সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, পাকিস্তানের করাচির ঘটনা। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে যে, নিরাপত্তা রক্ষীর সঙ্গে গর্ভবতী ওই মহিলার কথা কাটাকাটি চলছে। এর পরেই ওই রক্ষী সপাটে চড় কষিয়ে দেন মহিলার গালে। টাল সামলাতে না-পেরে মাটিতে পড়ে যান ওই মহিলা। এরপর বারবার উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু ওই নিরাপত্তা রক্ষী আচমকাই ভারি বুট দিয়ে সজোরে লাথি মারেন মহিলার মুখে। শারীরিক নিগ্রহের জেরে জ্ঞান হারান ওই মহিলা। ঘটনাস্থলে ইনস্টল করা সিসিটিভি ক্যামেরায় এই পুরো ঘটনা রেকর্ড হয়। আর তা সামনে আসতেই লজ্জাজনক এবং অমানবিক এই ঘটনার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন নেটিজেনরা। এর পরেই গ্রেফতার করা হয়েছে ওই নিরাপত্তা রক্ষীকে।
advertisement
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই মহিলার নাম সানা (Sana)। তিনি করাচির গুলিস্তান-ই-জওহর (Gulistan-e-Jauhar)-এর নোমান গ্র্যান্ড সিটি (Noman Grand City)-র একটি বহুতলের অ্যাপার্টমেন্টে পরিচারিকার কাজ করেন। সানা পুলিশের কাছে অভিযোগে জানিয়েছেন যে, গত ৫ অগাস্ট রাত ৩টে নাগাদ তিনি তাঁর ছেলে সোহেল-কে খাবার দিয়ে যেতে বলেন। সোহেল খাবার নিয়ে অ্যাপার্টমেন্ট চত্বরে ঢুকতে গেলে তাঁকে বাধা দেয় আবদুল নাসির, আদিল খান এবং মাহমুদ খলিল নামে তিন নিরাপত্তারক্ষী।
আরও পড়ুন: মাটি নিয়ে খেলা, লাল মাটির দেশের বিশেষ উদ্যোগে এক টুকরো ছেলেবেলার ছবি
সানার অভিযোগ, “আমি নীচে নেমে এসে ওই নিরাপত্তা রক্ষীদের প্রশ্ন করলে আদিল প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে আর আমাকে নিগ্রহ করতে শুরু করে। আমি ৫-৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। যখন আদিল আমায় মারধর করে, সেই মারধরের চোটে আমি প্রচণ্ড যন্ত্রণায় জ্ঞান হারাই।”
ঘটনাক তদন্ত শুরু হয়েছে এবং আপাতত পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে অভিযুক্ত নিরাপত্তা রক্ষীকে। ইতিমধ্যেই ধারা ৩৫৪ (নিগ্রহ অথবা কোনও মহিলার উপর আপরাধমূলক আক্রমণ) এবং ধারা ৩৩৭এআই (যে কোনও মানুষকে আঘাত করার উদ্দেশ্যে কোনও কার্যকলাপ)-র আওতায় এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন- কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না, ফের সরব হল তৃণমূল কংগ্রেস
সিন্ধ-এর মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলি শাহ (Murad Ali Shah) এই ঘটনাটির কথা জানতে পেরেই ওই নিরাপত্তা রক্ষীর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, ওই মহিলার উপর হাত তোলার এবং হিংসাত্মক আক্রমণের স্পর্ধা ওই রক্ষী পেল কোথা থেকে।
আরও পড়ুন: সরকারি বাসের সঙ্গে অটোর সংঘর্ষ, রামপুরহাটে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত ৯
পাকিস্তানে মহিলাদের উপর এমন নির্যাতনের ঘটনা নতুন কিছু নয়। একটি রিপোর্ট বলছে, গোটা পাকিস্তানে গত জুন মাসে প্রায় ১৫৭ জন মহিলাকে অপহরণ করা হয়েছে। শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন প্রায় ১১২ জন মহিলা। আর জুনেই ৯১ জন মহিলার থেকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।