প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিপুল খরচের ঘরোয়া প্রকল্প নিয়ে আগে থেকেই বিরোধিতা করে আসছিলেন মাস্ক। তাঁর দাবি, এই প্রকল্প আমেরিকার ঋণকে চরম সীমায় পৌঁছে দেবে। তাই তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন—এই বিলকে সমর্থন করা যে কোনও সাংসদের বিরুদ্ধে তিনি সর্বশক্তি দিয়ে লড়বেন।
৮ বছর পর বাবার রেনকোট পরতে গিয়ে পকেটে হাত, এ কী… যা বেরোল, তা স্বপ্নেও ভাবেননি ছেলে!
advertisement
মাস্ক এক সময় ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে তাঁর অন্যতম বড় আর্থিক অনুদানদাতা ছিলেন। এমনকি তিনি ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি (DOGE)’-র প্রধান হয়ে সরকারি খরচ ও কর্মসংখ্যা কমাতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু এই খরচ বৃদ্ধির ইস্যু নিয়েই দুইজনের মধ্যে ভয়াবহ মতবিরোধ শুরু হয়।
নিজের মালিকানাধীন সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এ মাস্ক লেখেন:
“অপচয় ও দুর্নীতির মাধ্যমে দেশকে দেউলিয়া করে দেওয়ার বিষয়ে আমরা আসলে একদলীয় শাসনের মধ্যে বাস করছি, কোনও প্রকৃত গণতন্ত্রে নয়। তাই আজ ‘আমেরিকা পার্টি’ গঠিত হল—তোমাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে।”
৪ঠা জুলাই, আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসে মাস্ক এক ভোটাভুটি করান, যেখানে তিনি জানতে চান, “আপনি কি দুই দলীয় (বা একদলীয় বলা চলে) ব্যবস্থার হাত থেকে স্বাধীনতা চান?” প্রায় ১২ লক্ষ মানুষ অংশগ্রহণ করেন এই জরিপে, আর দুই-এক অনুপাতে মানুষ নতুন রাজনৈতিক দল চেয়েছেন।
তিনি লিখেছেন:
“তোমরা নতুন রাজনৈতিক দল চেয়েছ, এবং তা তোমরা পাবে!”
একটি মিমও পোস্ট করেন মাস্ক, যেখানে একটি দুই-মাথাওয়ালা সাপের ছবি দেওয়া ছিল, আর ক্যাপশনে লেখা ছিল: “ইউনিপার্টির অবসান ঘটাও”।
নির্বাচনী কৌশল ও হুমকি
এখনও পরিষ্কার নয়, এই নতুন দল ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে কতটা প্রভাব ফেলতে পারবে। তবে মাস্ক ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন—তিনি কয়েকটি নির্দিষ্ট সিনেট ও হাউস আসন টার্গেট করে কৌশলী লড়াই চালাবেন।
তিনি বলেন:
“দুই-তিনটি সিনেট আসন আর আট-দশটি হাউস আসনের ওপর তীক্ষ্ণ নজর রেখে পরিকল্পনা তৈরি করা যেতে পারে, যাতে আমরা গুরুত্বপূর্ণ আইন পাসে ‘ডিসাইডিং ভোট’ হয়ে উঠি।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি দুই বছরে হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের ৪৩৫টি আসনেই নির্বাচন হয়, এবং প্রতি দুই বছর অন্তর সিনেটের এক-তৃতীয়াংশ সদস্য নির্বাচিত হন।
ট্রাম্পের পাল্টা আঘাত
মাস্ক যখন ট্রাম্পের ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’-এর বিরোধিতা করে বলেন এটি “ঋণের দাসত্ব” তৈরি করবে, তখন ট্রাম্প পাল্টা হুমকি দেন মাস্ককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নির্বাসিত করার। তিনি বলেন:
“ওর (মাস্কের) বিষয়ে আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে।”
প্রসঙ্গত, মাস্ক দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মালেও ২০০২ সাল থেকে মার্কিন নাগরিক। তবে সমালোচকরা মনে করছেন, মাস্ক এই নতুন দল গড়ে বস্তুত তৃতীয় পক্ষ হয়ে ভোট ভাগ করবেন, যা শেষমেশ ডেমোক্র্যাটদেরই সুবিধা করে দিতে পারে। অনেকেই তুলনা করছেন ১৯৯২ সালের রস পেরোর সঙ্গে, যাঁর স্বাধীন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়ে দাঁড়ানো শেষমেশ রিপাবলিকান জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের পরাজয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।