TRENDING:

Turkey Earthquake: ধ্বংসস্তূপের নীচে কতদিন বেঁচে থাকে মানুষ? রয়েছে অনেক নজির, শুনলে মনে হবে অবিশ্বাস্য

Last Updated:

২০১০ সালে হাইতির বিধ্বংসী ভূমিকম্পের ২৭ দিন পর এক ব্যক্তিকে ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়৷

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
কলকাতা: তুরস্কের শহর আদানার রাস্তায় একটি বহুতলের ধ্বংসস্তূপের সামনে দাঁড়িয়ে হাউ হাউ করে কাঁদছেন বৃদ্ধ। ইমরান বাহুর নামে ওই বৃদ্ধের কাতর আর্তি, 'আমার নাতির বয়স দেড় বছর। এই আবাসনের ১৩ তলায় ওরা ছিল৷ দয়া করে ওদের কেউ সাহায্য করুন৷'
তুরস্ক- সিরিয়া জুড়ে এমনই ছবি। Photo-Reuters
তুরস্ক- সিরিয়া জুড়ে এমনই ছবি। Photo-Reuters
advertisement

একা ওই বৃদ্ধ৷ তুরস্ক এবং সিরিয়ার ভূমিকম্প বিধ্বস্ত শহরগুলির রাস্তায় এমনই স্বজন হারানো মানুষের ভিড়৷ ধ্বংসস্তূপের ভিতরে প্রাণের খোঁজ চালাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা৷ আর রাস্তায় অপেক্ষা করছেন নিখোঁজদের প্রিয়জনরা৷ বরাতজোরে যাঁরা প্রাণে বেঁচেছেন৷ এখন প্রিয়জনদের খোঁজ মিলবে, চোখে জল নিয়েই সেই অসম্ভবের আশায় বুক বাঁধছেন তাঁরা৷ কিন্তু যত সময় যাচ্ছে, সেই সম্ভাবনাও কমছে৷

advertisement

তুরস্কে ভয়াল ভূমিকম্পের পর ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় কেটে গিয়েছে৷ তুরস্ক এবং সিরিয়া মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে৷ ভারতে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, শুধুমাত্র সেদেশেই ৬ হাজার বাড়ি এবং বহুতল ভেঙে পড়েছে৷ আহত হয়েছেন ২১ হাজারের বেশি মানুষ৷ এখনও কত মানুষ যে ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন, সেই হিসেব এখনও মেলেনি৷

advertisement

আরও পড়ুন: মৃত চার হাজার, তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্পে ২০ হাজার প্রাণহানির আশঙ্কা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

এই পরিস্থিতিতেই প্রশ্ন উঠছে, এরকম ধ্বংসস্তূপের নীচে কতদিন বেঁচে থাকতে পারেন মানুষ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবিশ্বাস্য শুনতে মনে হলেও এক সপ্তাহ পর্যন্ত কংক্রিটের এমন ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়লেও বেঁচে থাকতে পারে মানুষ৷ তবে তা নির্ভর করবে কয়েকটি বিষয়ের উপর৷ যেমন, আটকে থাকা ব্যক্তির আঘাত কতটা গুরুতর, তিনি স্বাভাবিক নিঃশ্বাস গ্রহণের জন্য পর্যাপ্ত বাতাস পাচ্ছেন কি না এবং আবহাওয়ার পরিস্থিতি কেমন থাকছে তার উপর৷ এই ধরনের বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে উদ্ধারকাজে গতি আসতে কমবেশি চব্বিশ ঘণ্টা লেগে যায়৷ যত সময় যায়, ততই ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে থাকা মানুষের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কমতে থাকে৷

advertisement

ছবি- রয়টার্স

এই বিষয়ে ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিশেষজ্ঞ রিচার্ড মুন সংবাদসংস্থা এপি-কে জানিয়েছেন, এমন পরিস্থিতিতে খাবার না পাওয়া বড় বিষয় হয়ে দাঁড়ায় না৷ কারণ খাবার না খেয়েও মানুষ কয়েক সপ্তাহ বেঁচে থাকতে পারে৷ কিন্তু, পানীয় জল ছাড়া খুব বেশি দিন বেঁচে থাকা অধিকাংশ মানুষের পক্ষেই সম্ভব হয় না৷

