রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কী এবার শেষ হবে? সেরকমই ইঙ্গিত মিলল। এমন পদক্ষেপে আশার আলো দেখছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতার পরই সমস্ত যুদ্ধ শেষ করার বার্তা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তাছাড়া আপোষ, মীমাংসা, দর কষাকষি, চুক্তির মতো বিষয়ে তিনি নিজেকে ‘এক্সপার্ট’ বলেও দাবি করেন। ‘ট্রাম্প: দ্য আর্ট অফ দ্য ডিল’ নামের একটি বইও লিখেছেন তিনি। তবে কীভাবে দ্রুত সংঘাতের সমাপ্তি ঘটাবেন সে বিষয়ে ধোঁয়াশা এখনও পুরোপুরি কাটেনি। সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্বে এক মার্কিন সাংবাদিককে পুতিন জানান, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান। কয়েক বছর তাঁদের মধ্যে কোনও কথা হয়নি। এরপরই ওই সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেন, সাক্ষাৎ হলে তিনি ট্রাম্পকে কী প্রস্তাব দেবেন? জবাবে পুতিন বলেন, “আমরা আলোচনা এবং আপোষের জন্য প্রস্তুত।” সঙ্গে জানিয়ে দেন, রাশিয়ান সেনা ফ্রন্টে এগিয়ে চলেছে। ইউক্রেনে লক্ষ্য অর্জনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
advertisement
টানা যুদ্ধের কারণে রাশিয়া দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক দিক থেকে। এমনটা মনে করেন অনেক আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞই। এদিন এই ধারণাও নাকচ করে দেন পুতিন। তিনি বলেন, ‘২০২২ সালে ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর পর থেকে রাশিয়া আরও শক্তিশালী হয়েছে।’ আলোচনার টেবিলে বসার প্রস্তাব দিলেও ইউক্রেনকে হুমকি দিতে ছাড়েননি পুতিন। রীতিমতো শাসানির সুরে বলেছেন, ‘ইউক্রেনে যাঁরা এখনও যুদ্ধ করতে চাইছে খুব শীঘ্রই তারা শেষ হয়ে যাবে।” তারপরই সুর নরম করে যোগ করেন, ‘আমরা প্রস্তুত। কিন্তু অন্য পক্ষকেও আলোচনা এবং আপোষের জন্য প্রস্তুত হতে হবে।’
পুতিন যে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করতে চান, তা গত মাসেই একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছিল রয়টার্স। তবে সেই সময় পুতিন শর্ত দিয়েছিলেন, কিয়েভকে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার আশা ত্যাগ করতে হবে। তবে বৃহস্পতিবার পুতিন জানান, কোনও শর্ত নেই। ইউক্রেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য রাশিয়া প্রস্তুত। সোজা কথায়, এই আলোচনা ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও হতে পারে। তবে পুতিনের এই বক্তব্যে কিছুটা ধোঁয়াশা রয়েছে। কারণ তিনি জানিয়েছেন, শুধু ইউক্রেনের বৈধ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেই চুক্তি স্বাক্ষর করবেন তিনি। অর্থাৎ মস্কো ইউক্রেনীয় সংসদকেই বিবেচনা করছে। চলতি বছরের শুরুতেই জেলেনস্কির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। সামরিক আইন জারি করে সেই মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তাই জেলেনস্কিকে পুনর্নির্বাচিত হতে হবে যাতে মস্কো তাকে যে কোনও চুক্তির বৈধ স্বাক্ষরকারী হিসেবে বিবেচনা করে এবং তা আইনগতভাবে শক্তিশালী হয়। এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন পুতিন।