ইসলামাবাদ: ঘড়ির কাঁটা তখন দুপুর সাড়ে ১২টা ছুঁই ছুঁই। ইসলামাবাদের তরুণ আইনজীবী খালিদ খান বন্ধু ফাওয়াদ খানকে নিয়ে খাবার টেবিলে অপেক্ষা করছিলেন। বসেছিলেন ইসলামাবাদের জেলা আদালত প্রাঙ্গণের ক্যাফেটেরিয়ায়। হঠাৎ বিকট শব্দ। বিস্ফোরণের ধাক্কায় ক্যাফেটেরিয়াসহ পুরো আদালত প্রাঙ্গণ কেঁপে ওঠে। ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে খালিদ জানান, ‘শুরুতে আমার মনে হয়েছিল, মাথার ওপর ছাদ ভেঙে পড়বে।’
advertisement
মঙ্গলবার দুপুরে ওই আদালতের বাইরে একটি আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়। এখন পর্যন্ত পাওয়া সরকারি তথ্য অনুযায়ী, হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত ও ৩০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের অনেকের অবস্থা গুরুতর। একজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী আদালত প্রাঙ্গণে ঢোকার প্রবেশমুখে সড়কে নিজেকে উড়িয়ে দেন।
এদিকে, ইসলামাবাদে বিস্ফোরণের ঘটনায় ভারতের দিকেই আঙুল তুলেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ সরকার। পাকিস্তানের সরকারি সংবাদমাধ্যম শাহবাজকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, দেশকে অশান্ত করতে ধারাবাহিকভাবে হামলা চালানো হচ্ছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি হল পাকিস্তান। দীর্ঘদিন ধরেই তারা জঙ্গিদের পোষণ করে আসছে। কিন্তু যখন তাঁরা দানবে পরিণত হয়, তখনই পাকিস্তান ভারতকে দোষারোপ করতে শুরু করে। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। শাহবাজের অভিযোগ, পাকিস্তানকে দীর্ঘদিন ধরেই রক্তাক্ত করে আসছে তেহরিক-ই তালিবান। এক ধাপ এগিয়ে তিনি এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীটিকে ‘ভারতের হাতের পুতুল’ বলেও অভিহিত করেছেন। পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মদদপুষ্ট জঙ্গিরাই ইসলামাবাদে হামলা চালিয়েছে। আফগান ভূখণ্ড থেকে পরিচালিত একই নেটওয়ার্ক ওয়ানায় নিরীহ শিশুদের উপরও হামলার জন্য দায়ী।”
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ইসলামাবাদের একটি আদালত চত্বরের পার্কিং এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে আচমকা বিস্ফোরণ হয়। তারপরই ছড়িয়ে পড়ে আগুন। বিস্ফোরণের জেরে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কয়েকটি গাড়িও। জানা যাচ্ছে, ঘটনার সময় সেখানে বহু মানুষের ভিড় ছিল। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বহু আইনজীবীও। বিস্ফোরণের পরই সেখানে হুলস্থূল পড়ে যায়। কিন্তু কী কারণে বিস্ফোরণটি হল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১২ জনের।
