আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সংযোগ ছাড়াই বাড়িতে চলছে ফ্রিজ-টিভি! অন্যরকম ভাল দিন কাটাচ্ছে মদনপুরের এই পরিবার
বর্তমানে অতীতের সেই সব আবছা স্মৃতি খেলা করে যায় প্রবীণ বাসিন্দা হারাধনবাবুর চোখে। অতীতের স্মৃতির পাতা উল্টে তিনি এক নিঃশ্বাসে আউড়াতে থাকেন সেই সুদিনের কথা। সেই সময়ে এলাকায় ছিল একটি জংশন স্টেশন, কয়লার ইঞ্জিনের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ত গোটা আকাশ বাতাস। স্টেশনের পাশেই পল হোয়েল স্কুল, আরেক দিকে ব্রিটিশ রেল সাহেবদের বাংলো। সেদিকে অবশ্য দেশীয় মানুষের প্রবেশ ছিল নিষিদ্ধ। কিন্তু এরপরই এল সেই অভিশপ্ত ১৯৬৮ সালের ৪ অক্টোবরের কালো রাত। বাঁধ ভেঙে তিস্তা ছুটে গেলো দোমোহনির জনপদের ওপর দিয়ে। প্রবল স্রোতে হারিয়ে গেলো কত আপনজন। সেই থেকেই তিলে তিলে শেষ হয়ে গেলো জংশন স্টেশন দোমোহনির প্রাণের স্পন্দন। এখন এসব শুধুই ইতিহাস হয়ে উঁকি দেয় মনের কোনায়।
advertisement
তবে সম্প্রতি জলপাইগুড়ি লোকসভার সাংসদ জয়ন্ত কুমার রায়ের দোমোহনি প্রসঙ্গে কিছু বক্তব্য থেকে তিস্তার অভিশাপ থেকে মুক্তির আশা করছেন এলাকার বাসিন্দারা। সম্প্রতি সাংসদ এই প্রাচীন লোকালয়ের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বলতে গিয়ে জানান, এর আগেও ভারত সরকার এই দোমোহনিতে ফাঁকা পড়ে থাকা রেলের প্রায় দুশো একর জমিকে কাজে লাগাতে এইমসের পরিকল্পনা নিয়েছিল। তবে নানান প্রতিবন্ধকতার কারণে সেই প্রকল্প গড়ে ওঠেনি। এই মুহূর্তে সব কিছু প্রকাশ্যে বলতে না চাইলেও সাংসদ জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, রেলের পড়ে থাকা ১১৬ একর জমিতে শীঘ্রই কিছু প্রকল্পের কাজ শুরু হবে, যাতে বদলে যাবে দোমোহনির বর্তমান চিত্র।
এই প্রসঙ্গে দোমোহনির ভূমিপুত্র প্রদীপ সেনশর্মা এখানকার অতীত এবং বর্তমান অবস্থার কথা বলতে গিয়ে জানান, এই জায়গা কী ছিল সে ইতিহাস বহু লেখকের বইয়ের পাতায় আজও পাওয়া যায়। এখনও রেলের প্রচুর ফাঁকা জমি পড়ে আছে। আমরা আগেও চেয়েছি আজও মনে প্রাণে চাইছি রেলের এই বিশাল জমিকে ব্যাবহার করে সরকার উদ্যোগী হোক কোনও প্রকল্প গড়ে তুলুক। সেক্ষেত্রে আমাদেরও যদি কিছুটা আত্মত্যাগ করতে হয় দোমোহনির উন্নয়নের স্বার্থে তাতে পিছপা হব না।
সুরজিৎ দে