কিয়াল থার্মোপ্লাস্টি প্রক্রিয়া। হাঁপানির সবচেয়ে কার্যকর নিরাময়। ১৪ মার্চ, ২০২২-এ কলকাতার অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশ্যালিটি হাসপাতালে দু'জন রোগীর উপর ব্রঙ্কিয়াল থার্মোপ্লাস্টি করা হয়েছিল। পদ্ধতির পরে রোগীরা স্থিতিশীল।
আরও পড়ুন: আইপিএস অফিসারের স্যুটকেসে এ কী! বিমানবন্দরে পরীক্ষা হতেই সবার চোখ কপালে
অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশ্যালিটি হাসপাতাল কলকাতার কনসালট্যান্ট পালমোনোলজিস্ট ডঃ দেবরাজ জশ দুই রোগীর ক্ষেত্রেই এই পদ্ধতি প্রয়োগ করেছিলেন। ফুসফুস বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেবরাজ যশ জানাচ্ছেন, '' ভারতে মোট জনসংখ্যার একটা বিরাট অংশ গুরুতর হাঁপানিতে ভুগছে ৷ ফলে ব্রঙ্কিয়াল থার্মোপ্লাস্টি নন-অ্যালার্জিক হাঁপানির ক্ষেত্রে একটি কার্যকর চিকিৎসা। পূর্ব ভারতে এই পদ্ধতি চালু করা সত্যিই একটি চ্যালেঞ্জ ছিল।''
ডক্টর দেবরাজ যশ আরও বলছেন," বিশ্বে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মানুষ হাঁপানিতে ভুগছেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৫-১০% মানুষ এই রোগের তীব্রতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হন। যদি ২-৩ মাস ধরে সঠিক ওষুধ এবং পদ্ধতিতে ইনহেলার ব্যবহার করার পরও এই ধরনের রোগীদের সমস্যা থেকে যায়, তা হলে তাদের পালমোনারি ফাংশন টেস্ট করাতে হবে। যদি আইজিই বা ইওসিনোফিল ফলাফলে কম থাকে, তবেই তারা এই চিকিৎসার জন্য ভাবতে পারেন। আশি শতাংশ ক্ষেত্রে ব্রঙ্কিয়াল থার্মোপ্লাস্টি প্রয়োগ করার পর রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। তবে যাঁদের অ্যালার্জি রয়েছে,তাঁদের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাবে না। সম্পূর্ণ ব্যথাহীন ভাবে মাত্র ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা লাগে প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে।"
আরও পড়ুন: তিন গোখরোর সামনে কেরামতি যুবকের, পরিণতি হল মারাত্মক! দেখুন ভিডিও
কলকাতার অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশ্যালিটি হসপিটালের কনসালট্যান্ট পালমোনোলজিস্ট ডঃ সুশীল আগরওয়াল বলেছেন, “ব্রঙ্কিয়াল থার্মোপ্লাস্টি আন্তর্জাতিক স্তরে গুরুতর হাঁপানি রোগীদের জন্য একটি বিশাল প্রাণদায়ী চিকিৎসা। আমরা আশা করছি এটি এখানেও সমান কার্যকরী হবে। ব্রঙ্কিয়াল থার্মোপ্লাস্টির পরে রোগীরা স্বস্তি পায় এবং নিয়মিত হাঁপানির আক্রমণ রোখা যায়। ফলে ধীরে ধীরে তাঁরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন।"
এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতির সূচনা উপলক্ষে শ্রী রানা দাশগুপ্ত, (সিইও-ইস্টার্ন রিজিয়ন, অ্যাপোলো হসপিটাল গ্রুপ) বলেছেন, “কলকাতার অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশ্যালিটি হাসপাতাল নতুন প্রযুক্তি আনার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নেয় বরাবর ৷ এমনকী নতুন চিকিৎসা পদ্ধতির ক্ষেত্রেও আমরা আগ্রগামী। আমাদের চিকিৎসকার ভাল চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে অনেক হাঁপানি রোগীদের সমস্যার সমাধান হবে।" যদিও এই ব্রঙ্কিয়াল থার্মোপ্লাস্টির বর্তমান খরচ যথেষ্টই বেশি। প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা খরচ পড়ে। যদিও চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, যত এটার প্রয়োগ বাড়বে,ততই খরচ কমবে।