শেখ মুজিবর রহমানের জীবনে ফজলুল হক, চিত্তরঞ্জন দাস, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর প্রভাব ছিল অনেকটাই। রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডে ওয়েলিংটনের পাশেই মৌলানা আজাদ কলেজে পড়া, বেকার হোস্টেলে থাকা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনে জড়িয়ে পড়া, পার্ক সার্কাসে অবাধ ঘোরাফেরা, রিপন স্ট্রিটের হোটেলে খাওয়া দাওয়া, আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে পত্রিকার দফতরে রাত কাটানো, পরবর্তীকালে ব্রিগেডে জনসমুদ্রে তাঁর রক্তে আগুন ধরানো ভাষণ, ইন্দিরা গান্ধির উপস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশের মানুষকে ধন্যবাদ জানানো, আরও কত কিছু যে এই শহর কলকাতা তাকে দিয়েছিল, তা শুধু ঘটনাক্রম দিয়ে ধরা যায় না। কলকাতা ছিল তার প্রাণের শহর, মুজিবের অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে গিয়েছিল শহর কলকাতা কৃষ্টি সংস্কৃতি এবং অবশ্যই রাজনীতি।
advertisement
আরও পড়ুন: শাহরুখ-কাজল নাকি শোভন-বৈশাখী? কাশ্মীরে আদরে মাখামাখি ছবি ফের ভাইরাল...
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক গৌতম ঘোষ বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের জীবনের এই এক টুকরো অংশ তুলে ধরছেন ক্যামেরায়। ৩০ মিনিটের তথ্যচিত্র। নাম 'কলকাতায় বঙ্গবন্ধু'। মুজিবের জন্মস্থান বাংলাদেশের টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকার ধানমন্ডির বাসভবন, লেন্সে ধরা পড়বে বাংলাদেশেরও বেশ কিছুটা অংশ। কলকাতার অলিতে-গলিতে খুঁজবে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি। কলকাতার ময়দান, ইসলামিয়া কলেজ, সুরাবর্দীর বাড়ি, থিয়েটার রোডের অরবিন্দ ভবন, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র সবকিছুই উঠে আসবে এই তথ্যচিত্রে। থাকবে ভারত এবং বাংলাদেশের বহু বিশিষ্টজনের মূল্যবান সাক্ষাৎকার, মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ, সঙ্গে অবশ্যই প্রামাণ্য নথি।
আরও পড়ুন: সাংঘাতিক! সন্দেহের বশে স্ত্রীর সঙ্গে এ কী করলেন স্বামী? তোলপাড় ব্যান্ডেল...
সোমবার থেকে কলকাতার মৌলানা আজাদ কলেজ শুরু হল আনুষ্ঠানিক শুটিং। ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোলো, বঙ্গবন্ধুর এই আওয়াজকেই পাথেয় করে এ দিনের শুটিং শুরু করলেন চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ। এখনকার ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস করছে, সেগুলোকে সেই সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে ফুটিয়ে তুলতে হবে বলে জানান গৌতম ঘোষ। এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-রাষ্ট্রদূত তৌফিক হাসান, সেন্স অফ বাংলাদেশের সহ-সভাপতি সত্যম রায়চৌধুরী, মৌলানা আজাদ কলেজ এর অধ্যক্ষ স্বয়ং। আগামী তিন মাসের মধ্যেই এই তথ্যচিত্রের কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে আশাবাদী প্রত্যেকে।
উত্তাল চল্লিশের দশক, গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং, দুর্ভিক্ষ সবকিছুকেই ফুটিয়ে তুলতে হবে খুব কঠিন কাজ। এটা একটা প্রাথমিক খসরা কাজ, পরবর্তীতে পূর্ণ দৈর্ঘ্য এর চলচ্চিত্রও হতে পারে এটার অনুপ্রেরণায় বলে জানান গৌতম ঘোষ। গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দলিল রূপে চিহ্নিত হবে এবং ভারত-বাংলাদেশের মৈত্রীর ক্ষেত্রে এক ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ রূপে চিহ্নিত থাকবে এই তথ্যচিত্র বলে আশাবাদী তিনি।
ABHIJIT CHANDA