নবান্নের তরফে বিভিন্ন জেলায় জেলায় গাইডলাইনও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে গ্রামীণ রাস্তার নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য। ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই রাজ্যজুড়ে ৯ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ শেষ করতে চায় রাজ্য।
আরও পড়ুন: একসঙ্গে পদত্যাগ করলেন গুজরাতের সমস্ত মন্ত্রী! মোদির রাজ্যে এ কী ঘটনা! কোনও বড় প্ল্যানের ইঙ্গিত?
advertisement
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার জানিয়েছেন “কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি টাকা অনুমোদন করেছেন। গ্রামের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও ব্যবসায়িক দিক থেকে এতে সুবিধা হবে মানুষের। ৯ হাজার কিলোমিটারের মতো রাস্তা আমরা নতুন করে নির্মাণ ও সংস্কার করব।”
পাশাপাশি গ্রামীণ রাস্তা সংস্কারে ‘পথশ্রী’ প্রকল্পে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর বর্জ্য প্লাস্টিক সহ বিটুমিনাসের ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে নবান্ন। যে সব এলাকায় নরম মাটি সেখানে সাবগ্রেডে পাট জিওটেক্সটাইল ব্যবহার করে রাস্তা সংস্কার চায়। প্রতিটি জেলায় ‘পথশ্রী’ প্রকল্পে অন্তত ২০ থেকে ২৫ শতাংশ গ্রামীণ রাস্তা সংস্কারে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। স্টিল প্ল্যান্টের কাছাকাছি গ্রামীণ এলাকার রাস্তাগুলি ব্লাস্ট ফার্নেস স্ল্যাগ,স্টিল স্ল্যাগ রাস্তার ওপর প্রথমে ব্যবহার করতে হবে।
তারপর বিটুমিনাস বা জিওটেক্সটাইল বা সিমেন্ট ব্যবহার করতে হবে। অর্থাৎ রাজ্য সরকার এবার দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাস্তা সংস্কারে আধুনিক প্রযুক্তি হিসেবে বর্জ্য ব্যবহার করতে চায়। ইউক্যালিপটাস বুল্লা পাইলিং, বাঁশের পাইলিং এবং হিউম পাইপ কালভার্ট সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব নির্মাণ চায়।
এই প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ, রাজ্য গ্রামীণ উন্নয়নম সংস্থা এবং ম্যাকিনটোশ বার্ন লিমিটেড ও ওয়েস্ট বেঙ্গল এগ্রো-ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন লিমিটেড -এর মতো সরকারি সংস্থাগুলি এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোন রাস্তা এই ধরনের পরিবাশ বান্ধব বর্জ্য ব্যবহার করা হবে তার একটি তালিকা পঞ্চায়েত ও গ্রামান্নোয়ন সদর দফতরে আগে জমা দিতে হবে।
রাজ্যে প্রায় ২,৫৫,৪৮৫ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক রয়েছে। গ্রামীণ সড়ক নেটওয়ার্ককে আরও শক্তিশালী করার জন্য, পথশ্রী প্রকল্পটি বিভিন্ন ধাপে চালু করা হয়েছিল। পথশ্রী প্রকল্পের হাত ধরে ২০২৩ সালে ১২ হাজার ৭১ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ ও মেরামতি হয়েছিল। ২০২৪ সালে ১২ হাজার ১২৮ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার হয়েছিল এই প্রকল্পে। যা গ্রামীণ রাস্তায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে।
প্রতিটি রাস্তা সংস্কার বা নির্মাণের জন্য নজরদারিও কড়াকড়ি করেছে রাজ্য। প্রতিটি রাস্তা সংস্কার বা নির্মাণের জন্য জিও-ট্যাগিং, ফটোগ্রাফি এবং ডকুমেন্টেশন করতে পঞ্চায়েত দফতরের তৈরি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে। রাস্তাগুলি নির্মাণের আগে, নির্মাণ চলাকালীন এবং সমাপ্তির পরে তারিখ এবং স্থানের ছবি তুলতে হবে। ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য তিন বছর পর রাস্তার কী অবস্থা জিও-ট্যাগ করা ফটোগুলির রেকর্ড হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে।
সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়