ওষুধ সঙ্কটের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, এমন আশঙ্কায় এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ড্রাগ রেগুলেটরি অথোরিটি অফ পাকিস্তান বা ডিআরএপি৷ সেদেশের প্রথমসারির সংবাদমাধ্যম জিও নিউজই এমন দাবি করেছে৷ ভারতের থেকে ওষুধ অথবা ওষুধ তৈরির কাঁচামাল সরবরাহ বন্ধ হলে বিকল্প কোন কোন দেশ থেকে তা আমদানি করা সম্ভব, সেই খোঁজখবর নেওয়াও শুরু হয়েছে৷
advertisement
আরও পড়ুন: পর্যটক নয়, পহেলগাঁওয়ে মৃতরা ভারতীয় গুপ্তচর! নারকীয় হত্যাকাণ্ডের পর সাফাই দিল টিএফআর
বর্তমানে পাকিস্তানে যে ওষুধ তৈরি হয় তার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কাঁচামালই ভারত থেকে যায়৷ এর মধ্যে রয়েছে ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এপিআই৷ ডিআরএপি-র এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ২০১৯ সালে আমাদের এই ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়েছিল৷ সেই অভিজ্ঞতা থেকেই আমরা এবার আগেভাগে প্রস্তুত থাকতে চাইছি৷ বিকল্প কোন কোন জায়গা থেকে এই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ ওষুধের ঘাটতি মেটাতে ভারতের বিকল্প হিসেবে চিন, রাশিয়া ছাড়াও ইউরোপের অন্যান্য কয়েকটি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে৷
মূলত কুকুরে কামড়ানোর প্রতিষেধক, সাপে কামড়ানোর চিকিৎসায় ব্যবহৃত অ্যান্টি ভেনম ইঞ্জেকশন, ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত বিভিন্ন থেরাপি, রোগ নির্ণয় করার জন্য পরীক্ষা নিরীক্ষায় ব্যবহৃত চিকিৎসা সরঞ্জামের পর্যাপ্ত জোগান নিয়েই এখন চিন্তিত পাকিস্তানের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সর্বোচ্চ সংস্থা ডিআরএপি৷
পাকিস্তানের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তা পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেন, ‘ভারত থেকে আমরা ওষুধ তৈরির ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কাঁচামাল আমদানি করি৷ এ ছাড়াও ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত বিভিন্ন থেরাপি, পরীক্ষা নিরীক্ষার সামগ্রী, বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিন, জলাতঙ্কর প্রতিষেধক, অ্যান্টি স্নেক ভেনম আমরা ভারত থেকে আমদানি করি৷’
পাক সরকার ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেন বন্ধের ঘোষণা করেছে৷ কিন্তু ওষুধ বা চিকিৎসা সরঞ্জামের ক্ষেত্রেও এই নির্দেশ কার্যকর হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়৷ পাকিস্তানের ওষুধ বিক্রেতাদের আশঙ্কা, ভারত থেকে আমদানি বন্ধ হলে পাকিস্তানে সত্যিই ওষুধ, ইঞ্জেকশন, ভ্যাকসিনের মতো জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহৃত সরঞ্জামের আকাল দেখা দেবে৷
পাকিস্তানে এমনিতেই ওষুধের কালোবাজারি চলে৷ আফগানিস্তান, ইরান সীমান্ত হয়ে অথবা দুবাই হয়ে পাকিস্তানে বেআইনি পথে অনুমোদনহীন বিভিন্ন ওষুধ ঢোকে৷ ভারতের থেকে সরবরাহ বন্ধ হলে এই কালোবাজারি এবং বেআইনি ওষুধের ব্যবহার আরও বাড়বে৷
পরিস্থিতি আন্দাজ করে শনিবারই ওষুধ শিল্পের সঙ্গে যুক্তদের একটি প্রতিনিধি দল ইসলামাবাদ রওনা দিয়েছে৷ ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের আমদানিকে বাণিজ্যিক লেনদেনে নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রাখা হয়, পাক সরকারের কাছে সেই অনুরোধই করতে চান ওই প্রতিনিধিরা৷