বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে এই বিষয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে টানা ১৫দিন বন্ধ থাকবে বিমানবন্দর। বর্তমানে বিমান চলাচলের উপরেও নির্দিষ্ট সময় বেধে দেওয়া হয়েছে। বাগডোগরা বিমানবন্দরের তরফে এব্যাপারে নির্দেশিকা মারফত জানা গিয়েছে। বাগডোগরা বিমানবন্দর সূত্রে খবর, বিমানবন্দরের রানওয়ে সংস্কারের কাজ চলছে। ১১ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত রানওয়েতে কাজ চলবে। ফলে সেই কয়েকদিন রানওয়ে সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। ২৬ এপ্রিল রানওয়ে খোলা হবে। তবে ২৬ এপ্রিল রানওয়ে চালু হলেও পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি না আসা পর্যন্ত সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিমান ওঠা-নামা করবে। এই বিষয়টি ইতিমধ্যেই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে দার্জিলিং জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
advertisement
বিমানবন্দর সূত্রেই জানা গিয়েছে, বাগডোগরা বিমানবন্দরে রানওয়ে (runway) সংস্কারের ব্যাপারে ভারতীয় বিমান বাহিনী (IAF)-রএকজন পদস্থ আধিকারিক, এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (AAI)-র নির্বাহী পরিচালককে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। সেই অনুযায়ী আগামী ১১ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল বাগডোগরা বিমানবন্দরে বিমান পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাগডোগরা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
এদিকে এই নির্দেশে যেন কালো মেঘের ছায়া এসে নেমেছে পর্যটন মহলে। বিমানবন্দরের এই সিদ্ধান্ত জরুরী হলেও খানিকটা মুখভার পর্যটন ব্যবসায়ীদের। একেই কোভিডের কড়াকড়ি, তার উপর বিমানবন্দরে তালা। কিছুটা হলেও মন খারাপ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। বিভিন্ন পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী এবং সংগঠনের তরফে এনিয়ে এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (AAI)-কে একটি স্মারকলিপি দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। পর্যটন সংগঠনের বিভিন্ন সদস্যদের দাবি, 'পশ্চিমবঙ্গের এই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর, রাজ্য এবং আমাদের অন্যান্য প্রতিবেশী রাজ্য বিহারের অংশের সঙ্গেও একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ বিন্দু হিসাবে কাজ করে। এই সিদ্ধান্ত সাধারণ নাগরিকদের জীবনে তো বটেই, প্রভাব ফেলবে ব্যবসা, শিক্ষা এবং সর্বোপরি চিকিৎসার উদ্দেশ্যে আগতদের উপর।'
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম নেটওয়ার্কের (Himalayan Hospitality and Tourism Network) সাধারণ সম্পাদক (general secretary) সম্রাট সান্যাল নিউজ ১৮ লোকালকে বলেন, 'কোভিডের কারণে বহুদিন বিমান ওঠানামা বন্ধ ছিল। সেই সময়ে এই সংস্কারের কাজ করলেই হত। এতদিন করা হয়নি। যখন সিকিম এবং পাহাড়ে পর্যটকদের আসার মূল সময় (peak time) তখনই কেন এই কাজটা করা হল? এর বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আমরা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে নিজেদের দাবি পেশ করতে চাই।'
সম্রাটবাবু আরও বলেন, 'আমরা আবারও আমাদের অনুরোধ জানিয়েছি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এবং পুনরুদ্ধারের কাজ চালানোর পরামর্শ দেওয়ার জন্য এয়ার ট্রাফিক চলাচল চালু রাখতে। আমরা আশা করি আমাদের অনুরোধটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। স্থানীয় স্টেক হোল্ডার (stakeholder) এবং এখানে বসবাসকারী নাগরিক হিসাবে আমরা আশা করি আমাদের কথাটি মান্যতা দিয়ে দেখা হবে।'
সংগঠনের মতে, দুশ্চিন্তার সবচেয়ে বড় অংশ হল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর কীভাবে অসংখ্য নাগরিক এবং স্থানীয় স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা না করেই পরিষেবা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়? সম্রাটবাবু বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, 'এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার হিসাবে এটি সত্যিই হতাশাজনক যে আপনাদের কাছে সময় নেই আমাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করার। আমরা চাই এই স্মারকলিপি আমরা জমা দিই সামনাসামনি।'
Vaskar Chakraborty