গরু,বাছুর,ছাগলকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয় এই সময়। অভিযোগ, প্রাণীবন্ধুরা সেই ভ্যাকসিন দেওয়ার সময়ই সূঁচ ফুটে যায় প্রাণীবন্ধুদের হাতে। তার জেরেই এই ভয়ানক বিপদ বলে অভিযোগ উঠেছে।
পশুরোগ বিশেষজ্ঞদের কথায়, এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গ হল গাঁটের ব্যথা, জ্বর, শিরদাঁড়ায় যন্ত্রণা, পিঠে ব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা। তবে ব্রুসেলোসিস শরীরে দানা বাঁধলে ধীরে ধীরে অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিকল হতে শুরু করে অর্থাৎ মাল্টি অর্গান ফেলিওর হতে পারে। এমনকী এর জেরে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। ব্রুসেলোসিস এ দেশে সচরাচর দেখা যায় না, অত্যন্ত বিরল। মূলত গবাদি পশুর দেহ থেকে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ মানুষের দেহে সংক্রমিত হলেই এই রোগের সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ কোনও গবাদি পশুর শরীরে ভাইরাসটি থাকলে, কোনও ব্যক্তি যদি তার সংস্পর্শে আসে, তা হলেই সেই ব্যক্তির ব্রুসেলোসিস হতে পারে। প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতরের পাঁচজন কর্মী এখনও অবধি এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে আরও চারজনের শরীরেও এই ভাইরাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে বলেও দাবি করেছে পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী সম্পদ বিকাশ কর্মী ইউনিয়নের সম্পাদক আহমেদ আলি।
advertisement
আরও পড়ুন: দেশের অর্থনীতিকে বদলে দেবে গোবর-গোমূত্র! ফের গরু নিয়ে আসরে MP-র মুখ্যমন্ত্রী
পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী সম্পদ বিকাশ কর্মী ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী সভাপতি সৌমিত্র মণ্ডল জানান,' আমরা অত্যন্ত খারাপ অবস্থার মধ্যে এই কাজ করে থাকি। প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরকে বারবার করে জানালেও পাশে দাঁড়ানো দুর অস্ত, উল্টে আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়। নদিয়া,পূর্ব বর্ধমান, বীরভূমে প্রাণী বন্ধু এবং প্রাণী সেবীরা ভর্তি রয়েছে। এছাড়াও অনেক প্রাণী বন্ধুর এই রোগের উপসর্গ রয়েছে। আমরা শতাধিক মানুষ এসেছিলাম স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পরীক্ষা করার জন্য। অল্প কয়েকজনের পরীক্ষা করা হয়েছে। ফলে প্রত্যেকেই আমরা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি।''
আরও পড়ুন: ক্ষমতা অক্ষত রাখতে গোয়া সরকারের এক প্রকল্প, তৃণমূলের হাতে উঠে এল 'বড় অস্ত্র'
শরীরে সূঁচ ফোটানোর সময় যে কোন গবাদি পশু ছট্ফট্ করে, পা ছোঁড়ে। সেই সময় শরীরে সুঁচ ফুটে যায়। এখন এই বিরল রোগে আক্রান্ত অনেকেই। অভিযোগ, কোন পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ছাড়াই এই কাজ করতে পাঠানো হয়েছিল প্রাণীবন্ধুদের। তাঁদের সুরক্ষার জন্যও কোন রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ। যে সমস্ত গ্লাভস দেওয়া হয়েছিল সেগুলি ছিল অত্যন্ত খারাপ মানের। যারা এই সমস্ত কাজে অংশ নিয়েছিলেন, প্রত্যেকেই এখন চূড়ান্ত আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। প্রত্যেকেই সরকারের কাছে পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানিয়েছেন। কলকাতা স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে দাঁড়িয়ে আক্ষেপ করছিলেন বীরভূম থেকে আসা সন্ধ্যারানী বসাক। শুক্রবার সকাল থেকেই শতাধিক প্রাণিসম্পদ বিকাশদপ্তরের প্রাণী বন্ধু, প্রাণী সাথী নামের অস্থায়ী কর্মীরা পরীক্ষা করার জন্য ভিড় জমান। যদিও বেশির ভাগকেই শেষপর্যন্ত হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। মনের মধ্যে আতঙ্ক সবার, এরপরে কারা এই বিরল রোগের শিকার হবে? যদিও এই বিষয়ে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতর থেকে কোন রকম প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।