মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা মঙ্গল গ্রহের নমুনা পৃথিবীতে আনার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। নাসা বলেছে, ২০৩৩ সালের মধ্যে তারা পৃথিবীতে মঙ্গল গ্রহের নমুনা নিয়ে আসবে। NASA তার মঙ্গল গ্রহের নমুনা প্রত্যাবর্তন কর্মসূচীর জন্য প্রয়োজনীয় সমীক্ষাও করে ফেলেছে। জানা গিয়েছে আপাতত ‘কনসেপচুয়াল ডিজাইন ফেজ’ (Conceptual Design Phase)–এর কাজ চলছে। অর্থাৎ, আসবে মঙ্গল ফেরত রোভার, তারই পরিকল্পনা।
advertisement
আরও পড়ুন- নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৩০টি গাড়িকে ধাক্কা ট্রাকের ! ভয়ানক দুর্ঘটনার ভিডিও সিমলায়
এই অভিযানে ইতিমধ্যেই যুক্ত হয়েছে ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি (ESA)। অভিযানের জটিলতা কমাতে এবং ভবিষ্যতে সাফল্যের সম্ভাবনা বাড়াতে তাদের অবদানে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ওয়াশিংটনে নাসা সদর দফতরের সহযোগী প্রশাসক (Associate Administrator) টমাস জুরবুচেন (Thomas Zurbuchen) বলেছেন, ‘কনসেপচুয়াল ডিসাইন পর্বে কোনও অভিযান পরিকল্পনার প্রতিটি দিককে গভীরভাবে যাচাই করে দেখা হয়। পরিকল্পনায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটছে, তার ফলেই জেজেরোতে পারসিভারেন্স রোভারের সাম্প্রতিক সাফল্য এসেছে। পাশাপাশি এ কথাও বলা যায় যে মার্স হেলিকপ্টারের আশ্চর্যজনক পারফরম্যান্সও ঘটেছে এরই জন্য।’
এই অত্যাধুনিক অভিযানের ক্ষেত্রে পারসিভারেন্স রোভারের কার্যকাল কতদিন স্থায়ী হতে পারে সে বিষয়টি সাম্প্রতিক গবেষণায় খতিয়ে দেখা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পারসিভারেন্সকেই ব্যবহার করা হবে মঙ্গলের নমুনা পৃথিবীতে নিয়ে আসার জন্য। তবে পারসিভারেন্স তা পৌঁছে দেবে মার্স অ্যাসেন্টট ভেহিকল (Mars Ascent Vehicle) এবং ইএসএ-র স্যাম্পল ট্রান্সফার আর্মের (ESA's Sample Transfer Arm) বিশেষ নমুনা বাহক মহাকাশযান (Sample Retrieval Lander) কাছে।
মঙ্গলগ্রহের নমুনা ফেরত অভিযানে আর কোনও যান বা এর সঙ্গে যুক্ত ল্যান্ডার ব্যবহার করা হবে না। নমুনা আনতে দু’টি নমুনা পুনরুদ্ধার হেলিকপ্টার অবশ্য রাখা হবে। এগুলি ইনজেনুইটি (Ingenuity) হেলিকপ্টারের প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে।
Ingenuity হল একটি ছোট রোবোটিক কো-এক্সিয়াল রোটার হেলিকপ্টার যা NASA-এর অংশ হিসেবে মঙ্গল গ্রহে কাজ করে। এই হেলিকপ্টারটি এখন পর্যন্ত মঙ্গল গ্রহে ২৯ বার উড়েছে। সব থেকে বড় কথা এটি প্রত্যাশিত সময়কালের পরে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছে। যদিও এই হেলিকপ্টারগুলি পরোক্ষ ভাবে মঙ্গলপৃষ্ঠ থেকে নমুনাগুলি সংগ্রহে সাহায্য করবে।
আগামী কয়েক বছরে মঙ্গল অভিযান সেরে পৃথিবীতে ফিরে আসবে ESA-এর অরবিট এবং NASA-র ক্যাপচার, কন্টেনমেন্ট (কোনও ক্ষতিকারক বস্তুকে নিয়ন্ত্রণে বা পরিসরের মধ্যে রাখার কাজ) এবং রিটার্ন সিস্টেমগুলি। মনে করা হচ্ছে আগামী ২০২৭ সালে ESA এর রিটার্ন-টু-আর্থ অরবিটারে লঞ্চের করতে পারে। অন্যদিকে ২০২৮-এর মাঝামাঝি NASA-এর নমুনা-আনয়নকারী ল্যান্ডার ফিরবে বলে পরিকল্পনা করা হয়েছে। নাসার হিসেব অনুযায়ী ২০৩৩ সালের মধ্যেই পৃথিবীতে ফিরে আসবে সব কিছু।