আগের দিনে শীতকালে নতুন ফসল ওঠার পর ঢেঁকিতে ধান ভাঙা হত।এখন সময়ের তালে তাল মিলিয়ে উন্নত যন্ত্রে ধান ভেঙে চালের গুঁড়ো বের করা হয়। আধুনিক যুগে উন্নত যন্ত্রের দৌলতে ঢেঁকি বিদায় নিয়েছে ৷কারণ এই মেশিনে কম সময়ে পাওয়া যায় অধিক পরিমাণের চালের গুঁড়ো। যোগানও দেওয়া যায় সহজেই। কিন্তু জলপাইগুড়ির পোড়া পাড়া এলাকায় আজও বেঁচে রয়েছে ঢেঁকিতে ভাঙা চালের গুঁড়োর অস্তিত্ব। মেশিনে তৈরি করা শহুরে চালের গুঁড়োকে তোয়াক্কা না করে সনাতন পদ্ধতিতে বানানো ঢেঁকির চালের গুড়োকেই প্রাধান্য দিচ্ছে গ্রামেগঞ্জের মানুষ।
advertisement
জলপাইগুড়ি জেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের পোড়া পাড়া এলাকার মানুষ ব্যস্ত হয়ে পড়েছে চালের গুঁড়ো করতে। সামনেই পৌষ পার্বণ, সেই কারণেই শহর জলপাইগুড়ির বাজারে নতুন চালের গুঁড়ো বিক্রি করতে আসেন সেই এলাকার মানুষজন। শহর জলপাইগুড়িতে ঢেঁকিতে পেষা এই ধরনের চালের গুঁড়োর চাহিদা প্রচুর। তার একটা কারণ স্বাদের তারতম্য তো বটেই। নতুন ধান উঠলে সেই ধান দিয়েই তৈরি হয় এই চাল গুঁড়ো। মেশিনে পেষা চালের গুঁড়ো থেকে ঢেঁকিতে পেশা চালের গুঁড়োর পিঠের স্বাদ আলাদাই। জলপাইগুড়ির বাজারে এই চালের গুঁড়ো বিক্রি হয় প্রতি কেজি ৬০ টাকা করে।
আরও পড়ুন : গত ১৫০০ দিন ধরে অন্নহীন অগণিত ভবঘুরেদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে যুবকের ফুড ব্যাঙ্ক
এখন এই চালের গুঁড়ো কিনতে ব্যস্ত জলপাইগুড়িবাসী । কারণ বর্তমান যুগের মেশিনের চালের পিঠের তেমন স্বাদ হয় না। এক চালের গুঁড়ো বিক্রেতা জানান, " প্রতি বছরই পৌষ পার্বণের আগে আমরা সকলে জলপাইগুড়িতে ঢেঁকিতে ছাটা চালের গুঁড়ো এবং ছামগাইনের পেশা চালের গুঁড়ো বিক্রি করতে, আসি শহর জলপাইগুড়ির বাজারে। এই ধরনের চালের গুড়োর চাহিদা রয়েছে শহর জলপাইগুড়ির বাজারে। প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়। আয়ও ভালো হয়। "
আরও পড়ুন : একই পদক্ষেপে ইটের যোগান ও রাজস্ব বৃদ্ধি, অভিনব সিদ্ধান্ত প্রশাসনের
এক ক্রেতা জানান, " মেশিনের চালের গুড়োর তেমন কোনও স্বাদ হয় না পিঠেতে। পিঠে করতে গেলে ভেঙ্গে যায়। বিভিন্ন রকম পাটিসাপটা বা মালপোয়া ফেটে ফেটে যায়,পোড়া লেগে যায়। অর্গানিক চাল গুঁড়োয় পিঠে তৈরি করতে সুবিধা হয়। খেতেও বেশ ভালো হয়। তাই প্রতি বছর ঢেঁকি ছাটা চালের গুঁড়ো কেনার জন্য অপেক্ষা করে থাকি।তাই বলাই বাহুল্য, শীতের সময় পিঠেপুলির সঙ্গে ঢেঁকির গুরুত্বও কয়েকগুণ বেড়ে যায়।"