চিঠিতে মমতা লিখেছেন, 'মাত্র দিনকয়েক আগেই মুখ্যসচিবের মেয়াদ বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ৩১ মে মুখ্যসচিবের চাকরি জীবনের শেষ দিন হলেও আমাদের অনুরোধে তাঁর তিন মাস চাকরি জীবন বৃদ্ধির অনুমোদন দিয়েছে ভারত সরকার। কোভিড পরস্থিতির কারণেই এই আবেদন ছিল আমাদের তরফে। কিন্তু এমন কী হল যে, তাঁকে ডেকে নেওয়া হচ্ছে!' পাঁচ পাতার ওই চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী আরও লেখেন, 'বাংলার মানুষের জন্য এখন কঠিন সময়। তাই মানুষের কথা ভেবে এই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নিন।' মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, 'এই নির্দেশ বেআইনি, অসাংবিধানিক। রাজ্যে এই মুহূর্তে মুখ্যসচিবের উপস্থিতি প্রয়োজন।'
advertisement
কলাইকুন্ডার বৈঠকের প্রসঙ্গও এদিনের চিঠিতে উল্লেখ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লিখেছেন, 'আমি আশা করছি, কেন্দ্রের এই নির্দেশের সঙ্গে আমার সঙ্গে আপনার কলাইকুন্ডার বৈঠকের কোনও যোগ নেই। যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে বলতে হবে এতে মানুষের জনস্বার্থ বিঘ্নিত হচ্ছে।' মমতার সংযোজন, 'আমাদের অনুরোধে মেয়াদ বাড়ানোর পরও রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনা ছাড়াই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল কেন? এটা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত এবং এর ফলে দেশজুড়ে সমস্ত আইএএস অফিসারদের কাজে প্রভাব পড়বে।'
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকারের সঙ্গে পরামর্শ না করেই এ রকম নির্দেশ দেওয়া কতটা ‘আইনি’ সে প্রশ্নও তুলেছেন প্রাক্তন আমলাদের একটা বড় অংশ। বারবার অভিযোগ করলেও আলাপন ইস্যুতে চূড়ান্ত সংঘাতের পথে না হেঁটে প্রধানমন্ত্রীর কাছে করজোড়ে নির্দেশ প্রত্যাহারের আবেদন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠি দেওয়ার কথাও বলেছিলেন তিনি। সেই চিঠি অবশেষে সোমবার দিলেন তিনি। যদিও রাজনৈতিকভাবে আক্রমণ শানাতেও ছাড়ছেন না তিনি। বলেন, 'মুখ্যসচিব বাঙালি বলেই কি এত রাগ? আমাকে, মুখ্যসচিবকে এবং রাজ্য সরকারকে অপমান করা হচ্ছে। হার মেনে নিতে পারছেন না বলে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছেন। প্রাইম মিনিস্টার স্যার, আপনার দুটো পা ধরলে যদি আপনি খুশি হন, আমি বাংলার জন্য তা-ও করতে পারি। কিন্তু এই চিঠি আপনারা ফিরিয়ে নিন।'
সোমবারের চিঠিতে অবশ্য এতটাও আগ্রাসী হননি মুখ্যমন্ত্রী। বরং আবেদনের সুরই বজায় রেখেছেন তিনি। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর আর্জিতে এখনও সাড়া দেয়নি কেন্দ্র। অবশ্য আলাপনও দিল্লি যাচ্ছেন না বলেই খবর। সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর।