এশিয়ার অন্যতম সেরা শহর হংকং এখন এমনই ঝড় বৃষ্টির দাপটে অস্থির। গত ১০০ বছরে এমন ধ্বংসের দৃশ্য দেখা যায়নি। বলা হচ্ছে, ১৪০ বছর পর হংকংয়ে এমন বৃষ্টি হয়েছে।
কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ১৫৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মাত্র ২৪ ঘণ্টায় হংকংয়ে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে।
এই শহরের বহু মেট্রো স্টেশন সম্পূর্ণ জলের তলায়। ১৮৮৪ সালে এমন বৃষ্টি হয়েছিল সেদেশে। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু করে মাঝরাত পর্যন্ত ১৫৮.১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে হংকংয়ে। প্রশাসন বন্যার সতর্কতা জারি করেছে।
advertisement
প্রবল বর্ষণের মধ্যে ভূমিধসের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। হংকংয়ের কোনও কোনও এলাকায় ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৬০০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। শেয়ারবাজার হ্যাং সেং-ও বন্ধ। হংকংয়ের মুখ্য সচিব এরিক চ্যানের মতে, এখনও পর্যন্ত ১১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ লক্ষ লক্ষ স্কুল-কলেজ পড়ুয়াদের জন্য বিরাট খবর, নয়া শিক্ষানীতি প্রকাশ, আমূল বদলাচ্ছে পরীক্ষা পদ্ধতি
আরও পড়ুন: ঝগড়ার পরিণতি মৃত্যু! লিভ ইন পার্টনারের বুকে চাকু বসালেন তরুণী, ঘটনা জানলে শিউরে উঠবেন
বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। এর ফলে সারাদিন কালো মেঘ করে শেষ পর্যন্ত প্রবল বৃষ্টি হতে পারে। আবার রৌদ্রোজ্জ্বল দিনেও হঠাৎ বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে। কোনও পূর্বাভাস পাওয়া যায় না।
কী ভাবে ভারী বৃষ্টি হয়, ঝঞ্ঝা তৈরি হয়?
ব্রিটেন এবং সুইডেনের বিজ্ঞানীরা এই নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন। মাইকেল উইলকিনসন, বার্নার্ড মেলিগ এবং ভ্লাদ বেজুগলির মতে, যখন বায়ুমণ্ডলে ঝঞ্ঝা তৈরি হয়, তখন ছোট ছোট ফোঁটার বৃষ্টিও প্রবল বর্ষণ তৈরি করতে পারে। কিউমুলাস মেঘ থেকে এই বৃষ্টি হতে পারে।
কিউমুলাস, স্ট্র্যাটিফর্ম মেঘ কীভাবে গঠিত হয়?
কিউমুলাস মেঘগুলি সংবহনশীল পরিবেশের কারণে উল্লম্বভাবে তৈরি হতে পারে। পরিচলন পদ্ধতিতে তাপ স্থানান্তরিত হয়। তখন মেঘ বৃষ্টির ফোঁটায় রূপান্তরিত হতে পারে। অন্য দিকে, স্ট্র্যাটিফর্ম মেঘ আনুভূমিক ভাবে তৈরি হয়, যা স্থিতিশীল পরিবেশ গঠন করে। তাই সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি হয় না।
উইলকিনসন এবং তাঁর সহকর্মীরা দেখেছেন যে ক্লাস্টারিং অশান্ত পরিবেশে তৈরি হতে পারে। তবে এটি কোনও কারণে সংঘর্ষের হারকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে না।
জলকণার সংঘর্ষে তৈরি দুর্যোগ—
গবেষক দলটি দেখেছে, তীব্র ঝঞ্ঝার সময় ক্লাস্টারিং-এর প্রভাব দুর্বল হলেও জলকণার সংঘর্ষের হার বেশি থাকে। বায়ুতে ঝঞ্ঝার তীব্রতা নির্দিষ্ট সীমা ছাড়িয়ে গেলে কস্টিক গঠিত হয়। কস্টিক শব্দটি ঘনীভূত সূর্যালোকের জ্বলন্ত প্রভাব থেকে উদ্ভুত।
গ্যাসীয় কণার সংঘর্ষে এই ভাবেই তৈরি হয়েছিল গ্রহগুলিও। উইলকিনসন বলেন, কস্টিক সংঘর্ষের হার এত দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে যে, মেঘ তৈরির মিনিটের মধ্যে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ফলে তার কোনও পূর্বাভাস নাও পাওয়া যেতে পারে। উত্তাল গ্যাসীয় কণার এমন সংঘর্ষের কারণেই গ্রহগুলি গঠিত হয়েছিল। তবে তার সঙ্গে এই বর্ষণের মিল রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
