কিন্তু রাজ্যে এসে বঙ্গ বিজেপি নেতাদের সেই আশাতেই জল ঢেলে দিলেন খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷ ব্যস্ত সূচির মধ্যেই এ দিন কলকাতার মিনিট কুড়ির জন্য বঙ্গ বিজেপি-র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন শাহ৷ সেখানেই রাজ্যে ৩৫৫ বা ৩৫৬ ধারা লাগু করার দাবি নস্যাৎ করে দেন তিনি৷ বরং বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সন্ত্রাসের মোকাবিলা করেই ক্ষমতা দখল করেছেন, এ দিন রাজ্য সেই উদাহরণই দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷
advertisement
আরও পড়ুন: কাশীপুরে মৃত বিজেপি কর্মীর ময়নাতদন্ত হবে কম্যান্ড হাসপাতালে, নির্দেশ হাইকোর্টের
সূত্রের খবর, রাজ্য জুড়ে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস যে বিজেপি কর্মীদের উপরে আক্রমণ চালাচ্ছে, তা মেনে নিয়েছেন শাহ৷ কিন্তু সেই অজুহাতে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকারকে ভেঙে দেবে না, তাও রাজ্য নেতাদের বলে দিয়েছেন তিনি৷ জানা গিয়েছে, রাজ্য নেতাদের অমিত শাহ বুঝিয়ে দিয়েছেন, মাত্র এক বছর আগে বিপুল জনমত নিয়ে যে সরকার গঠন হয়েছে, তাকে এ ভাবে ফেলে দেওয়া যায় না৷ বিজেপি এই ভাবে যে ক্ষমতা দখলে বিশ্বাস করে না, তাও রাজ্য নেতাদের বুঝিয়ে দিয়েছেন শাহ৷
আরও পড়ুন: রণক্ষেত্র কাশীপুর, অতীন ঘোষের দাবিতে ফুঁসে উঠল বিজেপি! দ্বারস্থ হাই কোর্টের
অমিত শাহ বরং রাজ্য নেতাদের পরামর্শ দিয়েছেন, বিজেপি এ রাজ্যে ক্ষমতা ঠিক দখল করবে, কিন্তু তা গণতান্ত্রিক উপায়ে৷ তার জন্য রাজনৈতিক ভাবে কী করে তৃণমূলকে কোণঠাসা করা যায়, রাজ্য নেতাদের সেই চেষ্টা করারই বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ সেই লড়াইয়ে যে কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশে আছে, সেই আশ্বাসও মিলেছে শাহের তরফে৷
একই সঙ্গে অবশ্য এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদাহরণ দিয়ে দলের রাজ্য নেতাদের তাতিয়েছেন শাহ৷ তিনি বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বাম আমলের সন্ত্রাসের সঙ্গে প্রায় একা মোকাবিলা করেছেন৷ মমতা তো একা ছিলেন, তাহলে আমরা পারব না কেন?' এর পাশাপাশি অবশ্য অমিত শাহ এই অভিযোগও করেন, যে সন্ত্রাসের মোকাবিলা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় এসেছিলেন, এখন সেই সন্ত্রাসেরই আশ্রয় নিয়েছেন তিনি৷ ভবিষ্যতে বিজেপি এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসলে যাতে তাদের মধ্যেও এই পরিবর্তন না দেখা যায়, সে বিষয়েও সতর্ক করে দিয়েছেন অমিত শাহ৷
দলের শীর্ষ নেতার এই পরামর্শে রাজ্য বিজেপি নেতারা কতটা উদ্বু্দ্ধ হন, তা নিয়ে সংশয় থাকছেই৷ কারণ বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই শাসক দলের বিরুদ্ধে হিংসার অভিযোগে সরব হয়েছেন তারা৷ আদালতেও একের পর এক মামলা করেছেন৷ কিন্তু বিজেিপ নেতাদের এই অভিযোগ বা আইনি দৌড়ঝাঁপের সুফল ভোট বাক্সে মেলেনি৷ ফলে অমিত শাহ মার খেয়ে তৃণমূলের সঙ্গে যুঝে যাওয়ার যে পরামর্শ দিয়ে গেলেন, তা দলের রাজ্য নেতাদের কতটা মনঃপুত হবে, সেটাই দেখার৷