পঞ্জাবের হোশিয়ারপুরে তাঁদের আসল বাড়ি। গত ৩ অক্টোবর ক্যালিফোর্নিয়ার মার্সেড কাউন্টি থেকে অপহরণ করা হয়েছে। ট্রাকের ব্যবসা খুলেছিল নতুন। ওই এলাকাতেই তাদের দোকান ছিল। জিসাস ম্যানুয়েল সালগাদো বলে এক ব্যক্তিকে অভিযুক্ত হিসেবে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু জিসাস আত্মহত্যার চেষ্টা করায় আপাতত গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। ৪৮ বছরের সালগাদোর পরিবার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানিয়েছে, সালগাদো নাকি স্বীকার করেছে যে সে ওই পরিবারের অপহরণের সঙ্গে জড়িত ছিল।
advertisement
মার্সেড কাউন্টির শেরিফ ভার্ন ওয়ার্নকে জানান, বুধবার সন্ধ্যায় ইন্ডিয়ানা রোড এবং হাচিনসন রোডের কাছে একটি বাগানে ৩৬ বছরের জসদীপ সিং, ২৭-এর জ্যাসলিন কৌর, তাঁদের আট মাসের কন্যা আরুহি ধেরি এবং শিশুর কাকা আমনদীপ সিংয়ের (৩৯) মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। এক চাষি মৃতদেহের সন্ধান পেয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। শেরিফ ভার্ন ওয়ার্নকে জানান, অপহরণ হওয়ার খবর পাওয়ার পরেই এই আশঙ্কা করছিলেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: ভারতে তৈরি কাশির সিরাপে গাম্বিয়ায় মৃত্যু ৬৬ শিশুর! ওই ওষুধে নিষেধাজ্ঞা WHO-এর
উত্তর আমেরিকান পাঞ্জাবি অ্যাসোসিয়েশন (NAPA) বৃহস্পতিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক সতনাম সিং চাহাল প্রেস রিলিজ করে জানিয়েছেন, 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শিখ সম্প্রদায়ের সদস্যদের উপর প্রতিদিনের হামলার কারণে সকলের মনে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা গ্রাস করেছে।' একইসঙ্গে তিনি ভারত সরকারের এবং মার্কিন সরকারকে এই ঘটনার বিরুদ্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান দুঃখ প্রকাশ করেছেন টুইটারে, 'অত্যন্ত দুঃখজনক একটা ঘটনা। ওই পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করকে এই বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করার জন্য আবেদন করছি।'
বুধবার মার্সেড কাউন্টি শেরিফের দফতরের তরফে অপহরণ করার মুহূর্তের একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে দেখা গিয়েছে, জসদীপ এবং আমনদীপ সিং হাত বাঁধা অবস্থায় দোকান থেকে বেরিয়ে আসছেন। পরমুহূর্তে দেখা যায়, বন্দুকধারী অপহরণকারী ব্যক্তি জ্যাসলিন এবং তার ৮ মাসের শিশুকে বিল্ডিং থেকে বের করে একটি ট্রাকে তুলছে।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ডে বাচ্চাদের ডে-কেয়ার সেন্টারে এলোপাথাড়ি গুলি, মৃত্যু ২২ শিশু-সহ ৩৪ জনের
পরিবারের সদস্যদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রাকিং সংস্থা থেকে কিছুই চুরি হয়নি এবং মৃতদের শরীরে সব গয়নাই ছিল। ওয়ার্নকের কথায় জানা যায়, অপহরণের পরে, মার্সেডের প্রায় ১৪ কিলোমিটার উত্তরে অ্যাটওয়াটারে নিহতদের একজনের একটি এটিএম কার্ড ব্যবহার করা হয়েছিল। যদিও অপহরণকারী কোনও মুক্তিপণ দাবি করেনি। তদন্তকারীরা এখনও পর্যন্ত সালগাদো এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত পরিবারের মধ্যে কোনও যোগসূত্র খুঁজে পাননি। তাঁরা অপহরণের আগে একে অপরকে চিনতেন কিনা, সে বিষয়েও কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।