কিভ স্টেশনে এক যুগলের ছবি ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে মহিলা সঙ্গীকে বিদায় জানাচ্ছেন পুরুষ সঙ্গীটি। আর ভাইরাল হয়েছে এই ভিডিওটি। যে খানে দেখা যাচ্ছে, নিজের দুই কন্যা সন্তানকে বিদায় জানাচ্ছেন বাবা। একটি সন্তান কম বয়সের, অন্যটি কিছুটা বড়। কনিষ্ঠতম সন্তানটির হাত ধরে বাবা শেষ কয়েকমুহূর্ত কাটাচ্ছেন, আর বলছেন সাবধানে থাকতে। তার পর আর আবেগ ধরে রাখতে পারছেন না, কেঁদে ফেলছেন। মুহূর্তে দুই সন্তানকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলছেন তিনি। এ যেন যুগ-যুগান্তরে যুদ্ধের ইতিহাসের এক চেনা ছবি, চেনা যন্ত্রণা।
advertisement
আরও পড়ুন: পুতিন-মোদি ফোনে কথা, আলোচনার মাধ্যমে শান্তি ফেরানোর পরামর্শ দিলেন প্রধানমন্ত্রী
শুক্রবার সকালেই ইউক্রেনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, যুদ্ধে মোট ১৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এখনও পর্যন্ত। তার মধ্যে যেমন সেনাবাহিনী রয়েছে, তেমনই রয়েছেন সাধারণ মানুষ। সাধারণের প্রাণহানী আটকাতে তাই এলাকার পর এলাকা খালি করে দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেকেই সেই যাত্রা শুরু হয়েছে। একে একে শহর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে পাড়ি দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আর সেখান থেকেই উঠে আসছে বিচ্ছেদের ছবি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার এই সেনা অভিযানের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে গোটা বিশ্ব। কিন্ত তাতেও, রক্তপাত থামছে না। বৃহস্পতিবার বেলা বাড়তেই রাশিয়ার অন্দরে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। শুধু মস্কো নয় ঐতিহাসিক সেন্ট পিটার্সবার্গেও জমায়েত হয়েছিলেন প্রতিবাদীরা। অনেকের চোখেই ছিল জল। বিপুল পুলিশি নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা ওই অঞ্চলে প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। সেখামে স্লোগান ওঠে যুদ্ধ চাই না। ইউক্রেন আমাদের শত্রু নয়।
সব মিলিয়ে রাশিয়ার মোট ৫৪টি শহরে ছড়িয়ে পড়ে এই যুদ্ধ বিরোধিতার প্রতিবাদের আগুন। রুশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এই ৫৪ শহরের প্রতিবাদীদের মধ্য়ে মোট ১৭৫৪ জনকে গ্রেফতার করেছে রুশ পুলিশ। রুশ প্রতিবাদীদের মনে হয়েছে, ১৯৭৯সালে আফগানিস্তানে রাশিয়ার সেনা অভিযানের পরে এমন রণংদেহী ভাব নিয়ে সেনা অভিযান আর কোথাও করেনি রাশিয়া। যদিও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করেছেন, নাৎসিকরণ ও অস্ত্রের ঝঙ্কার কমাতেই এই সেনা অভিযান, তবু সে কথা মানতে নারাজ রাশিয়ার সাধারণ মানুষ। উইক্রেন দখল করার পথে আসলে এই অজুহাত খাড়া করতে চাইছে রাশিয়া, এমনই মনে করছেন তাঁরা।