advertisement

নিউ ইয়র্ক টাইমস-এ প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৯৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি শপিং মল ভেঙে ৫০২ জনের মৃত্যু হয়৷ আহত হন ৯৩৭ জন৷ সেই ঘটনায় চোই মিয়ং সোক নামে এক ব্যক্তিকে দশ দিন পর ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে উদ্ধার করা হয়৷ বেঁচে থাকার জন্য বৃষ্টির জল পান করতেন তিনি৷ পাশাপাশি ধ্বংসস্তূপের মধ্যে পড়ে থাকা কার্ডবোর্ড চিবোতেন৷ নিজেকে উজ্জীবিত করতে বাচ্চাদের খেলনা নিয়েও সময় কাটাতেন তিনি৷ কারণ তাঁর চোখের সামনে ধ্বংসস্তূপের ভিতরে আটকে থাকা আরও দুই সঙ্গীর মৃত্যু হয়েছিল৷

আরও পড়ুন: মুহূর্তে গুঁড়িয়ে যাচ্ছে পেল্লাই সব বাড়ি, চারিদিকে মৃত্যুমিছিল, তুরস্কের ছবি রাতের ঘুম উড়িয়ে দেবে

ব্রিটেনের একটি উদ্ধারকারী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত জুলি রায়ান বিবিসি-কে জানিয়েছেন, এই ধরনের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকে পড়া যে কারও বেঁচে থাকার প্রাথমিক শর্ত হল অক্সিজেন এবং পানীয় জলের যোগান৷ এর পাশাপাশি যে জায়গায় কেউ আটকে পড়েছেন, সেখানকার তাপমাত্রারও উপরও নির্ভর করে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা৷ কারণ সেখানে যদি খুব গরম বা তাপমাত্রা বেশি থাকে, তাহলে দ্রুত শরীর থেকে জল বেরিয়ে যায়৷ যার ফলে বেঁচে থাকার সম্ভাবনাও কমে৷

ছবি- রয়টার্স

আবার এরকম ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে পড়া মানুষ এক ধরনের বিশেষ ক্রাশ সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হন৷ যার অর্থ, ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ার ফলে তাঁদের মাথার হাড় বা মাংসপেশীতে আঘাত লাগার সম্ভাবনা থাকে৷ ভারী কিছুর নীচে চাপা পড়ে থাকলে অনেক সময় মানুষের হাত, পা বা শরীরের অন্য কোনও অংশ ফুলে যেতে থাকে৷ এমন কি, স্নায়ুজনিত সমস্যাও দেখা দিতে পারে৷ এর পরিণতি হতে পারে প্রাণঘাতী৷

তবে এরকম পরিস্থিতির মধ্যে থেকে অবিশ্বাস্য ভাবে বেঁচে থাকার নজিরও রয়েছে৷ ২০০৫ সালের ৮ অক্টোবর ভূমিকম্প হয় কাশ্মীরে৷ এর ঠিক ২ মাস পরে বাড়ির রান্নাঘর থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় নাকশা বিবি নামে এক মহিলাকে৷ তাঁর ওজন কমে ৩৫ কেজি হয়ে যায়৷ শরীরের সব মাংসপেশী শক্ত হয়ে গিয়েছিল৷ তিনি এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েন যে প্রায় কথাই বলতে পারছিলেন না৷ ভেঙে পড়া বাড়ির রান্নাঘরের যে ছোট্ট অংশে ওই মহিলা আটকে ছিলেন, সেখানে পচে যাওয়া খাবারের অংশও পাওয়া যায়৷ এক জায়গায় ছিল কয়েক ফোঁটা জল৷ সবথেকে বড় কথা, নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য টাটকা বাতাসটুকু পেয়েছিলেন নাকশা বিবি নামে ওই মহিলা৷

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
লালগোলাতে রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিতা হন মা কালী! দেওয়া হয় ইলিশের ভোগ
আরও দেখুন

আবার দ্য গার্ডিয়ান-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১০ সালে হাইতির বিধ্বংসী ভূমিকম্পের ২৭ দিন পর এক ব্যক্তিকে ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়৷ শরীরে কোনও গুরুতর আঘাত না থাকলেও তাঁর শরীর জলশূন্য হয়ে পড়েছিল, শরীর ছিল দুর্বল৷ পাশাপাশি মানসিক সমস্যাও দেখা দিয়েছিল ওই ব্যক্তির৷

বাংলা খবর/ খবর/বিদেশ/
Turkey Earthquake: ধ্বংসস্তূপের নীচে কতদিন বেঁচে থাকে মানুষ? রয়েছে অনেক নজির, শুনলে মনে হবে অবিশ্বাস্য
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল