তবে শুধু এপার বাংলা নয়, সাজো সাজো রব ওপার বাংলার পুজোগুলিতেও ৷ তবে দুই বাংলার পুজোর মধ্যে কিছুটা তফাৎও রয়েছে৷ পুজোর আমেজ একরকম হলেও দুই বাংলার পুজো উদযাপনের ধরণ খানিকটা হলেও আলাদা বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের৷
আরও পড়ুন: উৎসবে ফের মাতবে প্রবাসী বাঙালিরা, পারথের আকাশে এখন শুধুই পুজোর গন্ধ
advertisement
বাংলাদেশের ঐতিহাসিক রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী বাংলাদেশের পুজোর ইতিহাস নিয়ে লিখেছেন৷ ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, বাংলাদেশের পুজো শুরু করেছিলেন রাজা কংস নারায়ণ, ১৫০০ শতাব্দীতে, বর্তমান বাংলাদেশের তাহেরপুরে৷ তবে ব্যাপক হারে পুজোর প্রচলন শুরু হয় মুলত ১৯ এবং ২০ শতকে৷ এই সময়েই থেকেই ধীরে ধীরে সার্বজনিন পুজোর প্রচলন হয়েছে৷
কলকাতার পুজোর ইতিহাসও প্রায় সমসাময়িক৷ তবে ১৯ ও ২০ এর দশক থেকেই কলকাতা হয়ে ওঠে একেবারে শহরকেন্দ্রিক সভ্যতা৷ আর তাই উৎসবের রঙেও লেগেছে শহুরে ছোঁয়া৷ এইখানেই খানিকটা আলাদা বাংলাদেশের পুজো৷
আরও পড়ুন: পুজোর আমেজে মাতোয়ারা ওপার-বাংলা, এই পুজোগুলো না দেখলে বড় মিস
বাংলাদেশের পুজোতে এখনও মাটির গন্ধটা অনেক বেশি৷ আমেরিকা নিবাসী বিশেষজ্ঞ অনন্যা দাস বাংলাদেশের সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা করেছেন৷ তাঁর মতে ‘‘বাংলাদেশের সমাজ মূলত গ্রামীণ ও কৃষিপ্রধান। কলকাতার এর ঠিক বিপরীত, যেখানে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে শহরকেন্দ্রিক সভ্যতা গড়ে উঠেছে, ঢাকার ক্ষেত্রে তা ঘটেনি।’’
বাংলাদেশের বাসিন্দাদের মতে, কলকাতার পুজোয় আড়ম্বর অনেক বেশি৷ জাঁকজমকও খানিকটা বেশি৷ সেই তুলনায় বাংলাদেশে জাঁকজমক হয়তো খানিকটা কম, তবে বাংলাদেশের পুজোয় এখনও প্রাচীন ভাবটা রয়ে গিয়েছে৷ সিলেটের একটি পারিবারিক পুজো প্রায় ৩৫০ বছরের৷ এখনও সেই ৩৫০ বছরের প্রাচীন নিয়মকানুনগুলো প্রায় সব-ই বজায় রেখেছে সেই পরিবার৷ এমন উদাহরণ অসংখ্য৷ প্যান্ডেল গুলিতেও একই ছবি৷ সেখানেও থিমের পরিবর্তে সাবেকিয়ানার ছোঁয়া৷
কলকাতার পুজোয় এখন থিমের রমরমা৷ মায়ের মুর্তিতেও এসেছে অনেক নতুনত্বের ছোঁয়া৷ সর্ষে, পোস্ত থেকে শুরু করে প্ল্যাস্টিকের বোতল কিংবা বোতলের ছিপি, হরেক রকমের জিনিস দিয়ে আজকাল তৈরি হয় প্যান্ডেল ৷ আধুনিকতার স্পর্শ থাকে মুর্তিতেও ৷ এখানেই অনেকটা আলাদা বাংলাদেশ৷ সাবেকিয়ানাকে সঙ্গী করে সেই পুরোনো স্বাদ বজায় রেখেছে ওপার বাংলা৷ মায়ের মুর্তিও তৈরি হয় সাবেকি আদলেই৷