বহু জায়গা থেকে বহু সম্মান মিলেছে। সঙ্গীত তাঁর জীবনের সঙ্গী। যতদিন তিনি বেঁচে থাকবেন, ততদিন সঙ্গীতেই বাঁচবেন, এমনটাই জানান ১০২ বছরের শিল্পী। উত্তরবঙ্গের ৫০০ বছরের প্রাচীন বাদ্যযন্ত্র সারিন্দা বাজান এই শিল্পী। সারিন্দা বাদক হিসেবে অনেকে নামডাক তাঁর। ২০১৭ সালে মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে বঙ্গরত্ন পাওয়ার পর বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হত সারিন্দা বাজানোর জন্য। কিন্তু লকডাউনের সময় সরকারি অনুষ্ঠান বন্ধ ছিল। সরকারি অনুষ্ঠান করতে পারলেই মিলত এক হাজার টাকা।
advertisement
আরও পড়ুন: অস্কার মনোনয়নের পর পদ্মশ্রী! আরআরআর-এর 'নাটু নাটু' স্রষ্টাকে এবার জাতীয় সম্মান
কিন্তু এখন গলা আর সঙ্গ দেয় না। বার্ধক্য জড়িত কারণে কানেও শুনতে পান না তিনি। ফলে ডাকও পান না তেমন ভাবে। ফলে শিল্পীর দিন গুজরান করা দায় হয়ে গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের শিল্পী ধুমাকান্ত রায়ের কাছ থেকে তিনি সারিন্দা বাজানো শেখেন। প্রথম তাঁর কাছ থেকেই সারিন্দা কেনেন। সারিন্দা দিয়ে তিনি মুরগীর ডাক হুবহু নকল এবং বিভিন্ন পাখির ডাক করতে পারেন।
আরও পড়ুন: সম্মানিত পদ্মশ্রীতে, বাপ-মা হারা প্রীতিকণার কাঁথার কাজের চর্চা বিদেশেও, লড়াই শুরু ছোট থেকেই
পদ্মশ্রী পাচ্ছেন শুনে বড়ই খুশি তিনি। মঙ্গলা কান্তির কথায়, ''অসুখ বিসুখ ছাড়া দিন পার হতে পারলেই আমি খুশি।'' তিন ছেলে, চার মেয়ের বাবা পাঁচ বছর বয়স থেকেই সারিন্দা বাজানো শিখছেন। পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত মঙ্গলা কান্তি নিউজ18 বাংলাকে জানান, ''আরও অনেক পুরস্কার পেয়েছি রাজ্যের সরকার কাছ থেকে। তবে এত বড় পুরস্কার পাব, কখনও ভেবে উঠতে পারিনি। ধন্যবাদ জানাই সরকারকে আমার মতো প্রত্যন্ত এলাকার সঙ্গীত জগতের মানুষকে পদ্মশ্রী পুরস্কার দেওয়ার জন্য।''
ছেলে নিমাই রায় বাবার এই সাফল্যে গর্বিত। তাঁর কথায়, ''আমরা চাষাবাদ করে জীবিকা অর্জন করি। বাবা সারাক্ষণ গান-বাজনা নিয়ে মেতে থাকেন। খুব ভাল লাগছে তাঁর এই পুরস্কার অর্জনের পর।''
ময়নাগুড়ি ব্লকের বিডিও শুভ্রা নন্দী টেলিফোনের মাধ্যমে জানান এটা অত্যন্ত খুশির খবর ময়নাগুড়িবাসীর জন্য তথা জলপাইগুড়িবাসীর কাছে। সেই এলাকায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে শুভেচ্ছা জানাবেন বলে জানান তিনি।
সুরজিৎ দে