ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এই সফর রাশিয়া ও ভারতের চিরাচরিত মৈত্রী সম্পর্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ৷ আরও জানানো হয়েছে পুতিন ও মোদি উভয়ই এই দুই দেশের এই বন্ধুত্বকে আরও দৃঢ় করে তোলার লক্ষে কাজ করার জন্য একাধিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন৷ এছাড়াও রাশিয়ান বার্তা সংস্থা TASS রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমান আন্তর্জাতিক সমস্যা ও নানা আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে৷
advertisement
মনে করা হচ্ছে ভারত রাশিয়ার এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাশিয়া ও ভারতের উভয়ের জন্যই খুবই জরুরি৷ বিশেষ করে বর্তমান প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে বিদেশের উপর নির্ভরতা কমানোর জন্য ভারত তার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও বাণিজ্যিক পরিকাঠামোয় ব্যাপক বদল এনেছে৷ এই অবস্থায় রাশিয়া প্রতিরক্ষা এবং এনার্জির মতো নানা ক্ষেত্রে ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার প্রমাণিত হয়েছে। ভারতবর্ষের অর্থনৈতিক অগ্রসরের গতিকে আরও চাঙ্গা করে তুলতে অন্যদেশের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ককে উন্নত করার দরকার৷
রাশিয়ার সহযোগিতায়, ভারতের কী কী সুবিধা পেতে পারে?
মধ্য এশিয়া থেকে নর্থ-সাউথ যোগাযোগ করিডর
রাশিয়ার বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে পূর্ব ইউরোপ এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ানের বাণিজ্য চুক্তির অ্যাকসেস পেতে পারে৷ (EU)
আফ্রিকায় যেখানে রাশিয়া তার উপস্থিতি বাড়াচ্ছে, সেই সকল জায়গাতেও ভারত তার বাণিজ্যের বিস্তার ঘটাতে পারে৷
ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ভারত ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের আরও উন্নতি চায়৷ তবে ভারতের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র রাশিয়ার উপর নির্ভর না করে ভারত সমস্ত সুযোগ ব্যবহার করবে। শোনা যাচ্ছে, এনএসএ অজিত ডোভালও এই নিয়ে গ্রাউন্ড ওয়ার্কও শুরু করে দিয়েছেন৷
তবে এই মুহূর্তে ইউক্রেনের উপর আগ্রাসনের ঘটনায় রাশিয়া অনেকটাই কোণঠাসা৷ ফলে এই মুহূর্তে পুতিনের আরও বেশি করে ভারতের সাহায্য ও বন্ধুত্ব প্রয়োজন৷
আরও পড়ুন: প্রচারের শেষলগ্নে আত্মবিশ্বাসী ঋষি সুনক! সমীক্ষা কী একই কথা বলছে?
বর্তমানের আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রাশিয়ার সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ক্রমশ তলানিতে ঠেকেছে৷ এই পরিস্থিতিতে ভারতকে নিরপেক্ষভাবে পা ফেলতে যথেষ্ট কৌশল নিতে হচ্ছে৷ তবে ভারত-চিন সীমান্তে (LAC) উত্তেজনা কমানোর জন্য রাশিয়ার সাহায্য চাইবে৷
রাশিয়ার ভারত ভ্রমণ কোন কোন জায়গায় উল্লেখযোগ্য
ইরানের চাবাহার বন্দরের একটি চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য ইরানের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে বাইপাস করার জন্য।
ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যাপারে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এবং পশ্চিমের অস্ত্র ও প্রযুক্তি অর্জন নিয়ে রাশিয়ার উদ্বেগ রয়েছে৷ সেই নিয়েও রাশিয়ার সঙ্গে কথা বলা দরকার
রাশিয়া থেকে ব্রেন ড্রেন, যা ভারতকে রাশিয়ান সরকারের অনুমতি ছাড়াই ভারত রাশিয়ান প্রযুক্তি কর্মীদের নিয়োগ করতে পারবে।
রাজস্ব এবং প্রভাবের ক্ষতি এড়াতে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার চুক্তি প্রস্তাব করার সম্ভাবনা রয়েছে৷
ইউক্রেনের যুদ্ধ, আফ্রিকার অর্থনৈতিক উদ্বেগ এবং গাজা সংঘাতের সমাধান সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয়গুলিকে নিয়ে আলোচনা করা হতে পারে।
আরও পড়ুন:পরাজিত ঋষি সুনক, বিদায়ী সম্ভাষণে কী বললেন প্রথম ভারতীয় বংশদ্ভূত ব্রিটিশ বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী?
বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সোমবার মন্তব্য করেছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফরের ফলে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের অর্থনৈতিক সম্পর্ক অসাধারণভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সংবাদ সংস্থা ANI এর রিপোর্ট অনুযায়ী “এই সফরে সবচেয়ে বড় পরিবর্তনগুলির মধ্যে একটি হল, রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক ব্যাপকভাবে বেড়েছে৷ শীর্ষনেতৃত্বের স্তরে, প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং রাষ্ট্রপতি পুতিনের সরাসরি কথোপকথনের ফলে এই সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পেয়েছে৷”